মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরের রাস্তায় সাঁজোয়া যানের টহল দিতে দেখা যাচ্ছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি হওয়া অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের দমনে এই পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। এছাড়া গতকাল রোববার স্থানীয় সময় রাত ১টা থেকে ইন্টারনেট যোগাযোগ প্রায় পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়,গতকাল রোববার মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাজ্য কাচিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটি বিক্ষোভে গুলি চালিয়েছে। অভ্যুত্থানের পর টানা নবম দিনের মতো চলা বিক্ষোভে এই গুলির ঘটনা ঘটেছে।
রোববার সারা দেশে র্যালি করে বিক্ষোভকারীরা। কাচিনের রাজধানী মিতকিনায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের সময় গুলির শব্দ শোনা গেছে। তবে সেটি গুলি নাকি রাবার বুলেট তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মিয়ানমারের টেলিকম অপারেটররা জানায়, তাদেরকে রাত ১টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান নেটব্লক জানায়, এই আদেশ কার্যকর হওয়ার পর ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল স্বাভাবিক অবস্থার ১৪ শতাংশ।
দেশটির নেপিদোর এক চিকিৎসক জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাতের বেলাতেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘আমি এখনো উদ্বিগ্ন যে তারা রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত বাইরে না যেতে কারফিউ জারি করেছে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই পুলিশ আর সৈনিকরা আমাদের গ্রেপ্তার করছে।’
মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের এই বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রু অভিযোগ করেছেন,দেশটির সামরিক বাহিনী জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।তিনি টুইটারে লিখেছেন, জেনারেলদের মধ্যে মরিয়া ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং তাদেরকে জবাবদিহির আওয়তায় আনতে হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দূতাবাসের যৌথ এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আহ্বান জানাই তারা যেন বিক্ষোভকারীদের প্রতি সংযত আচরণ করেন, যারা তাদের বৈধ সরকারের উৎখাতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন।’
উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে অং সান সু চি, উইন মিন্টসহ দলের সিনিয়র নেতাদের আটক করে জরুরি অবস্থা জারি করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এরপর থেকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আছেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ এবং সেনাপ্রধান মিন অং লাইং।
Leave a Reply