ক্রিকেট মানেই অনিশ্চয়তার খেলা, পাকিস্তানের বেলায় সেটা যেন আরো বেশি প্রযোজ্য। নিশ্চিত হার থেকেও জয়ের স্বপ্ন যেমন দেখাতে জানে পাকিস্তান, তেমনি জয়ের মুখ থেকেও হারের তেঁতো স্বাদ আস্বাদন করতেও জানে তারা। যার আরো একটি প্রদর্শনী সোমবার দেখলো ক্রিকেট বিশ্ব। জয়ের দ্বারপ্রান্ত থেকেও ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গেছে ২৬ রানে।
মুলতান টেস্ট শেষ হতে তখনো দেড় দিনের মতো বাকি। জিততে পাকিস্তানের তখন চাই কেবল ৬৫ রান। হাতে তখনো ৫ উইকেট। তাতে নিশ্চিতভাবেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিলো বাবর আজমের দল। হঠাৎই স্বরূপে ফিরে পাকিস্তান, বদলে যায় পরিস্থিতি, পাল্টে যায় ভূমিকা। এই ম্যাচটাও শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান হেরে যায় ২৬ রানে।
ফলে রাওয়ালপিন্ডির পর মুলতান টেস্টেও জয় তুলে নিল বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড।
প্রথম ইনিংসে আবহার আহমেদের ৭ উইকেট শিকারে ইংল্যান্ড থামে ২৮১ রানে। জবাবে ইংল্যান্ডের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বাবর আজমের ৭৫ রানেও পাকিস্তান অল-আউট হয় মাত্র ২০২ রানে। ৭৯ রানে এগিয়ে থেকে ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে। এবার হ্যারি ব্রকের সেঞ্চুরিতে ২৭৫ রানে থামে ইংল্যান্ডের ইনিংস। পাকিস্তানের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় তখন ৩৫৫ রান।
ওপেনিং জুটিতে ৬৬ রান তুলে ফেলার পর ৬৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে পাকিস্তান। জয় থেকে তখন মাত্র ১৫৭ রান দূরে, হাতে আছে ৬ উইকেট। তবে দিনের শুরুতেই ফেরেন ফাহিম আশরাফ। জো রুটের ৫০তম টেস্ট শিকার হওয়ার দিনে ১০ রান করতে পারেন ফাহিম। সেখান থেকে পাকিস্তানকে এগিয়ে নেন সউদ শাকিল ও মোহাম্মদ নওয়াজ। এই দুজনের জুটিতে আসে ৮০ রান।
এমনই অবস্থায় পাকিস্তান যখন বেশ স্বস্তিতে, জয়ের জন্য তখন চাই কেবল ৬৫ রান। হাতে তখনো ৫ উইকেট। তখনই লাঞ্চের আগে মার্ক উডের জোড়া আঘাত। ৪৫ রান করা নওয়াজ ও ৯৪ রান করা শাকিলকে ফেরান সাজঘরে। যদিও সউদ শাকিলের উইকেট নিয়ে ছিল বিতর্ক। এই দুজনকে দ্রুত ফিরিয়ে সেখান থেকেই দারুণভাবে ম্যাচে ফেরে ইংল্যান্ড। ৭ উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় পাকিস্তান।
লাঞ্চের পর বল হাতে ১১ উইকেট নেয়া আবরার আহমেদ ব্যাট হাতে ১২ বলে ১৭ রান করে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। তবে তাকে থামান অ্যান্ডারসন। আর দারুণ এক ডেলিভারিতে জাহিদ মাহমুদকে রানের খাতাই খুলতে দেননি মার্ক উড।
আগা সালমান চেষ্টা করেছেন বটে, তবে লোয়ার অর্ডারের বাকিদের ব্যর্থতায় ৩২৮ রানেই থামে পাকিস্তানের ইনিংস। ২৬ রানে ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে দাপুটে সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচসেরা হন হ্যারি ব্রুক। ১৯৫৯ সালের পর এই প্রথম ঘরের মাঠে টানা ৩ টেস্টে হারল পাকিস্তান।
Leave a Reply