1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১২ অপরাহ্ন

মানুষের ভোগান্তি দূর করতে হবে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২১ জুন, ২০২০

দেশে করোনাভাইরাসজনিত মহামারী পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে যেমন তোলপাড় চলছে তেমনি রাজধানী ঢাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে তোলপাড় চলছে অন্য এক ভোগান্তির কারণে। সেটি হলো বিদ্যুৎ বিভাগের ভৌতিক বিল। গত দুই তিন মাস ধরে চলমান করোনা সংক্রমণকালে মানুষ যখন নিজেদের জীবন-জীবিকা নিয়ে আতঙ্কিত, বেঁচে থাকার ন্যূনতম উপায় খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছে; ঠিক তখনই বিদ্যুৎ বিভাগ এক অস্বাভাবিক জুলুম চাপিয়ে দিয়েছে মানুষের ওপর। ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা। রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় বাসাবাড়ির বিদ্যুৎ বিল এসেছে অনেক বেশি। অনেক জায়গায় মার্চ-এপ্রিলের বিলের চেয়ে দ্বিগুণ তিন গুণ বিল এসেছে মে মাসে। কোথাও কোথাও এমনকি স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ গুণ বেশি বিল এসেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। ভুতুড়ে বিল নিয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশও অনেকাংশে উপেক্ষা করা হয়েছে। এক দিকে বাড়তি বিল, অন্য দিকে চলতি জুন মাসে বিল পরিশোধের আলটিমেটাম। সব মিলিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন গ্রাহকরা।
কিভাবে এমন অসম্ভব বাড়তি বিল করা হলো? জবাবটা সহজ। অঘোষিত লকডাউন শুরু হলে পরপর দুই মাস কোনো মিটার রিডার কারো বাসায় গিয়ে মিটার পর্যবেক্ষণ করেননি। এ কারণে মার্চ মাসে গ্রাহকদের কোনো বিল পাঠানো হয়নি। মে মাসের মাঝামাঝি অনেকটা হঠাৎ করেই মার্চ ও এপ্রিল মাসের বিল একসাথে গ্রাহকের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে মিটার রিডাররা কোনো বাসায় না গিয়ে নিছক অনুমানের ভিত্তিতে এসব বিল তৈরি করেন। ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনেকটা যেন দায়সারা জবাব দিয়েছেন মিডিয়ার কাছে। বলেছেন, ‘বিল আসলে বেশি আসছে না। আগের দুই মাস রিডিং নেয়া হয়নি। এবার রিডিং নিয়ে আগের দুই মাস বাদ দিয়ে বিল করায় অনেকেরই মনে হচ্ছে বিল বেশি এসেছে। এর পরও কারো যদি কোনো বিলের বিষয়ে অভিযোগ থাকে তিনি তা স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসে জানাতে পারেন। ভুল থাকলে ঠিক করে দেয়া হবে।
কিন্তু বাস্তবে বাড়তি বিল নিয়ে মানুষের ভোগান্তি সহজে মিটছে না। গত তিন মাসের বাড়তি বিলের এই ধকল পোহাতে হচ্ছে অনেককেই। বিপাকে পড়েছেন আর্থিক টানাপড়েনে থাকা মানুষেরা। বাড়তি বিলের ভোগান্তি নিরসনে বাংলাদেশ অ্যানার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে চিঠি দিয়েছে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, যেকোনো পাবলিক বডির কাছে পেশ করা কোনো নাগরিকের যেকোনো আবেদন ৪৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি হতে হবে, ক্যাবের দায়ের করা রিট মামলায় হাইকোর্টের এমন আদেশ হয়েছে। ফলে কমিশন দ্রুত তাদের আবেদনের পক্ষে পদক্ষেপ নেবে। ক্যাবের চিঠিতে বলা হয়, করোনার কারণে মিটার রিডিং নেয়া সম্ভব না হওয়ায় গত তিন মাসের বকেয়া বিল মনগড়া হিসাবের ভিত্তিতে দেয়া হয়েছে এবং একসাথে তা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। ওই সব বিলে দাবিকৃত অর্থের হিসাবের কোনো যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য ভিত্তি নেই। অভিযোগের পক্ষে যেসব প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যায়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে বকেয়া বিলের পরিমাণ সম্ভাব্য যৌক্তিক পরিমাণের চেয়ে ১০ গুণেরও বেশি। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এমন ঘটনা সরকারের ভোক্তাবান্ধব ঘোষণাকে ভোক্তাবিরোধী ঘোষণায় পরিণত করেছে।
করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আমাদের এমনিতেই জেরবার দশা; কিন্তু সাধারণ মানুষের ভোগান্তি নিরসন করাও জরুরি। সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকরা বিষয়টি সহানুভূতির সাথে সমাধান করবেন এই প্রত্যাশা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com