1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০১:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
স্বেচ্ছাসেবক লীগের র‌্যালি থেকে ফেরার পথে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চরম তাপপ্রবাহ আসন্ন বিপদের ইঙ্গিত দ্বিতীয় ধাপে কোটিপতি প্রার্থী বেড়েছে ৩ গুণ, ঋণগ্রস্ত এক-চতুর্থাংশ: টিআইবি সাড়ে ৪ কোটি টাকার স্বর্ণসহ গ্রেপ্তার শহীদ ২ দিনের রিমান্ডে ‘গ্লোবাল ডিসরাপ্টর্স’ তালিকায় দীপিকা, স্ত্রীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত রণবীর খরচ বাঁচাতে গিয়ে দেশের ক্ষতি করবেন না: প্রধানমন্ত্রী জেরুসালেম-রিয়াদের মধ্যে স্বাভাবিককরণ চুক্তির মধ্যস্থতায় সৌদি বাইডেনের সহযোগী ‘ইসরাইলকে ফিলিস্তিন থেকে বের করে দাও’ এসএমই মেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ইরান ২ সপ্তাহের মধ্যে পরমাণু অস্ত্র বানাতে পারবে!

কমিশনে রিভিউ আবেদন করবেন শরীফ উদ্দিন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন জানাবেন সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) শরীফ উদ্দিন। তার প্রত্যাশা- পুনর্বিবেচনার আবেদন মঞ্জুর করে কমিশন তাকে দেশের জন্য আবারও কাজ করার সুযোগ দেবেন। আর কমিশন সেই সুযোগ না দিলে চাকরি ফিরে পেতে প্রয়োজনে তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন। গতকাল শনিবার দৈনিক আমাদের সময়ের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন পরিকল্পনার কথা জানান।

শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘কমিশন আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তুলেছে, তা প্রমাণের আগেই আমাকে শেষ করে দিলে দুর্নীতিবাজদের জয়জয়কার হবে।’ তিনি বলেন, নিজের কাজে কোনো অস্বচ্ছতা নেই।

চট্টগ্রামের অভিযানে জব্দ করা টাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করা হয়েছিল। পটুয়াখালীতে গিয়ে কোনো ধরনের অপারেশন করিনি। চট্টগ্রামে আমার কাছে চাঞ্চল্যকর ১৩০টি নথি ছিল, অফিসের ছয়টি আলমারিতে ভরা রয়েছে সেসব আলামত। তবে এই ফাইলগুলো বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য কোনো আদেশ তাকে দেওয়া হয়নি। আর পটুয়াখালীতে চলে যাওয়ার পরও এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। অথচ এই ফাইল বুঝিয়ে না দেওয়ার অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হলো। আবার একই আদেশে ফাইল হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছে। অথচ তার আগেই সব নথি সংশ্লিষ্টদের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি।’

এদিকে শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুতির ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। একজন সাহসী কর্মকর্তাকে থামিয়ে দিতে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কিনা সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। একই সঙ্গে বলেছেন- শরীফ উদ্দিন যদি নির্দোষ হয়ে থাকেন, তা হলে তাকে চাকরিচ্যুত করার মধ্য দিয়ে দুর্নীতিবাজরা উৎসাহিত হবেন।

কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রায় তিন লাখ কোটি টাকার ৭২টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধান করেছিলেন শরীফ উদ্দিন। তিনি প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত সরকারের কয়েকজন আমলাসহ দুই ডজন কর্মকর্তা, প্রভাবশালী ও প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করেছিলেন।

তার সহকর্মীদের দাবি- ওই সুপারিশই কাল হয়েছে শরীফ উদ্দিনের। তার কাছ থেকে ফাইল নিয়ে অন্য কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে। তাকে চট্টগ্রাম থেকে সরিয়ে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়েছে। বিষয়টি এ পর্যন্ত হলে মানা যেত। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়, যার প্রতিবাদে কর্মকর্তারা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। চাকরিচ্যুতির আদেশ প্রত্যাহার ও যে ধারা অনুয়ায়ী তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে, সেই ধারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সংস্থাটির তিন শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ ছাড়া চারশতাধিক কর্মকর্তা প্রতিবাদে গণস্বাক্ষর করেছেন।

এর সম্ভাব্য সমাধান সম্পর্কে জানতে চাইলে দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘পুরো ঘটনা তদন্ত হওয়া উচিত। শরীফ উদ্দিন রাষ্ট্রের স্বার্থে কাজ করেছেন কিনা, সেটি সুনিশ্চিত হওয়া দরকার। যদি তাই হয়, তা হলে তাকে পুরস্কৃত করতে হবে। আর যদি কমিশনের বক্তব্য সঠিক হয়, তা হলে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ যে কোনো ধরনের আইনি পদক্ষেপ তার বিরুদ্ধে নেওয়া যেতে পারে। তবে দুদকের অভ্যন্তরে কর্মকর্তাদের নৈরাজ্য কোনোভাবেই আমি সমর্থন করি না। এর একটি সুরাহা হওয়া উচিত।’

শরীফকে চাকরিচ্যুতির পর দুদক সচিব মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ ছিল। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চালু ছিল এবং আরও অভিযোগ আসছিল, অনেক এসেছে। তিনি অব্যাহতভাবে বিধিপরিপন্থী কাজ করে যাচ্ছিলেন। এ কারণে কমিশন ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করেছে। কমিশন মনে করেছে যে দুদকের ভাবমূর্তির রক্ষার্থে, সবার স্বার্থে ৫৪(২) ধারাটি এখানে প্রযোজ্য হয়েছে। তার মানে এই নয় যে, এই ৫৪(২) ধারার প্রয়োগ আমরা সব জায়গাতেই করব। এটি একেবারে শেষ, একেবারে চরম পর্যায়ে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়, সেটিরই একটি অংশ।

শরীফ উদ্দিন বলেন, তার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ আছে, সবগুলোর জবাব দিতে তিনি প্রস্তুত। তাকে সেই সুযোগ দেওয়ার জন্য কমিশনের প্রতি অনুরোধ জানান।

এদিকে ২০০৮ সালের ১৫ জুন প্রকাশিত সরকারের গেজেট পর্যালোচনা করে কর্মকর্তাদের চাকরি ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত দুই রকম তথ্য পাওয়া গেছে। গেজেটের সপ্তম অধ্যায়ে ৩৮ অনুচ্ছেদে আচরণ ও শৃঙ্খলার বিষয়ে বলা হয়েছে, কমিশনে নিযুক্ত কর্মচারীগণের বিরুদ্ধে গ্রহণীয় শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা এই বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে এবং প্রত্যেক কর্মচারী আইনসম্মত আদেশ পালনে ব্যর্থতা বা অনীহা এবং চারিত্রিক স্থলনবিষয়ক (ঘুষগ্রহণ, অনৈতিক বা অসামাজিক কার্যকলাপ) আচরণ কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য হবে না। এসব ক্ষেত্রে কঠোরতম (চাকরিচ্যুত) ও দ্রুততম শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

৩৮(ঘ) ধারায় বলা হয়েছে বিশ্বস্ততা, সততা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে কমিশনের চাকরি করবেন এবং ক্ষমতার কোনো ধরনের অপব্যবহার করবেন না। যদি করেন তাকে দণ্ড হিসেবে প্রথমে তিরস্কার, পদোন্নতি বা বেতনবৃদ্ধি স্থগিত রাখা, সুনির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত টাইম স্কেল বন্ধ রাখা বা নিম্নস্তরে নামিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়া গুরুদণ্ড হিসেবে তদন্তসাপেক্ষে অপরাধ প্রমাণিত হলে তার বেতন ক্রম নিম্নস্তরে অবনতকরণ, বাধ্যতামূলক অবসর, চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্ত করার কথা বলা হয়েছে।

৩৮ ধারার কোনো উপধারায়ই কোনো কারণ না দর্শিয়ে চাকরি থেকে সরাসরি বরখাস্ত বা অপসারণের বিষয়টি বলা নেই। কিন্তু সেটি রয়েছে একই গেজেটের ৫৪(২) বিধিতে, যা প্রয়োগ করা হয়েছে শরীফ উদ্দিনের ক্ষেত্রে। কোনো কারণ না দর্শিয়ে নব্বই দিনের বেতন নগদ পরিশোধ করে চাকরি থেকে অপসারণ করার যে বিধানটি রয়েছে, সেটি তার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়েছে।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুদকের এ বিধিবিধান সাংঘর্ষিক। বিশেষ করে ৫৪(২) বিধি সংবিধানের ১৩৫ নম্বর অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে দণ্ড দেওয়া যাবে না। শরীফ উদ্দিনের ক্ষেত্রে সেটি ঘটেছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

টিআইবি বলছে, একজন শরীফ উদ্দিনকে সরিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে দুর্নীতিবাজদের উৎসাহিত করা হচ্ছে, যা দুদকের কাছে কাম্য নয়।

দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘দুদকের চাকরি বিধিতে ৫৪(২) রাখা হয়েছে, সেটি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন বিষয়। এটি টিকবে কী টিকবে না, সেটি এখন বলা যাচ্ছে না। এটি না-ও টিকতে পারে।

তিনি বলেন, এই বিধিটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। কারণ যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, তাকে কিছু জানানো হলো না। বিনাবিচারে তাকে চাকরিচ্যুত করা হলো। এটি হচ্ছে চরম সাজা দেওয়া। সে জন্য এটি ঠিক হয়নি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com