নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে আজ বুধবার ‘জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের’ (জাসদ) সঙ্গে মতবিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ক্ষমতাসীন ১৪-দলীয় জোটের এই শরিকও ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে আইন প্রণয়নের দাবি জানাবে।
বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনে এ মতবিনিময় শুরু হবে। জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার আমাদের সময়কে জানান, তাদের ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে যাবে। এই প্রতিনিধি দলে সভাপতি হাসানুল হক ইনুর পাশাপাশি তিনিও থাকবেন।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর বঙ্গভবনে যাবে ১৪-দলীয় জোটের আরেক শরিক- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। দলের সভাপতি রাশেদ খান মেনন আমাদের সময়কে বলেন, ‘সংলাপে আমরা নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ণের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের প্রস্তাব দেব।’
বাম গণতান্ত্রিক জোটভুক্ত দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) আমন্ত্রণ পেয়েছে। তবে তাদের যাওয়া এখনো নিশ্চিত নয়।
বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ আমাদের সময়কে বলেন, ‘এর আগে কয়েক দফা এ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সংলাপে গিয়েছি। কিন্তু কোনো ফল আমরা দেখিনি। যখন সংলাপ চলছে, তখন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন আইন প্রণয়ন সম্ভব নয়। এতেই বোঝা যায়, এটা সংলাপ নয়, হচ্ছে মতবিনিময়। সে কারণে আমরা এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যাব কিনা, তা দল ও জোটের সঙ্গে কথা বলে জানাব।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির এই আলোচনাকে ‘সংলাপ’ বলা হলেও বঙ্গভবনের ভাষায় বলা হয়, ‘নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়’।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের মধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাসদ- এই তিনটি দল নিবন্ধিত। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত কেবল বাসদ আমন্ত্রণ পেয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, আমন্ত্রণ পেলেও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেউ সংলাপে যাবে না বলে তারা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সূচি অনুযায়ী, ২৬ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ও সন্ধ্যা ৬টায় বাসদের সঙ্গে সংলাপ হবে। পরদিন বিকাল ৪টায় তরিকত ফেডারেশনের সঙ্গে ও সন্ধ্যা ৬টায় হবে খেলাফত মজলিসের সঙ্গে। ২৯ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ এবং ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে সন্ধ্যা ৬টায় সংলাপ হবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ নিবন্ধিত অন্য দলগুলোকে শিগগিরই ডাকা হবে বলে জানা গেছে।
গত সোমবার প্রথম দিন জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে মতবিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি। জাতীয় পার্টির নেতারাও নতুন ইসি গঠনে আইন করার প্রস্তাব দিয়েছেন। সময় স্বল্পতার কারণে আইন করা না গেলে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে ইসি গঠনের কথা বলেছে দলটি। যদি কোনো কারণে অধ্যাদেশ জারি সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে সার্চ কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য তারা ৪ জনের নাম প্রস্তাব করেছে।
নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই নতুন ইসি নিয়োগ দিতে হবে। সংলাপের মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠন করে বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি। এবারও তাই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে সেই সংলাপ শুরু হয়েছিল। তা এক মাস ধরে ৩১টি দলের সঙ্গে চলে।
বঙ্গভবন সূত্র জানায়, এবার এক মাস ধরে সংলাপ নাও চলতে পারে। মহামারীর কারণে রাষ্ট্রপতি আগেই আলোচনা শেষ করতে পারেন।
Leave a Reply