ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার পৌর পাঠাগারটি বন্ধ রয়েছে আট বছর ধরে। ফলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার বই।
দক্ষিণ বর্থপালিগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোলেমান আলী, সাংবাদিক আবু তারেক, সবুজ আহাম্মদসহ অনেক বই প্রেমী মানুষ জানান, পাঠাগারটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে বই পড়ার অভ্যাসই নষ্ট হয়ে গেছে অনেকের। বই পড়ার মতো কোনো পাঠাগার ও পরিবেশ নেই এ উপজেলায়।
পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজুল হক বলেন, অনেক অনুরোধ করে পাঠাগারটি চালু করা হলেও কেন জানি বন্ধ হয়ে গেল। আগের মতো বই পড়ার দিন এখন আর নেই। এক সময় পাঠাগারটি জম-জমাট ছিল। সেখান থেকে বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করা হতো।
পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শহরের পাবলিক ক্লাব চত্বরে ১৯৮৬ সালে উপজেলা পরিষদের তত্ববধানে এ পাঠাগার স্থাপন করা হয়। তৎকালিন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার আবুল হাসনাত মোজাফ্ফর করিম পাঠাগারটির উদ্বোধন করেন।
১৯৮৯ সাল পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের তত্বাবধানে চলে পাঠাগারটি। পৌরসভা স্থাপিত হলে পাঠাগারটি পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আকতারুল ইসলাম নামে একজনকে সহকারী লাইব্রেরিয়ান হিসেবে নিয়োগ দেন। ২০০৬ সালে তার মৃত্যুর পর বন্ধ হয়ে যায় পাঠাগারের দরজা। এখন পাঠাগারের দরজা-জানালা, আসবাব পত্র, আলমিরা ঘুনে ধরেছে, নষ্ট হচ্ছে বই পুস্তক।
এরপর পাঠচক্র নামে একটি সংগঠন পৌর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়ে মাঝখানে পাঠাগারটি আবারো চালু করার ব্যবস্থা করেন। সংস্কার কাজও করা হয়। পৌরসভার কর্তৃপক্ষ একজন কর্মচারীকে প্রেষণে দায়িত্ব দেয় ওই পাঠাগারের তত্ববধায়নের জন্য। কিন্তু তা বেশি দিন টিকেনি।
কর্মচারী সঙ্কট অজুহাতে কয়েক মাসের মধ্যে তাকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ প্রত্যাহার করে পৌরসভায় নিযুক্ত করে। তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয় পাঠাগারের দরজায়। ফলে প্রায় অর্ধ যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে জ্ঞান অর্জনের এ কেন্দ্রটি।
এ বিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সুকুমার রায় বলেন, ‘এই পাঠাগারটি পীরগঞ্জের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি আবার চালু করার জন্য আমি উপজেলা পরিষদ থেকে কিছু করার চেষ্টা করবো। একই সাথে আগামীতে বিভিন্ন মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন করবো।’
নবনির্বাচিত পৌর মেয়র ইকরামুল হক বলেন, পাঠাগারটি পরিচালনা করার মতো কোনো স্টাফ নেই। ডিজিটাল যুগে পাঠাগারে বসে বই পড়ার মতো লোক খুবই কম আছে। দেখি আগামীতে চালু করার উদ্যোগ নেয়া যায় কি না।
Leave a Reply