মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-এর সাবেক পরিচালক জেমস কমি। তিনি সম্প্রতি সামুদ্রিক ঝিনুক দিয়ে সাজানো ‘৮৬৪৭’ সংখ্যার একটি ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন। আর এতেই তিনি চরম বিপাকে পড়েছেন এবং এমনকি তাকে এখন তদন্তের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক এফবিআই প্রধান জেমস কমির পোস্ট করা একটি ছবিকে ঘিরে যত রহস্যের সৃষ্টি। বলা হচ্ছে, কমির পোস্ট করা ওই ছবির সংখ্যাগুলো শুধুমাত্র ৪টি সংখ্যা নয়। এর পেছনে রয়েছে গভীর রহস্যে ঘেরা বার্তা। ট্রাম্পের সমর্থকসহ রিপাবলিকানরা ছবিটির ব্যাখ্যাই করে ধারণা করছেন, ওই পোস্টের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হুমকি ও সহিংসতার বার্তা লুকিয়ে রয়েছে।
এদিকে রয়টার্স জানিয়েছে, এরই মধ্যে জেমস কমির পোস্টটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সিক্রেট সার্ভিস।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কমির ইনস্টাগ্রামের পোস্টে দেখা যায়, সৈকতের বালিতে হলুদ-কালো ঝিনুক দিয়ে সাজানো সংখ্যা ‘৮৬৪৭’। তাতে ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, ‘সমুদ্রসৈকতে হাঁটার সময় পাওয়া ঝিনুকের দারুণ এক বিন্যাস।’
আবার বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, মেরিয়াম ওয়েবস্টার ডিকশনারি অনুযায়ী ‘৮৬’ সংখ্যাটি ইংরেজি স্ল্যাং বা খারাপ অর্থে ব্যবহার করা হয়। কাউকে ‘ছুড়ে ফেলা’ বা কারও থেকে রেহাই পাওয়া বা সরিয়ে দেওয়া অর্থে এই সংখ্যাটি ব্যবহৃত হয়। এছাড়া ‘৮৬’ সংখ্যাটি দিয়ে মাতাল কাউকে বার থেকে ছুড়ে ফেলা অর্থেও ব্যবহার করা হয়। তবে, অতি সম্প্রতি এই সংখ্যাটি ‘খুন’ শব্দ বোঝাতে ব্যবহার করা হয়েছে বলে ডিকশনারিতে উল্লেখ রয়েছে।
৮৬’-এর পাশাপাশি ‘৪৭’ সংখ্যাটি হলো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য প্রযোজ্য একটি সাংকেতিক কোড বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এর ব্যাখ্যাতে বলা হয়, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট।
তাই এসব কারণে ট্রাম্পের অনুরাগীরা বলছেন, ‘পোস্টটির মাধ্যমে প্রেসিডেন্টকে খুনের ইঙ্গিতই দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে এমন এক পোস্ট দেওয়ায় চরম বিতর্কের মুখে পড়ার কারণে ইতোমধ্যে তা সরিয়েও ফেলেন কমি। এরপর তিনি আরেকটি পোস্ট করে বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম এটি হয়তো রাজনৈতিক কোনো বার্তা। আমি বুঝতে পারিনি, এটাকে কেউ সহিংসতার সঙ্গে মেলাবে। আমি সব ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে, তাই পোস্টটি মুছে দিয়েছি।’
সম্প্রতি ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘একজন শিশুও বোঝে এর মানে কী। এর মানে হচ্ছে হত্যাকাণ্ড। এখানে সেটি খুবই স্পষ্ট।’
ট্রাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিসের মুখপাত্র অ্যান্থনি গুগলিয়েলমি এক্সে বলেছেন, ‘আমরা আমাদের সুরক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যেকোনো সম্ভাব্য হুমকি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে দেখি।’
তিনি বলেন, ‘সাবেক এফবিআই পরিচালক জেমস কমির পোস্ট আমাদের নজরে এসেছে। তার এ ধরনের ভাষা আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি।’
এই রহস্যময় সংখ্যাবিষয়ক ঘটনায় বর্তমান এফবিআই পরিচালক কাশ প্যাটেল বলেছেন, ‘আমরা এ বিষয়ে সিক্রেট সার্ভিসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। মূল তদন্তের দায়িত্ব সিক্রেট সার্ভিসের হলেও প্রয়োজনে এফবিআই সহায়তা দেবে।’
Leave a Reply