নাসা গ্রুপের কর্ণধার ও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার আদালতকে বলেছেন, ‘আমাকে জামিন দিলে সব টাকাই শোধ করে দেব। আমি পালিয়ে যাব না।’
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারং আইনের মামলায় আজ মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদনের শুনানিতে তিনি এ কথা বলেন।
এদিন আসামিপক্ষের আইনজীবী ওয়ালিউর ইসলাম তুষার তার জামিন চেয়ে শুনানিতে বলেন, ‘আসামি বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তি। গত ৮ মাস ধরে তিনি জেল হাজতে আটক রয়েছে। তিনি একজন গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান। তার অধিনস্থে অনেক কর্মচারীরা কাজ করেন।সার্বিক দিক বিবেচনা করে যে কোনো শর্তে তার জামিনের প্রার্থনা করছি। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই জামিনের বিরোধিতা করা হয়।’
এরপর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা নজরুল ইসলাম আদালতের কাছে কথা বলার অনুমতি চান। আদালত অনুমতি দিলে তিনি বলেন, ‘আমি সব টাকাই শোধ করে দেব। আমাকে জামিন দিয়ে কাজ করার সুযোগ করে দিন। আমি পালিয়ে যাব না।’
তিনি বলেন, ‘আমি ১৯৯০ সালে ১০ লাখ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছি। বর্তমানে ৩০ হাজার কোটি টাকায় এ ব্যবসা নিয়ে গেছি। আমার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রায় ৩ লাখ মানুষ জড়িত। তাদেরকে মাসে ৬০ থেকে ৬৫ কোটি টাকা বেতন দিতে হয়। আমি কারাগারে থেকে বাহির না হলে তারা সবাই কাজ হারাবে। আমার ব্যবসা ধরার কোনো লোকও নেই। আমার দুই ছেলে লন্ডনে পরিবার নিয়ে থাকে। আমার কোম্পানিতে ৮০ থেকে ৯০টি ট্রাক ছিল। এখন ২০টা আছে। আমাকে জামিন দেন। যাতে আমি সব টাকা পরিশোধ করতে পারি। দুদকের যে অভিযোগ তার বিষয়ে আমি পুরোপুরি অবগত নই। আমার পেছনে অনেক কর্মচারীরা আছেন তারা এসব কাজ করতে পারেন। আমাকে জামিন দেন।’
এরপর বিচারক বলেন, জেলহাজতে থেকে টাকা পরিশোধ করেন? ধৈর্য ধরেন। জামিন পাবেন। কিন্তু এর কোনো জনাব দেননি নজরুল ইসলাম। এরপর বিচারক জাকির হোসেন গালিব উভয় পক্ষের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করেন।
৭৮১ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার ৪৫৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযোগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ মামলাটি দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, গত ১ অক্টোবর দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে নাসার নজরুলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আটক রয়েছে।
Leave a Reply