ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের পোড়াবাড়ি থেকে রাজেন্দ্রপুর এলাকাটি এখন জনমনে বেশ ভয়ঙ্কর স্থান। কারণ, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই এলাকাটি হয়ে ওঠে ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য। যে কারণে, গাড়িচালক ও যাত্রীরা ভোগেন আতঙ্কে। কেননা, যেকোনো সময় ডাকাত ও ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা তাদের উপর হামলে পড়তে পারে।
জানা গেছে, পোড়াবাড়ি থেকে রাজেন্দ্রপুর সড়কের দুই পাশে শালবনে অবস্থান নিয়ে কৌশলে পাথর, পাইপ, লোহা ও ইটের টুকরা দিয়ে ঢিল ছুড়ে বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে লুট করে ডাকাত ও ছিনতাইকারী দল। বাঁধা দিলে হামলাসহ হচ্ছে খুন জখমের ঘটনাও।
ল্যাম্পপোস্টে বাতি জ্বলে না। নেই পুলিশের পক্ষ থেকে লাগানো সিসি ক্যামেরাগুলোর অস্তিত্ব। ফলে, সন্ধ্যার পরই মহাসড়কটির ৮ কিলোমিটার অঞ্চল পরিণত হয় ভুতুড়ে সড়কে।
এই এলাকার নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রী ও চালকদের কাছে ‘ঢিল ছোড়া পার্টি’ হিসেবে পরিচিত ডাকাত ও ছিনতাইকারী চক্রগুলোর প্রায়ই মোটরসাইকেল ছিনতাইসহ জড়িত নানা অপরাধে। গত দুমাসে অন্তত ২০টি ডাকাতি ঘটনা ঘটেছে এলাকাটিতে। ডাকাতির ভয়ে এলাকাটিতে বাস থামাতে চান না চালকরা। নানা সমস্যার কথাও জানিয়েছেন তারা।
মিজান নামে ওই এলাকার এক বাসিন্দা জানান, ন্যাশনাল পার্কের রাজেন্দ্রপুর থেকে মাস্টারবাড়ি পর্যন্ত এলাকায় রাতে চলাচল করতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। মাস খানেক আগে এখানে গলাকাটা মরদেহ পাওয়া গেছে। ডাকাতরা ওই লোকের গলাকেটে মোটরসাইকেল নিয়ে গেছে। এখানে নিয়মিত ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। ডাকাতরা গাড়ি থামিয়ে মোটরসাইকেল ছিনতাই করে, যাত্রীদের টাকা পয়সা নিয়ে যায়।
মিজান জানান, তারা দাবি করেন; এলাকায় ফের সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও সড়কে প্রয়োজনীয় লাইটের ব্যবস্থা করে নিরাপত্তা যেন জোরদার করা হয়।
ঢিল ছোড়া পার্টি চক্রের ব্যাপারে জানতে চাইলে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন’র (র্যাব-১) পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘গত এক বছরে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান এলাকা থেকে ৬০ ডাকাত ও ৮ হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে পিস্তলসহ দেশিয় অস্ত্র। র্যাবের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে দুই ডাকাত। সাদা পোশাকের পাশাপাশি স্ব-পোশাকে র্যাবের টহল তো আছেই, পাশাপাশি পুলিশ বাড়ানোসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’
Leave a Reply