এ মুহূর্তে দেশে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় নিশ্চয়ই শিক্ষা। স্কুল-কলেজ কবে খুলছে, পরীক্ষা হবে কিনা বা ভ্যাকসিন সবার কাছে পৌঁছবে কিনা এসব নানা প্রশ্ন জনমনে অনবরত ঘুরপাক খাচ্ছে। দেশের সক্ষমতা যখন সামাজিক ও মানবিক উন্নয়নের সব সূচকে বিশ্বজনীন মানকে স্পর্শ করার পথে, অনুন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার সংকল্পে আমরা যখন মুষ্টিবদ্ধ-ইতিহাসের এমনই এক সন্ধিক্ষণে মহামারির ভয়ানক ছোবলে দেশের শিক্ষা করুণভাবে আক্রান্ত, বিপন্নও বটে।
দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রবল প্রতাপে ফিরে আসা করোনা আবহে শিক্ষাঙ্গনে এখন একটিই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে-স্কুলগুলোর কী হবে? শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবাই বিভ্রান্ত। সশরীরে ক্লাসের জন্য শিক্ষার্থীরা মুখিয়ে। কিন্তু করোনার দাপট বাড়ায় সব সম্ভাবনাই এখন অনিশ্চয়তার আবর্তে তলিয়ে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মতে, মহামারির কারণে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সময়ের জন্য একটানা অবকাশে যাওয়া শিক্ষাব্যবস্থাগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ব্রাজিলের পর হয়তো আমাদের শিক্ষাই সর্বাধিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। খুব কম দেশ আছে, যারা আংশিক সময়ের জন্যও প্রতিষ্ঠান খোলেনি। সমীক্ষা বলছে, ৫.৯২ মিলিয়ন প্রাথমিক-মাধ্যমিক শিক্ষার্থী সবচেয়ে বেশি ‘লার্নিং লসে’র সম্মুখীন। আর এ ক্ষতির মেরামতও ভবিষ্যতে আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে থেকে যাবে। যদিও বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, মহামারি মোকাবিলায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার মতো কৌশল সর্বশেষ পন্থা হওয়াই বাঞ্ছনীয় ছিল। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একটানা বন্ধ থাকলে লাভ-ক্ষতির হিসাবে দিনের শেষে ক্ষতির পাল্লাই বেশি।
সংক্রমণ পাঁচ শতাংশের নিচে নামলে স্কুল-কলেজ খোলা যেতে পারে-এমনই একটা আভাস মিলেছে। তাহলে প্রশ্ন থাকছে, অক্টোবর-নভেম্বর মাসে যখন সংক্রমণের তীব্রতা কমে এসেছিল, তখন প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা হলো না কেন? আমাদের প্রতিবেশীসহ বিভিন্ন দেশে এ কাজটাই করা হয়েছে। গেল বছর বিভিন্ন সংস্থা এ বিষয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতামত গ্রহণ করেছিল। দেখা গেছে, বিপুল গরিষ্ঠতায় প্রতিষ্ঠান খোলার পক্ষে মত এসেছে। স্থানীয় পরিবেশ মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার দাবিও উঠছিল বিভিন্ন জায়গা থেকে।
এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সুশীলসমাজ নির্ণায়ক হতে পারত। এমন ধারণার উদ্ভব ঘটছিল এ কারণে যে, সংক্রমণের মাত্রা শহরে যে ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল, গ্রামে তা ছিল না। আবার অন্যদিকে ‘ডিজিটাল ডিভাইস’ নামে নতুন শব্দবন্ধ করোনাকালেরই উদ্ভাবন। অর্থাৎ স্বল্পবিত্ত অভিভাবকরা ‘ডিজিটাল ডিভাইসে’র সুবিধা তাদের সন্তানদের কাছে পৌঁছে দিতে পারেননি। ফলে গ্রাম-শহর ও ধনী-দরিদ্রের মাঝে একটা স্পষ্ট বিভাজন রেখা তৈরি হয়েছে।
