বিশ্বব্যাপি ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৯১জন মারা গেছেন এবং আক্রান্ত হয়েছন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৫৯জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক কোভিড-১৯কে এক নাম্বার সংক্রামক রোগ হিসেবে ঘোষণা দেয়ার পর থেকে মাস্ক কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েছে মানুষ। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ ভাইরাস প্রতিরোধে সাধারণ জনগণকে মাস্ক পরার পরিবর্তে সাধারণ কিছু নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। যেগুলো ঠাণ্ডাজনিত সমস্যাসহ অন্যান্য সংক্রামক রোগ থেকে বাঁচতে সহায়তা করবে।
এ ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহান শহরে কেবল আক্রান্তদের পূর্ব সতর্কতা হিসেবে এ মাস্ক পরার পরামর্শ দেয়া হয়,যাতে তাদের হাঁচি ও কাঁশির মাধ্যমে জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে না পারে।
ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথ ওয়ালসের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ আবরার চুঘতাই বলেন,বাজারের প্রচলিত সাধারণ মাস্কগুলো শ্বাসতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য তৈরি করা হয়নি। ১৯ শতকে যখন এটি আবিষ্কার করা হয় তখন চিকিৎসকরা এটি অপারেশন থিয়েটারে ব্যবহার করতেন যাতে রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ না ঘটে। অর্থাৎ এর মূল উদ্দেশ ছিল ছড়িয়ে পড়া জীবাণু থেকে রক্ষা পাওয়া। মাস্ক মুখের চারপাশে বাতাসের প্রবাহকে পুরোপুরি বন্ধ করতে পারে না। তবে চিকিৎসকদের এটি পরা প্রয়োজন কারণ রোগীর অনেক কাছাকাছি অবস্থান করতে হয় তাদের।
যেহেতু মাস্ক দীর্ঘক্ষণ পরে থাকা কষ্টকর এবং মুখের চারপাশ পুরোপুরি সিল করতে পারে না সেজন্য সর্বসাধারণকে অকারণ মাস্ক ব্যবহার না করতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
তবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কিছু পরামর্শ মেনে চলার কথা বলেছেন আবরার চুঘতাই। সেগুলো হলো :-
১. বারবার হাত ধোয়া
ভয়াবহ এ ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। তাই যে কোনো কিছু ছোঁয়া বা ধরার আগে সতর্কতা সরূপ ভালোভবে হাত ধুতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, বারবার হাত ধুলে অসুস্থতা ও সংক্রামক রোগ থেকে দূরে থাকা যায়। কেবল টয়লেট থেকে ফেরার পরই হাত ধুলে চলবে না। হাঁচি বা কাশি দেয়ার পর, খাবারের আগে এবং বিশেষ করে খাবার তৈরির সময়, পশু-পাখি ধরার পর। এছাড়া অসুস্থ রোগীর সেবার পর অবশ্যই ভালো করে হাত ধুতে হবে।
২. আপনি কী ধরছেন সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপনি কী ধরছেন সেটা। আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে হাত মেলালেন কিনা সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। মুখ, চোখ, ও নাকের মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। সুতরাং বার বার এসব স্থান স্পর্শ থেকে বিরত থাকতে হবে। যদি আপনার ঠাণ্ডার সমস্যা দেখা দেয়, তা হলে হাঁচি দেয়ার সময় টিস্যু বা রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে রাখতে হবে। নাক পরিস্কার করার পর নোংরা টিস্যুটি নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলতে হবে।
৩.কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন
করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিলেই নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে। আপনি কোথায় কোথায় ভ্রমণ করেছেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন। আপনি কোনো অবস্থাতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে নিজে নিজে হাসপাতালে যাওয়া ঠিক হবে না। সূত্র : এবিসি নিউজ
Leave a Reply