রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করা ওয়াগনার মার্সেনারিদের একটি সদর দফতরে ইউক্রেনের সৈন্যরা হামলা চালিয়েছে।
লুহানস্কের নির্বাসিত গভর্নর সেরহি হাইডাই বলেছেন, লুহানস্কের কাদিভকায় যে হোটেলে ওই ভাড়াটে সৈন্যরা অবস্থান করছিল, সেখানে হামলায় বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তবে হোটেলটিতে ওয়াগনারের সৈন্যরা ছিল কিনা, তা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে সক্ষম হয়নি বিবিসি।
পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়াগনার হচ্ছে রাশিয়ার সমর্থনে তৈরি ভাড়াটে সৈন্যদের একটি বাহিনী, যারা ক্রেমলিনের স্বার্থে কাজ করে।
পুরো সপ্তাহজুড়েই ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে লড়াই আরো বেড়েছে। ওডেসা লক্ষ্য করে অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া আর মারিওপোলের কিছু লক্ষ্যবস্তুতে বোমা হামলা করছে ইউক্রেন।
একসময়ের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী এবং ভ্লাদিমির পুতিনের একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইয়েভগেনি প্রিগোজিন এই বাহিনীটি তৈরি করেছেন।
এদের বিরুদ্ধে একাধিকবার যুদ্ধাপরাধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।
এর আগে ওয়াগনার বাহিনীর সদস্যদের ক্রাইমিয়া, সিরিয়া, লিবিয়া, মালি এবং মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে মোতায়েন করা হয়েছিল।
লুহানস্কের কাদিভকা হামলা প্রসঙ্গে নির্বাসিত গভর্নর হাইডাই বলেছেন, ওই আঘাতে রাশিয়ার ভালো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানে যারা আহত হয়েছেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় তাদের অর্ধেক মারা যাবে বলে তিনি ধারণা করছেন।
এদিকে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া।
শনিবার ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ওডেসা শহরে তারা ১০টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
অন্য পাঁচটি শহরের জ্বালানি অবকাঠামোয় আঘাত করেছে, যার ফলে সেখানকার ১৫ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের দাবি, ইরানের তৈরি করা ড্রোন দিয়ে এসব হামলা করছে রাশিয়া।
অন্যদিকে রাশিয়ার দখলে থাকা মারিওপোলের মস্কোপন্থী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইউক্রেনের একটি মিসাইল হামলায় দুজন নিহত আর অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
তারা যে ছবি প্রকাশ করেছেন, তাতে বড় ধরনের একটি আগুন জ্বলতে দেখা যায়।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলায় একটি বিনোদনকেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গেছে, যেখানে মানুষজন রাতের খাবার খাচ্ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা হিমার্স রকেট লঞ্চার দিয়ে ওই হামলা করা হয়েছে বলে তাদের দাবি। ইউক্রেনের পাল্টা হামলায় বড় ভূমিকা রাখছে এই অস্ত্র।
যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বহুদূরে থেকেও নানা লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেন, যার মধ্যে রাশিয়ান বাহিনীর কমান্ড পোস্টও রয়েছে।
মারিওপোলের নির্বাসিত মেয়র ইভান ফেদোরভ বলেছেন, ‘আগ্রাসনকারীদের অনেকে নিহত হয়েছেন’।
মার্চ মাসের শুরু থেকেই মারিওপোল রাশিয়ার দখলে রয়েছে যা তাদের সেনাবাহিনীর সরঞ্জাম সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর।
শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদামির জেলেনস্কির একজন উপদেষ্টা ওলেস্কি আরেস্তোভিচ ইঙ্গিত দিয়েছেন, মারিওপোল পুনর্দখল করা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর অন্যতম প্রধান লক্ষ্যে পরিণত হতে পারে।
তিনি বলেছেন, ’মারিওপোলের পতন হয়ে খেরসন এলাকায় (রাশিয়ার) পুরো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে।’
সেটা ঘটলে ক্রাইমিয়ার দিকে একটি সরাসরি রুট পেয়ে যাবে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী, তিনি বলছেন। ২০১৪ সাল ক্রাইমিয়াকে সংযুক্ত করে নিয়েছিল রাশিয়া, যা পুনরুদ্ধার করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে ইউক্রেন।
সূত্র : বিবিসি
Leave a Reply