যারা স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ডেটাপ্যাকের আলোকবৃত্তে ঠাঁই পেল, তারা সুবিধাপ্রাপ্ত। অন্যরা বঞ্চিত। আসলে অন্তর্জালে প্রবেশ করতে না পারলে শিশুর শিক্ষার অধিকার থাকবে না। শোভন কর্মসংস্থানও জুটবে না। জাতীয় সমৃদ্ধিতে তাদের যোগদান সীমিত হয়ে পড়বে, যা এসডিজি অর্জনের জন্য খুবই জরুরি। সমাজের গভীরে দারিদ্র্যের অদৃশ্য স্রোতগুলোকে করোনাকাল আলোর সামনে এনে দিয়েছে।
সিপিডি বলছে, দেশের ১৬ মিলিয়ন মানুষ আরও গরিব হয়ে পড়েছে। আর বিদ্যমান আর্থিক অসাম্যকে বিবেচনায় না নিয়েও বলা যায়, করোনাকালে বাল্যবিবাহ, মানসিক অবসাদ, অনিশ্চয়তা, অপরাধপ্রবণতা বেড়েছে, এমনকি শিশু-কিশোর আত্মহত্যায় প্ররোচিত হচ্ছে। ঝরে পড়াদের একটা বৃহৎ অংশই হয়তো মূল স্রোতে আর ফিরবে না। কোনো পর্যায়েই একটা সুসংহত পরিকল্পনা দেখা যাচ্ছে না। কাজেই একটানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ না রেখে মাঝেমধ্যে সংক্রমণ বিস্তারের দিকে নজর রেখে প্রতিষ্ঠান খোলা উচিত ছিল বলে অনেকে মনে করেন, যা বিশ্বের অধিকাংশ দেশে হয়েছে।
ভুললে চলবে না, বাড়ি থেকে সম্ভব হলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন হতো না। শুধু সনদ নয়, দক্ষতা দরকার-একথা ঠিক। কিন্তু বাড়িতে বসে এ দক্ষতা অর্জনেও ঘাটতি থেকে যায়। আনুষ্ঠানিক শিক্ষাকাঠামো শিক্ষার্থীর মননশীলতার বিকাশ, অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও আন্তঃব্যক্তি যোগাযোগ শৈলী নির্মাণ করে। আত্মনির্ভর দেশ গঠনের জন্য একটি দক্ষতাসম্পন্ন জনশক্তি চাই। এর জন্য দরকার মানসম্পন্ন শিক্ষা। এ শিক্ষার আয়োজনে যাতে কোনো রকম দুর্বলতা না থাকে তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
আসলে করোনাকালীন শিক্ষা ব্যবস্থাপনার বিকেন্দ্রীকরণ বা স্পষ্ট করে বললে স্থানীয় পর্যায়ে, বিশেষ করে মফস্বল থেকে সংক্রমণের মাত্রা বিচার করে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার ধারণাটি প্রথমে যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছিল। কিন্তু বিষয়টি এখন নানা কারণে জটিল হয়ে পড়ছে। মার্চ মাসের শেষদিকে ভারতেও করোনার সংক্রমণ নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্ত এলাকা সংক্রমণের নতুন ঝুঁকি তৈরি করছে। ঈদের সময় রাজধানী থেকে ছড়িয়ে পড়া বিশাল জনস্রোত গ্রামগুলোকে অনিরাপদ করে তুলেছে।
সংক্রমণ যে গ্রামে বাড়ছে তা বেশ বোঝা যাচ্ছে। একদিকে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের চোখ রাঙানি, অন্যদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় আমাদের প্রবৃত্তিগত অনীহা করোনার বিস্তারকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। তবে যা যথেষ্ট আশঙ্কার তা হলো-গ্রামে এখন শিশুদেরও আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। আর সে সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। অঙ্কের এ উর্ধ্বমুখী প্রবণতা ক্রমাগত উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। তাই এ মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অনেক বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে।
