প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজা উপকূলে নির্মিত মার্কিন অস্থায়ী জেটিটি। এজন্য এই ঘাট দিয়ে গাজায় সাহায্য বিতরণ স্থগিত করা হয়েছে।
বুধবার ইসরাইলভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্যা টাইমস অফ ইসরাইলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পেন্টাগন (মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ) মঙ্গলবার বলেছে, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অস্থায়ী পিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরে মার্কিন সামরিক বাহিনী সমুদ্রপথে গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহ স্থগিত করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম পিয়ারটি পরিচালনা শুরু করার দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হলো। এটি নির্মাণ করতে ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়েছিল।
পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংয়ে বলেছেন, পিয়ারটি আবার চালু করতে প্রায় এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগবে।
সাবরিনা সিং ব্যাখ্যা করেছেন, মার্কিন বাহিনীকে প্রথমে পিয়ারের একটি অংশ পুনরুদ্ধার করতে হবে। এই অংশে রয়েছে চারটি সহগামী সেনা জাহাজ যা পিয়ার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গাজা ও ইসরাইলের তীরে অবস্থান করছে।
এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানান তিনি।
তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, আগামী দুই দিনের মধ্যে, পিয়ারটি সৈকত থেকে টেনে দক্ষিণ ইসরাইলি শহর আশদোদে পাঠানো হবে, যেখানে মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড এটি মেরামত করবে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং সুনির্দিষ্ট টাইমলাইন দিতে অস্বীকার করে বলেছেন, ‘জেটিটির পুনর্নির্মাণ ও মেরামত করতে কমপক্ষে এক সপ্তাহ সময় লাগবে এবং শেষ হওয়ার পরে এটিকে গাজার উপকূলে পুনরায় নোঙর করতে হবে।’
এর আগে গত ৮ মার্চ গাজার উপকূলে ত্রাণ সরবরাহের জন্য ৩২ কোটি ডলারে অস্থায়ী বন্দর নিমার্ণের ঘোষণা দেন বাইডেন প্রশাসন এবং ১৭ মে থেকে বন্দরটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়।
ইসরাইলের নিয়ন্ত্রানাধীন স্থলপথ ত্রাণ পরিবহণের জন্য খুলে দেয়ার পরিবর্তে এভাবে অস্থায়ী বন্দর নির্মাণ, জটিল ও ব্যয়বহুল সমাধান হিসেবে সমালোচিত হয়েছে।
গত মার্চে প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন বলেছিলেন, জেটিতে খাবার, পানি, ওষুধ ও অস্থায়ী আশ্রয়ের বড় চালান থাকবে। তবে বাইডেনের এই সিদ্ধান্তকে অনেকে তার ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থকদের খুশি করার চেষ্টা হিসেবে দেখছেন, কারণ আসন্ন নভেম্বরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
এদিকে, জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, ভাসমান ডকটি চালু হওয়ার পর থেকে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) ৯৭টি ট্রাক ত্রাণ সরবরাহের জন্য পরিচালনা করছে।
দুজারিক আরো বলেন, ‘কঠিন শুরুর পর পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে।’
এদিকে গত বছরের অক্টোবরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সাথে ইসরাইলের সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ সময়ে আহত হয়েছেন আরো ৮১ হাজার ২৬ জন।
সূত্র : দ্যা টাইমস অফ ইসরাইল
Leave a Reply