রাজধানীর গুলশান-১ নম্বরে গ্লোরিয়া জিন্স নামে কফি শপের পাশে বিকাশে টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে গুলির ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলেন আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু, মনির আহমেদ ও তার ভগ্নিপতি ওমান প্রবাসী আরিফ হোসেন। এর মধ্যে মিন্টু ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন।
ঘটনার সময় অভিযুক্ত মিন্টু তার সঙ্গে থাকা লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে সাত-আট রাউন্ড গুলি ছোড়েন। দুটি গুলি ঘটনাস্থলে থাকা এক গাড়িচালক ও ভ্যানচালকের পায়ে লাগে।
ভুক্তভোগী বিকাশ দোকানি হাবিবুর রহমান আলিফ ও আশপাশের দোকানিদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল রোববার বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে বিকাশ করার জন্য গ্লোরিয়া জিন্স ক্যাফের পাশে আলফা স্টোর নামে একটি দোকানে যান আরিফ হোসেন।
তিনি দোকানিকে বলেন, ‘আপনি ৭৫ হাজার টাকা বিকাশ করেন, আমি টাকা দিচ্ছি। ’ এ সময় দোকানি তার দেওয়া নম্বরগুলোতে টাকা পাঠান। কিন্তু দোকানিকে টাকা না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন আরিফ। এক পর্যায়ে দোকান মালিক আরিফকে আটক করে বলেন, ‘আপনি টাকা না দিয়ে যেতে পারবেন না। ’ আটক অবস্থায় আরিফ তার ভগ্নিপতি মনিরকে ফোনে বিষয়টি জানান।
এরপর মনির তার বন্ধু মিন্টুসহ আরও চার-পাঁচজনকে নিয়ে ওই দোকানে যান এবং আরিফকে ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা চালান। এ সময় আশপাশের দোকানিরা আরিফকে ছাড়তে চাইছিলেন না। আকস্মিক মিন্টু পিস্তল বের করে সাত-আট রাউন্ড গুলি ছোড়েন। এতে আমিনুল ইসলাম নামে একজন গাড়িচালক ও রহিম নামে একজন ভ্যানচালক গুলিবিদ্ধ হন।
গুলশান থানা সূত্রে জানা গেছে, আটক মিন্টু ঢাকার কদমতলী থানার শ্যামপুরের দক্ষিণ দনিয়ার নূরপুরের মো. আব্দুল বারেকের ছেলে। তিনি ২০১৩ সালে পিস্তলটি কেনেন, রি-নিউর পর বর্তমানে যার মেয়াদ রয়েছে ২০২৪ সাল পর্যন্ত। তবে আটকের পরও অভিযুক্তের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইসহাক মিয়া বলেন, ‘গুলশানের ঘটনার বিষয়ে আমরা জেনেছি। মিন্টু ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। তবে তার ব্যক্তিগত কোনো অপরাধের দায় সংগঠন নেবে না। এরপরও বিষয়টি তদন্তের জন্য আমরা তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিন্টুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আব্দুল আহাদ বলেন, ‘এ ঘটনায় প্রচলিত আইনে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনার তদন্ত চলমান। এখন পর্যন্ত আমরা তিনজনকে আটক করেছি।’
তবে মিন্টুর রাজনৈতিক পরিচয় জানা গিয়েছে কি না জানতে চাইলে ডিসি আব্দুল আহাদ বলেন, ‘মিন্টু এমএস প্রোগ্রেসিভ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। তিনি যাত্রাবাড়ীতে থাকেন বলে জানিয়েছেন। তার রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
Leave a Reply