প্রথমেই দরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের টিকাকরণ। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী-সবার ভ্যাকসিনেশন জরুরি। ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও তার দ্রুত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রয়োজন ন্যূনতম কোভিড বিধি মানার সংস্কৃতির অনুশীলন। স্কুলে বা যে কোনো শিক্ষাঙ্গনে শিশুদের নিয়ম মানানো কঠিন কাজ নয়। প্রথমত, শিশুরা শৃঙ্খলাপ্রবণ এবং যে কোনো নতুন ব্যবস্থাকে স্বাভাবিকভাবে বরণ করে নিতে অভ্যস্ত।
কিন্তু মনে রাখতে হবে, এ শিশুরা বিরাট সময় প্রতিষ্ঠানের বাইরে থাকে। এরা সখ্যপ্রিয়, ঘনিষ্ঠ হওয়া শৈশবেরই অবিচ্ছেদ্য একটি পর্ব, শারীরিক নৈকট্য এদের জৈবিক প্রবৃত্তি; যা তাদের সামাজিক করে, মানবিক ও সংবেদী করে। এটিও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুফল। কিন্তু এর ফলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। আর যা এদের রক্ষা করতে পারে তা হলো-সঠিক নিয়মে অব্যবহৃত মাস্ক পরা। সম্ভব হলে দুটো একসঙ্গে। দ্বিতীয়ত, গণপরিবহণ কিংবা দলবদ্ধ যাতায়াত, যা দৃশ্যত তদারকি বলয়ের বাইরে। এরপর রয়েছে রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, অফিস-আদালত, জনাকীর্ণ শিল্প এলাকা।
সবকিছুকেই কার্যকর তদারকির আওতায় আনতে হবে। কোভিড শিষ্টাচার মেনে চলায় সমাজকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে জোরালো কার্যক্রম চালাতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি, রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধিদের আগে নিজেদের উদ্বুদ্ধ হতে হবে। অতঃপর অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে হবে। আইনপ্রয়োগকারী বাহিনীগুলোকে সঠিক নির্দেশনা দিতে হবে, যাতে করে তারা পরে বিব্রত না হয়। মনে হয় জরিমানা ধার্য করা সবচেয়ে ভালো। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা করোনা যোদ্ধাদের সঠিক নির্দেশনা থাকতে হবে।
স্বাস্থ্যবিধি শুধু শিক্ষার্থীর জন্য নয়, সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য হতে হবে। আর শিশুর নিরাপত্তার জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। যে কোনো মূল্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে। মনে রাখতে হবে, সমাজে কোনো কিছুর চাহিদা থাকলে সোজা কিংবা বাঁকা যে কোনো পথেই তা পূরণ হয়ে যায়।
দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষাজীবনে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। অনিশ্চয়তাও এসেছে। ফলে এরা কোচিং-প্রাইভেটে ঝুঁকছে। কোচিং-প্রাইভেট শিল্পের আকার ক্রমেই স্ফীত হচ্ছে। এসব কিন্তু সশরীর কার্যক্রম। ছোট টেবিলে ১২ জন শিশুকে গাদাগাদি করে পঠন-পাঠন চলছে। এসব দেখার কেউ নেই। শিক্ষকই মাস্ক পরছেন না। শিশুরা তো অনুকরণপ্রিয়। তাড়া না থাকায় এরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় উদাসীন। সংক্রমণের শৃঙ্খল ভেঙে ফেলার আয়োজন যে সফল হচ্ছে না তা স্পষ্ট। পথ-ঘাট, শপিংমল, গণপরিবহণ-সর্বত্রই শিশুরা অবাধে ঘোরাফেরা করছে, যেমনভাবে তারা কোচিং সেন্টারে যাচ্ছে।
সমাজে বৃহত্তর পরিসরেও স্বাস্থ্যবিধি মানায় যখন সীমাহীন অনীহা, তখন শিশুরা নিজগৃহেও নিরাপদ নয়। পক্ষান্তরে, মনে হয় কর্তৃপক্ষ যেভাবে চাইবে সেভাবেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিধি মানা সম্ভব, যা কোচিং সেন্টার বা অন্যত্র সম্ভব নয়। নাটকীয়ভাবে যদি পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে, তবে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলেই প্রতীয়মান হয়। স্কুলে প্রশস্ত শ্রেণিকক্ষে পরিকল্পনামাফিক ছাত্রছাত্রীকে বেঞ্চের দুই প্রান্তে বসিয়ে প্রয়োজনে শিফট করে এবং উপযুক্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠান চালু করা সম্ভব বলে মনে হয়।
