মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সুষ্ঠুভাবে পালনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। এরই মধ্যে শহীদ মিনার ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা হয়েছে। রং করা হয়েছে মূল বেদিসহ সংলগ্ন এলাকা। রাস্তার পাশের দেওয়ালে শোভা পাচ্ছে ভাষা আন্দোলন নিয়ে লেখা গান, কবিতা ও স্লোগান। দিবসটিকে ঘিরে শহীদ মিনারে থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
সরেজমিন সোমবার সন্ধ্যায় দেখা যায়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চারপাশে ব্যারিকেড দেওয়ার কাজ শেষ। সিসিটিভি বসানোর কাজও শেষ হয়েছে। শহীদ মিনার, দেওয়াল ও মেঝেতে রং করাও শেষ। শহীদ মিনারের বেদিতে আলপনা আঁকার কাজ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রতি বছরের মতো শহীদ মিনারে আলপনার কাজ করেছি। আর এই কাজে আমাদের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাকসুদ কামাল জানান, রাত ১২টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে প্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রীবর্গ, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও বিরোধীদলীয় নেতা। এর পর পর্যায়ক্রমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন তিন বাহিনীর প্রধানরা, ভাষাসৈনিকরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সম্মানিত সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, অনুষদের ডিনবৃন্দ ও হলের প্রাধ্যক্ষবৃন্দ। এরপর সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের জন্য শহীদ মিনার উন্মুক্ত থাকবে।
তিনি আরও জানান, সর্বস্তরের জনসাধারণ পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে শহীদ মিনারে যাবেন এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্বর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রাস্তা দিয়ে চাঁনখারপুল হয়ে শুধু প্রস্থান করা যাবে। শহীদ মিনারের দিকে আসা যাবে না।
চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা
গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসকে ঘিরে শহীদ মিনারে চার স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। তবে এবার এ মুহূর্তে আমাদের কাছে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। তারপরও পুলিশ সব ধরনের নিরাপত্তা হুমকি বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া শহীদ মিনারে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সমগ্র এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরায় আচ্ছাদিত থাকবে। আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল টিম, সোয়াত টিম, ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিমসহ অন্যান্য টিম নিরাপদ দূরত্বে স্ট্যান্ডবাই থাকবে। শহীদ মিনার এলাকায় সার্বক্ষণিক তল্লাশি ব্যবস্থা এবং প্যাট্রলিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। ড্রোন প্যাট্রলিং, মোবাইল প্যাট্রলিং এবং সাইবার প্যাট্রলিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply