বিএফডিসিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গেল ২৮ জানুয়ারি। পরদিন ভোরবেলা প্রকাশ হয় নির্বাচনী ফলাফল। সব কিছু ঠিকই আছে, শুধু অভিযোগ দুটি পদ নিয়ে। নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন জায়েদ খান। তবে তার বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ করেছেন প্রতিপক্ষ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ আক্তার।
পাশাপাশি কার্যকরী পরিষদ সদস্য পদে নির্বাচিত চুন্নুর বিরুদ্ধেও নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন এই চিত্রনায়িকা। ১৩ ভোটে নিপুণকে হারিয়ে জয়ী হওয়া জায়েদ খানের প্রার্থীতা বাতিল ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর প্রার্থিতা বাতিলের জন্য নির্বাচনের আপিল বোর্ডের কাছে আবেদন করেন নিপুণ।
তার দাবি, বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাচন কমিশনার- সবাই কাজ করেছেন জায়েদ খানের পক্ষে। তাই ফলাফল গেছে তার বিপক্ষে। আপিল বিভাগের রায়ের উপরই ঝুলে আছে জায়েদ খানের ভাগ্য! এই আপিল বোর্ডের প্রধান হিসেবে আছেন পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান।
তবে গতকাল শুক্রবার জানা গেছে, আপিল বোর্ডের বৈঠকে যাচ্ছেন না জায়েদ খান। উল্টো আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহানসহ চারজনকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন এই চিত্রনায়ক। সোহান ছাড়া বাকিরা হলেন- সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, আপিল বোর্ডের সদস্য মোহাম্মদ হোসেন। বৃহস্পতিবার ব্যারিস্টার মুজিবুল হক ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এই আইনি নোটিশটি পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, শিল্পী সমিতির নির্বাচনের তফসিলের ১৩ নম্বর ধারায় বলা আছে, নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে আপিল বোর্ডের কাছে ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে আপত্তি দাখিলের শেষ তারিখ ২৯ জানুয়ারি। আপিল দাখিলের সময় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। একই তারিখ বিকেল ৫টায় আপিল শুনানি ও নিষ্পত্তি করতে হবে।
২৯ জানুয়ারির পর আপিল বোর্ডের কার্যক্রম অবৈধ উল্লেখ করে জায়েদ খান বলেন, ‘নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী ২৯ জানুয়ারি বিকেল পাঁচটার পর থেকে আপিল বোর্ড মেয়াদ উত্তীর্ণ। একটি মেয়াদোত্তীর্ণ সংস্থা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে লেগেছে, যার কোনো আইনগত ভিত্তিও নেই।’
অন্যদিকে, নির্বাচন কেন্দ্রীক জটিলতা নিষ্পত্তি করতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর নির্বাচনের আপিল বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশ মেনে আজ শনিবার বিষয়টির সুরাহা করতে বিকেল ৪টায় শিল্পী সমিতির অফিসে জরুরি বৈঠক ডেকেছে বোর্ড।
জানা গেছে, সেখানে উপস্থিত থাকার জন্য অভিযোগকারী নিপুণ, অভিযুক্ত জায়েদ খান ও চুন্নু, দুই নির্বাচন কমিশনার জাহিদ হোসেন ও বি এইচ নিশান এবং শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এখন দেখার পালা নির্বাচনের তফসিলের ধারা, আপিল বোর্ডের বৈঠক এবং জায়েদ খানের উল্টো আইনি নোটিশ- সব মিলিয়ে ঘটনা কোন দিকে মোড় নেয়। শিল্পী সমিতির নির্বাচন কেন্দ্রীক জটিলতার সুন্দর সমাধান হবে নাকি এ নিয়ে বাড়বে কাঁদা ছোড়াছুড়ি!
Leave a Reply