কাজান এরিনা। ২০১৮ সালের ৩০ জুন রাশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত তাতারস্থানের রাজধানী কাজানের এই স্টেডিয়ামে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভঙ্গ আর্জেন্টিনার। তাদের এই ছিটকে ফেলার নায়ক কিলিয়ান এমবাপ্পে।
১৭ বছরের এই উঠতি টগবগে যুবক এতটাই ভয়ঙ্কর ছিলেন যে আর্জেন্টিনার ডিফেন্স লাইন কোনোভাবেই আটকাতে পারেনি তাকে। নিজে করেছেন দুই গোল। আর ফ্রান্সের প্রথম গোলটির পেছনের ভূমিকা তার।
উল্কার বেগে ছুটে চলা এই স্ট্রাইকারকে রুখতে না পেরে ফাউল এবং পরে গ্রিজম্যনের পেনাল্টিতে পিছিয়ে পড়া লিওনেল মেসিদের। এরপর ২-১ লিড নেয়া আর্জেন্টিনা শেষ পর্যন্ত ৩-৪ গোলে হারের এমবাপ্পের পায়ের কাজের কাছেই। ৬৩ মিনিট পর্যন্ত স্কোর ২-২ চলার পর ৬৪ ও ৬৮ মিনিটে পিএসজির বর্তমান এই স্ট্রাইকারের দুই গোলে হার হোর্হে সাম্পাওলির দলের। ফলে বিদায় দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে।
চার বছর পর সেই এমবাপ্পে এখন অনেক পরিনত। ৫ গোল দিয়ে কাতার বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায়। কাল ফাইনালে এই দ্রুতগতির ও দারুণ স্কিলফুল ফরোয়ার্ডকে নিয়েই যত টেনশন কোচ লিওনেল স্ক্যালোনির।
কিভাবে এই ফরাসি স্ট্রাইকারকে ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনা তাদের তৃতীয় শিরোপা ঘরে তুলবে তা নিয়েই ব্যস্ত কোচ স্ক্যালোনি। তাই শুরুতে তিনি খেলাতে পারেন ৫-৩-২ ফরমেশনে। এরপর ৪-৩-৩ হয়ে শেষে ৪-৪-২।
রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ভুগিয়েছিল ডিফেন্স লাইন। প্রতি ম্যাচেই গোল হজম করেছে। চার ম্যাচে ৯ গোল হজম। আইসল্যান্ডের সাথে ১-১ গোলে ড্র করার পর ক্রোয়েশিয়ার কাছে ০-৩ গোলে হার। এরপর নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়ের পর ফ্রান্স চারবার বল পাঠায় তাদের জালে।
এবারও আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগে সমস্যা। আর প্রতিক্ষেত্রেই তারা গোল খেয়েছে লিড নেয়ার পর। সৌদি আরবের কাছে এ কাছে ১-২ গোলে হার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচে টাইব্রেকারে জয়। শুধু ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে রক্ষণ প্রাচীরটা অটুট ছিল।
কিন্তু এই রক্ষণলাইন কী আটকাতে পারবে এমবাপ্পেকে। কাতার বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ছিল মরক্কোর ডিফেন্ডাররা। সেমিতে সেই মরক্কোর রক্ষণভাগে কিভাবে ফাটল ধরিয়ে দলকে দ্বিতীয় গোল পাইয়ে দেন এই স্ট্রাইকার। তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তার পাস দেয়া বলেই গোল। কাল ল্যাতিন দেশটির নড়বড়ে রক্ষণভাগ কিভাবে রুখবে তাকে। তাই সতর্কতা হিসেবে প্রথমে ৫ জনকে ডিফেন্সে রেখে শুরু করতে চান স্ক্যালোনি। এরপর পরিস্থিতি বুঝে নিচে খেলোয়াড় কমিয়ে মাঝমাঠ ও ফরোয়ার্ড লাইনে শক্তি বৃদ্ধি করবেন। তবে আক্রমন ভাগে মেসির সাথে থাকবেন ইনফর্ম স্ট্রাইকার জুলিয়ান আলভারেজ।
Leave a Reply