1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০৩ অপরাহ্ন

হাসপাতালে ডেল্টা, ঘরে ঘরে ওমিক্রন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২২

দেশে বিগত এক মাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তারা ভাইরাসটির ডেল্টা ধরনে সংক্রমিত। অন্যদিকে প্রতিদিন যে বিপুলসংখ্যক মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন তারা সংক্রমিত ওমিক্রন ধরনে। এ আক্রান্ত রোগীদের অনেকেই দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন। তার পরও কেউ কেউ তৃতীয়বারের মতো সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। এদিকে মাত্র একদিনের ব্যবধানে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ২৬ শতাংশ।

গতকাল মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের ২০ শতাংশই ওমিক্রনে সংক্রমিত। করোনার এ ধরনটি গুণিতক হারে বাড়তে

পারে। প্রাপ্ত ফলের চেয়ে অনেক বেশি ওমিক্রন আক্রান্ত রোগী শনাক্তবিহীন অবস্থায় রয়েছে। গত ৮ ডিসেম্ব^র থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সংগৃহীত নমুনার ২০ শতাংশেই ওমিক্রন এবং ৮০ শতাংশে ডেল্টা ধরন পাওয়া গেছে।

উপাচার্য আরও জানান, জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে যেসব ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর নমুনা নেওয়া হয়েছে তাদের অনেকেই দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন। কেউ কেউ তৃতীয়বারের মতো সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। অন্যদিকে হাসপাতালে ভর্তি রোগী থেকে সংগৃহীত নমুনা জিনোম সিকোয়েন্স করে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। যেহেততু ওমিক্রনে মৃদুু উপসর্গ হয়েছে, তাই সেটা হাসপাতালে ভর্তি রোগীতে না পাওয়ার কারণ হতে পারে। পাশাপাশি মৃদু উপসর্গের রোগীদের মধ্যে পরীক্ষা না করার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে। তাই প্রাপ্ত ফলের চেয়েও অনেক বেশি ওমিক্রন আক্রান্ত রোগী শনাক্তহীন অবস্থায় আছেন। করোনা প্রত্যেক ধরনই বিপজ্জনক এবং তা মারাত্মক অসুস্থতা এমনকি মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে। পাশাপাশি ভাইরাসের নিয়মিত মিউটেশন ঝুঁকিপূর্ণ করতে পারে আমাদের প্রচলিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে। তাই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ টিকা গ্রহণ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোমেস, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, প্রধান গবেষক অ্যানাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান ও জেনেটিক্স অ্যাান্ড মলিকিউলার বায়োলজিবিষয়ক অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ রিপোর্ট বিএসএমএমইউর চলমান গবেষণার ছয় মাস ১৫ দিনের ফল। গত বছরের ২৯ জুন থেকে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশব্যাপী কোভিড আক্রান্তদের ওপর এ গবেষণা পরিচালিত হয়। এতে রিপ্রেজেন্টেটিভ স্যাম্পলিং করা হয় দেশের সব বিভাগের। গবেষণায় মোট ৭৬৯ কোভিড পজিটিভ রোগীর ন্যাজোফ্যারিনজিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়েছে। গবেষণায় ৯ মাস থেকে শুরু করে ৯০ বছর বয়সী রোগী অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর মধ্যে ২১ থেকে ৫৮ বছর বয়সের রোগীর সংখ্যা বেশি। যেহেতু কোনো বয়সসীমাই কোভিডের জন্য ইমিউন করছে না, সে হিসেবে শিশুদের মধ্যেও সংক্রমণ রয়েছে। এ ছাড়া যাদের কো-মরবিডিটি রয়েছে যেমন- ক্যানসার, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস তাদের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। পাশাপাশি ষাটোর্ধ্বদের দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হলে মৃত্যু ঝুঁঁকি বেশি দেখা গেছে।

গবেষণার বরাত দিয়ে আরও জানানো হয়, কোভিড-১৯ জেনোম সিকোয়েন্সিং বিশ্লেষণে গত বছরের জুলাইতে দেখা যায়, মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ ছিল ডেল্টা ধরনে। ১ শতাংশ সংক্রমিত ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে উদ্ভূত করোনার বেটা ধরনে। এ ছাড়া ১ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে যাওয়া যায় করোনার মরিসাস ধরন অথবা নাইজেরিয়ান ধরন। অন্যদিকে জুলাই থেকে ডিসেম্ব^রের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত জিনোম সিকোয়েন্সে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ৯৯.৩১ শতাংশ ছিল ডেল্টা ধরনে আক্রান্ত রোগী। কিন্তু ৮ ডিসেম্ব^র থেকে ৮ জানুয়ারি ৬পর্যন্ত সংগৃহীত নমুনার ২০ শতাংশেই ওমিক্রন ধরন মিলেছে। বাকি ৮০ শতাংশ রোগী ডেল্টায় সংক্রমিত।

অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ডেল্টার চেয়ে ওমিক্রন ধরনে অনেক বেশি সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে প্রতিয়মান। ওমিক্রনের জেনেটিক কোডে ডেল্টার চেয়ে বেশি ডিলিশন মিউটেশন পাওয়া গেছে। যার বেশিরভাগ ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিন রয়েছে। এ স্পাইক প্রোটিনের ওপর ভিত্তি করে বেশিরভাগ টিকা তৈরি করা হয়। স্পাইক প্রোটিনের বদলের কারণেই প্রচলিত টিকা গ্রহণের পরও ওমিক্রন সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যায়।

শনাক্ত রোগী বেড়েছে ২৬ শতাংশ

ওমিক্রনের প্রভাবে দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ২৬ শতাংশ। রাজবাড়ী ছাড়া দেশের বাকি ৬৩ জেলাতেই আগের দিন সকাল ৮টা থেকে গতকাল একই সময় পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার ৫৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ৮ হাজার ৪০৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত সোমবার এই সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৬৭৬ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৩.৯৮ শতাংশে, যা গত বছরের ১৩ আগস্টের পর সর্বোচ্চ। ওই দিন শনাক্তের হার ছিল ২৫.৩৯ শতাংশ। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৩২ হাজার ৭৯৪ জনে। গত একদিনে আরও ১০ জনের মৃত্যু হওয়ায় রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ১৬৪ জন। সরকারি হিসাবে গত একদিনে দেশে সেরে উঠেছেন ৪৭৫ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৫৩ হাজার ৭৯৫ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৮ জন পুরুষ এবং ২ জন নারী। এদের মধ্যে ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়সী একজন, ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সী ১, ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সী ৪ এবং ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ৪ জন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com