তবে যা জরুরি তা হলো-আইন মানতে সমাজকে উদ্বুদ্ধ বা প্রয়োজনে বাধ্য করতে হবে। এক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা একটা সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করে। মানুষকে নিশ্চিত হতে হবে-কেউ অন্যায় করলে বা আইন অমান্য করলে সে পার পাবে না। প্রয়োজনে সব সড়ক, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিসিটিভি ফুটেজ অনুসরণ করেও দায়ী ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকার, বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ এবং সাধারণ মানুষের মতামতের ওপর ভর করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। আমাদের দেশে গত বছর পরীক্ষা বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তাও যথার্থ ছিল বলেই মনে হয়। সে কথা আমরা এখনো বলছি। ক্লাস চালুর ক্ষেত্রে সে বাধা নেই, যা সশরীর পরীক্ষা পরিচালনার ক্ষেত্রে আছে। একজন সংক্রমিত হলে সেন্টার বাতিলের ঝুঁকি থাকে। সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্তেও জটিলতা তৈরি হতে পারে। পাবলিক পরীক্ষা আইনের সঙ্গেও অনেক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হতে পারে।
মহামারি মোকাবিলায় দেশের সব দল, শ্রেণি-পেশা, মত-পথের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ভ্যাকসিন বা শিক্ষার মতো বিষয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সবার অভিজ্ঞতা ও সদিচ্ছা এখন ভীষণ প্রয়োজন। মহামারি যেমন সীমান্ত মানেনি, উহান থেকে যার উদ্ভব তা এখন সারা বিশ্বে বিস্তৃত। অতীতেও এমন ঘটেছে। তবে বিশ্বায়নের ফলে পৃথিবী ছোট হয়ে আসায় সংক্রমণ ঝড়ের গতি নিয়েছে। প্রজাতির পরিবর্তনশীল শক্তি ও বিস্তারের প্রবণতা কল্পনাকেও হার মানিয়েছে।
এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, দুর্যোগ মোকাবিলায় এখন শুধু নিজ দেশের অভ্যন্তরীণ ঐক্য নয়, গোটা বিশ্বের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সম্পদ একত্র করে মানবসভ্যতার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে হবে। আর আমাদের দেশ যখন দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে, সম্ভাবনার দিগন্তরেখা ক্রমেই উজ্জ্বল হয়ে উঠছে, তখন স্বপ্নজয়ের পথে যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় সবার সর্বাত্মক লড়াইয়ে শামিল হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
দ্রুত ভ্যাকসিন আবিষ্কার নিঃসন্দেহে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আকাশছোঁয়া সাফল্য। প্রকৃতির বৈরিতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দানে মানবজাতির শ্রেষ্ঠত্ব ও সামর্থ্যরে এ এক উজ্জ্বল নিদর্শন; যা মানুষকে ক্রমাগত ভরসা জোগায়, বুদ্ধি ও যুক্তিকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে চলার প্রেরণা দেয়।
অমিত রায় চৌধুরী : সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ
Leave a Reply