হামলা। পাল্টা-হামলা। মুহুর্মুহু বিমানাঘাত থেকে আপাতত নিরাপদ গাজা উপত্যকা এবং ইসরায়েল। টানা ১১ দিনের যুদ্ধ- ফিলিস্তিনিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে যা স্পষ্টতই ‘হত্যাযজ্ঞ’- শেষ হলো শুক্রবার, যুদ্ধবিরতি কার্যকরের মধ্য দিয়ে। এরই মধ্যে আড়াইশ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে অন্তত ২৩৮ জনই ফিলিস্তিনি। বিশ্বনেতাদের অব্যাহত মধ্যস্থতায়, বিশেষ করে চাপ, পড়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বারংবার অনুরোধের পর ইসরায়েল এ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। কিন্তু কতদিন স্থায়ী হবে এবারের যুদ্ধবিরতি, সে বিষয়ে সংশয় রয়েই যাচ্ছে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, এমনকি শুক্রবারই জেরুজালেমে আল আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনিরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে সমবেত হলে তাদের ওপর চড়াও হয় ইসরায়েলি পুলিশ। তবে বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য প্রতিনিধি জেরেমি বোয়েন বলেছেন, তিনি দক্ষিণ ইসরায়েলে গাড়িতে করে যাওয়ার সময় দেশটির সেনাবাহিনীকে আইরন ডোম থেকে ব্যাটারি খুলে ফেলতে দেখেছেন। এর মানে, বোয়েন বলছেন, যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হওয়ার ব্যাপারে ইসরায়েল আত্মবিশ্বাসী।
বোয়েন আরও বলেছেন, গাজার সশস্ত্র বাহিনী হামাস এখন নতুন করে অস্ত্রসজ্জিত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে এবং ইসরায়েলি হামলায় নিহত কমান্ডারদের বদলে নতুন কমান্ডার বাছাই করবে। এদিকে ১১ দিনে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনী যে সহিংসতা চালিয়েছে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য এজাত আল-রশিক। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীর এই নেতা ইসরায়েলকে সতর্ক করে আরও বলেছেন, যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও তারা এখনো ট্রিগারে হাত রেখেছেন। অর্থাৎ ইসরায়েল চুক্তি লঙ্ঘন করলেই তার যোগ্য জবাব দেবে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা। রশিক বলেন, ‘এটি সত্য যে, যুদ্ধ শেষ হয়েছে। তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ গোটা বিশ্বের জানা উচিত, আমাদের হাত এখনো ট্রিগারে
রয়েছে। আত্মরক্ষায় আমরা এই অঞ্চলে প্রতিরোধ সক্ষমতা বৃদ্ধি অব্যাহত রাখব।’ কাতারের দোহায় রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এজাত আল-রশিক বলেন, জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদ রক্ষা এবং পূর্ব জেরুজালেম থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ রোধ করা হামাসের অন্যতম লক্ষ্য। ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হামাস। ২০০৬ সালের নির্বাচনে অধিকাংশ আসনে জয় লাভ করে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়। ফলে গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নিয়ন্ত্রণ খুবই কম। আব্বাস ও তার দল ফাতাহর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীর।
Leave a Reply