ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো জঙ্গি সাইফ রহমান ওরফে তোতন ফ্রান্সে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন। যে কারণে দেশটির সরকার নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে তাকে আটক করে। পরে ফ্রান্স থেকে বহিষ্কার করে সাইফ রহমানকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) সদস্যরা গত ১৪ জানুয়ারি তাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করেন। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে জঙ্গিবাদে যুক্ত থাকার নানা তথ্য।
সিটিটিসি সূত্র বলেছে, ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী সাইফ রহমান ২০১৪ সালে ঢাকার ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড স্কুল থেকে এ লেভেল সম্পন্ন করেন। পরে অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে ও লেভেল সম্পন্ন করেন। এরপর ২০১৫ সালে ১৮ বছর বয়সে ফ্রান্সে যান। তিনি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নিয়মিত জিহাদি অপপ্রচার ও কর্মকা-ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
২০২০ সালে ইরাক ও সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেট নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ভ্রমণের পরিকল্পনার করেছিলেন সাইফ রহমান। কিন্তু ফ্রান্সের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে সিরিয়ায় যাওয়ার আগেই আটক করে। পরে ডিটেশন সেন্টারে রাখে। পরবর্তীকালে তাকে ফ্রান্স থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর আগেই ২০১৬ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে ইউনিভার্সিটি অব ডি-সেরগি পন্টাইজে থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন সাইফ রহমান। পড়াশোনা শেষ করে তিনি প্যারিসের ইউনিভার্সিটি অব প্যানথিয়ন আসাসে প্রশাসন শাখায় খ-কালীন চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। ফ্রান্সে আটক হওয়ার আগ পর্যন্ত সাইফ রহমান ইসলামিক স্টেটসহ বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন।
সিটিটিসির উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেছেন, সাইফ রহমানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। ওই মামলা বর্তমানে তদন্তাধীন আছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে আর কোনো বাংলাদেশি নাগরিক জঙ্গিবাদে জড়িয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, ফ্রান্স পুলিশ সাইফ রহমানকে আটকের পর তার ব্যবহৃত ইলেকট্রনিকস ডিভাইস পরীক্ষা করে একাধিক জিহাদি গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগের প্রমাণ পায়। এ ছাড়া বড় ধরনের সহিংস হামলার পরিকল্পনা করার কথাও জানতে পারে।
Leave a Reply