ধর্ষণের মামলার বাদী ইডেন কলেজের ছাত্রীকে বিয়ে করে জামিন পেয়েছেন ‘সা রে গা মা পা’ খ্যাত গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদীর সঙ্গে আসামির বিয়ের নিকাহনামা দাখিল করে জামিন প্রার্থনা করেন আইনজীবীরা। সে সময় নোবেলকেও কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
ঢাকার মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহাবুব শুনানি শেষে জামিনের এ আদেশ দেন।
নোবেলের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ মনির উদ্দিন জানিন শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে আপস মীমাংসা হয়ে গেছে। আসামি বাদীনিকে বিয়ে করেছেন। জামিন পেলে বাদীর কোনো আপত্তি নেই। বাদী আদালতে উপস্থিত আছেন।
তখন বিচারক বাদীকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনাদের মধ্যে কি আপস হয়েছে? আসামি জামিন পেলে কি আপনার কোনো আপত্তি আছে? তখন বাদী বলেন, ‘না স্যার। আমার কোনো আপত্তি নেই।’
এরপর বিচারক বলেন, জামিনের দরখাস্তে সেই কথাটা লিখে দেন। পরে বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন আদেশের পর আইনজীবী মোহাম্মদ মনির উদ্দিন জানান, আদালত নোবেলকে এক হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেছেন।
গত ১৮ জুন একই আদালত নোবেলের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নোবেল এবং ওই তরুণীর পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে বিয়ে সম্পন্ন করে কারা কতৃপক্ষকে তা আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেন। পরদিন কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে কারা ফটকে নোবেলের সঙ্গে বাদী সেই নারীর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
এর আগে গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছিলেন ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক ওই শিক্ষার্থী। মামলা দায়েরের পরই নোবেলকে ডেমরা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওইদিনই জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুক্তভোগী ইডেন কলেজের ছাত্রীর সঙ্গে নোবেলের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।গত বছরের ১২ নভেম্বর গায়ক নোবেল তার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ভুক্তভোগীকে ডেমরা থানাধীন তার বাসায় নিয়ে যায় আসামি নোবেল।
এর পর কয়েকজন আসামির সহায়তায় ওই ছাত্রীকে আটকে রাখে এবং তার মোবাইল নিয়ে নেয়। বাদী তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্য আসামিকে মোবাইল ফোন ফেরত দেওয়ার জন্য বললে নোবেল ওই ছাত্রীর ২৬ হাজার টাকার রেডমি ১০ প্রো মোবাইল ফোন ভেঙ্গে ফেলে।
পরে আসামি নোবেল তার বসতঘরে আটক রেখে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ভিডিও তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখে। নোবেলের কথামতো বাসায় না থাকলে তার মোবাইল ফোনে ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন মর্মে বলে জানায়। এজন্য বাদী আসামির ভয়ে কাউকে কোনো কিছু বলার সাহস পাননি।
আসামি নেশাগ্রন্থ অবস্থায় ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ১৯ মে পর্যন্ত বাদীকে মারধর করতেন। আসামি তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনের সহায়তায় বাদীকে সিঁড়ি দিয়ে চুলের মুটি ধরে টানা হেঁচড়া করে অপর একটি কক্ষে আটক করে রাখেন। ওই ঘটনার একটি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর বাদীর মা-বাবা বাদীকে চিনতে পারে। এরপর তার পরিবার পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে।
Leave a Reply