‘নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠরাই আজ সবচেয়ে শক্তিশালী’। করোনারোধে লকডাউন দেওয়ার পর প্রথম নির্বাচনী প্রচারসভায় গিয়ে এ কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু টালসার সমাবেশে অনেক আসন ফাঁকা পড়ে থাকার দৃশ্য বা বাস্তবতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথাকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রতীয়মান করে। দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে তাই মন্তব্য করা হয়েছে, বিভাজন আর বিদ্বেষই ট্রাম্পের পুঁজি যেন।
ব্যাংক অব ওকলাহোমা সেন্টারের ভেতরে ১৯ হাজার আসনের অনেকগুলোই খালি ছিল বলে গণমাধ্যমগুলোর ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে। ট্রাম্প ভেবেছিলেন অনুষ্ঠানস্থলের বাইরেও বিশাল জমায়েত থাকবে। তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলারও পরিকল্পনা ছিল তার। লোক কম হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাকে ওই পরিকল্পনা বাদ দিতে হয়।
মহামারীর মধ্যে এ ধরনের সমাবেশ নিয়ে এমনিতেই ওই অঞ্চলে ব্যাপক উদ্বেগ বিরাজ করছিল। সমাবেশ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে আয়োজন সংশ্লিষ্ট ট্রাম্পের ছয় কর্মীর দেহে নতুন করোনা ভাইরাসের শনাক্ত হয় বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন।
নতুন করোনা ভাইরাসে শনাক্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যায় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ২২ লাখ ৫৫ হাজারেরও বেশি কোভিড-১৯ রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে; মৃত্যু ছাড়িয়ে গেছে এক লাখ ১৯ হাজার। সমাবেশে ট্রাম্প জানান, করোনা ভাইরাস শনাক্তে পরীক্ষা বেশি হওয়ায় বেশি আক্রান্তের সন্ধান মিলছে। এ কারণে তিনি তার প্রশাসনের কর্মীদের শনাক্তকরণ পরীক্ষা কমাতে বলেছেন। শনাক্তকরণ পরীক্ষাকে ‘দুই ধারী তলোয়ার’ বলেও অভিহিত করেছেন তিনি।
কোভিড ১৯-এর যতগুলো নাম আছে, অন্য কোনো রোগের এত নাম নেই বলেও শনিবারের সমাবেশে ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন বলে সিএনএন জানিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি একে কুং ফ্লু বলতে পারি। আমি এর ১৯টা আলাদা আলাদা নাম বলতে পারব।’ এর আগে তিনি করোনাকে ‘চীনা ভাইরাস’ বলেও অভিহিত করেছিলেন।
সমাবেশে ট্রাম্প নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার সম্ভাব্য ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনকেও একহাত নিয়েছেন। বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এ ভাইস প্রেসিডেন্ট ‘কট্টর বামদের হাতে নাচা অসহায় এক পুতুল’।
মিনিয়াপোলিসে পুলিশ হেফাজতে এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির মৃত্যুর পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন ও একের পর এক মূর্তি উপড়ে ফেলার ঘটনাতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছেন রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্ট।
সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ট্রাম্প বলেন, ‘বিকৃতম স্তিষ্ক বামপন্থি দুষ্কৃতকারীরা আমাদের ইতিহাস তছনছ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের স্মৃতিস্তম্ভগুলো ভেঙে ফেলতে চাইছে। আমাদের চমৎকার সব স্মৃতিস্তম্ভ; তারা মূর্তি উপড়ে ফেলছে, যারা তাদের নিরষ্কুশ নিয়ন্ত্রণের দাবির কাছে মাথা নোয়াচ্ছে না তাদের শাস্তি দিচ্ছে, নির্যাতন করছে। আমরা তাদের দাবির কাছে নত হব না।’
Leave a Reply