গাজায় ইসরাইল হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়ার প্রেক্ষাপটে মিসরের রাজধানীতে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি আলোচনা কোনো চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে।
গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস রোববার জানিয়েছে, তাদের প্রতিনিধিদলটি কায়রো থেকে গাজায় ফিরে যাচ্ছে। এর আগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, যুদ্ধ বন্ধের দাবির কাছে ‘আত্মসমর্পণ’ করাটা পরাজয়ের সামিল।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এক হামাস কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘মিসরীয় গোয়েন্দা মন্ত্রীর সাথে বৈঠক শেষ হয়েছে। হামাস প্রতিনিধিদল আরো আলোচনার জন্য দোহায় ফিরে যাচ্ছে।’
হামাস আলোচকেরা মঙ্গলবার কায়রো ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মিসরীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাথে সম্পর্কি নিউজ সাইট আল-কাহেরা এ খবর জানায়।
এদিকে সিআইএ পরিচালক বিল বার্নস মধ্যস্ততা আলোচনার জন্য কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল-সানির সাথে আলোচনার জন্য দোহা রওনা হয়েছেন।
নেতানিয়াহুর অফিস থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তার মন্ত্রিসভা হামাসকে আবারো গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেবে না। ইসরাইল হামাসের দাবি মেনে নেবে না। তাদের দাবি মানার অর্থ হলো আত্মসমর্পণ করা। তারা তাদের লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।
অন্যদিকে হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ‘ইতিবাচক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা’ পালন করবে। তারা জানায়, তারা একটি চুক্তিতে পৌঁছার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
হামাসের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে যুদ্ধের পূর্ণ অবসান, গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলের পুরোপুরি প্রত্যাহার, উদ্বাস্তুদের বাড়িতে ফেরার অধিকার প্রদান, ত্রাণ সহায়তা বাড়ানো।
হামাস রোববার বলেছে, গাজায় যুদ্ধ বিরতি অর্জনের লক্ষ্যে সর্বশেষ বৈঠক কায়রোতে ‘গভীর এবং গুরুতর আলোচনার’ পর শেষ হয়েছে। তারা তাদের মূল দাবিগুলো পুনরায় উত্থাপন করে, যেগুলো ইসরাইল আবার প্রত্যাখ্যান করে।
কায়রোতে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া বলেন, তারা একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি চায় যা ইসরাইলি ‘আগ্রাসন’ বন্ধ করবে এবং গাজা থেকে ইসরাইলের প্রত্যাহার নিশ্চিত করবে। অন্যদিকে, হামাস ইসরাইলের জেলে থাকা শত শত বন্দীর বিনিময়ে প্রায় ১০০ জন বন্দীকে মুক্তি দেবে।
এক বিবৃতিতে হানিয়া ‘আগ্রাসন অব্যাহত রাখা এবং সংঘর্ষের মূল কারণগুলো সম্প্রসারণের জন্য’ ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে দায়ী করেন। তিনি নেতানিয়াহুকে ‘মধ্যস্থতাকারী এবং অন্যান্য পক্ষের মাধ্যমে করা প্রচেষ্টাকে ধ্বংস করার’ জন্য দায়ী করেন। আলোচকরা কয়েক সপ্তাহ ধরে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় ব্যর্থ হয়েছে।
নেতানিয়াহু রোববার কাতারভিত্তিক নিউজ চ্যানেল আল জাজিরার প্রচার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই চ্যানেলটি ২৪ ঘণ্টা সঙ্ঘাতের খবর প্রচার করছিল। ইসরাইল সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের কিছুক্ষণ পরই ইসরাইলে আল জাজিরার প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। আল জাজিরা ইসরাইল সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘অপরাধমূলক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছে, তারা এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবে।
সূত্র : আরব নিউজ, আল জাজিরা, ভয়েস অব আমেরিকা
Leave a Reply