নেইমার-দানিলো ছাড়াই দোহার স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ সুইজারল্যান্ডের মুখোমুখি হয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করল ব্রাজিল। ম্যাচের ৮৩ মিনিটে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা ক্যাসিমিরো গোলে ব্রাজিলের সমর্থকেরা আনন্দে ভাসে। এর মাধ্যমে কাতার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দল হিসেবে নক আউট পর্বে পা রাখল পাঁচবারের শিরোপাজয়ীরা। ফলে গ্রুপ ডি থেকে ফ্রান্সের পর গ্রুপ জি থেকে ব্রাজিল খোলে ফেলল সুপার ১৬-এর দরজা।
উভয় দলই প্রথম ম্যাচে জেতায় দুই দলের সামনেই সুযোগ ছিল পরের রাউন্ডে যাওয়ার। সমীকরণ সহজ, জিতলেই নিশ্চিত সেমিফাইনাল। তাই ম্যাচ জিততে মরিয়া ছিল দু‘দলই। তবে ইনজুরির কারণে ব্রাজিলের হয়ে মাঠে নামতে পারেননি নেইমার ও দানিলো।
নেইমার বিহীন ব্রাজিলের ওপর প্রথম থেকেই প্রেশার তৈরি করতে থাকে সুইজারল্যান্ড। ম্যাচের শুরুতেই ১৪ মিনিটে ফ্রি কিক পায় সুইজারল্যান্ড। বলের দখলের পাশাপাশি ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও থাকে অনেকটা সুইসদের কাছেই।
তবে দ্রুত সময়ে নিজেদের গুছিয়ে নেয় সেলেসাওরা। এবার সুইজারল্যান্ডের পাশাপাশি পালটা আক্রমণ করে ব্রাজিলও, কিন্তু ব্রাজিলের আক্রমণে ধার ছিল না। তবুও ম্যাচের ১৮ মিনিটে গোল করার সহজ সুযোগ মিস করে ব্রাজিল। পরমুহূর্তেই বল পায় সুইজারল্যান্ড।
বল পায়ে ব্রাজিলের রক্ষণদূর্গে বারবার আঘাত করতে থাকে সুইজারল্যান্ড। তবে ব্রাজিলের ক্লিনশিট ধরে রাখার কৃতিত্ব ব্রাজিলের গোলকিপার এলিসন বেকারের। ২০ মিনিটে এলিসনের দারুণ সেভে রক্ষা পায় ব্রাজিল।
সার্বিয়ার ম্যাচের মতো ব্রাজিলের ফিনিশিংয়ে দূর্বলতা বহাল ছিল এ ম্যাচেও। ২৬ মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়র মিস না করলে ব্রাজিল হয়তো প্রথমার্ধেই লিড নিতে পারতো। এরপর আবার ৩০ মিনিটে রাফিনহার শট সেভ করেন সুইস গোলকিপার ইয়ান সমার।
এদিকে সুইজারল্যান্ড আক্রমণ করতে থাকে। তবে আবারো ত্রাণকর্তা হিসেবে আসেন এলিসন বেকার, ম্যাচের ৩৮ মিনিটে করেন আরো একটি দারুণ সেভ। এরপর আর কোনো গোল না হলে গোলশূন্য ড্রতেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।
প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও দুই দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ অব্যাহত থাকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে লিড পেতে পারতো সুইজারল্যান্ড। ম্যাচের ৫২ মিনিটে সুইসদের ফের গোল আনন্দ রুখে দেন গোলকিপার এলিসন বেকার।
এর কিছুক্ষণ পরেই সুযোগ পায় ব্রাজিল। ৫৬ মিনিটে ভিনিসিয়াসের ক্রস থেকে গোলের সুযোগ মিস করেন দলের স্ট্রাইকার রিচার্লিসন। গত ম্যাচে রিচার্লিসনের জোড়া গোলেই জয় নিশ্চিত হয়েছিল ব্রাজিলের।
ম্যাচের ৬৩ মিনিটে লিড পায় ব্রাজিল। রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ভিনিসিয়াস জুনিয়র বল ড্রিবল করে গোলপোস্টে পাঠান। সেই বল আটকানোর সাধ্য ছিল না সুইস গোলকিপার ইয়ান সমারের। কিন্তু ব্রাজিলের আনন্দে বাঁধা হয়ে আসে ভিএআর। ভিএআর চেক করে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। ফলে স্কোরলাইন আবারো ০-০ হয়ে যায়। এরপর ৭৮ মিনিটে ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। ফ্রি কিক থেকে শট সেভ করেন সুইস কিপার সমার।
অবশেষে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ম্যাচের ৮৩ মিনিটে রদ্রিগোর এসিস্ট থেকে গোল করেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা মিডফিল্ডার ক্যাসিমিরো। ব্রাজিল এগিয়ে যায় ১-০ গোলে।
গোল করার পর যেন ব্রাজিলের আক্রমণে প্রাণ ফিরে আসে। ৮৬ মিনিটে সমারের সেভ না দিলে ব্যবধান আরো বাড়াতে পারতো ব্রাজিল। অতিরিক্ত সময়েও গোলের সুযোগ মিস করে ব্রাজিল। এরপর আর কোনো গোল না হলে ১-০ জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে তিতের দল।
এই জয়ে ফ্রান্সের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে রাউন্ড অব ১৬ নিশ্চিত করল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ড।
উল্লেখ্য, প্রথম ম্যাচ জেতায় দু‘দলের সামনেই সুযোগ রয়েছে পরের রাউন্ডে যাওয়ার। তবে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে ব্রাজিল নেইমার ও দানিলো কে পাচ্ছে না। ইঞ্জুরির কারণে আপাতত দু‘জনই বিশ্বকাপ থেকে ছিঁটকে গেছে
Leave a Reply