মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতিতে এ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। অন্যদিকে চীন জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে তারা এবং আশা করছে মিয়ানমারে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। খবর বিবিসি ও রয়টার্স।
সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল সোমবার বেইজিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিদিনকার সংবাদ ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, মিয়ানমারে যা ঘটছে তা আমরা লক্ষ্য করছে এবং পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তা আরও বোঝার চেষ্টা করছি। মিয়ানমার আমাদের বন্ধুসুলভ প্রতিবেশী; আমরা আশা করছি মিয়ানমারের সব পক্ষ সংবিধান ও আইনি কাঠামোর অধীনে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।
এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে যা ঘটছে তা আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি। আমরা বিশ্বাস করি, আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত মাসে চীনের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং য়ি মিয়ানমার সফরে গিয়েছিলেন। সেই সফরে তিনি মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এই জেনারেলই মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চিকে বন্দি করে দেশটির ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন।
মিয়ানমারে সু চি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে কিছুদিন থেকেই তিক্ততার খবর আসছিল। এ প্রেক্ষিতে কয়েক দিন আগে সাংবাদিকরা ওয়াং য়ি-কে প্রশ্ন করেন যে- গত মাসে তার সফরের সময় মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের ইঙ্গিত ছিল কিনা বা অভ্যুত্থান হলে চীন কি নিন্দা জানাবে? গতকাল সেই আগের জবাবেরই পুনরুক্তি করেন ওয়াং য়ি।।
আঞ্চলিকভাবে মিয়ানমারের শক্তিশালী ও জোর সমর্থক চীন। মিয়ানমার যখন সেনাশাসনের আওতায় ছিল সেই সময়ও সম্পর্ক দৃঢ় ছিল। পরবর্তী সময় সু চির সঙ্গেও বেইজিংয়ের সম্পর্ক অটুট ছিল। রোহিঙ্গা নির্যাতনের মতো ন্যক্কারজনক ইস্যুতেও মিয়ানমারের পাশে থেকেছে বেইজিং।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে মিয়ানমারের আনুষ্ঠানিকভাবে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু হয়। তার পাঁচ বছর আগে গৃহবন্দি থেকে মুক্তি পান সু চি। ২০১৫ সালে নির্বাচনে বিপুল জয় পায় সু চির দল এনএলডি। তবে সংবিধানে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা বহাল থাকে। এর পর গত বছর নভেম্বরে আগের নির্বাচনের চেয়ে বেশি জনসমর্থন পায় সু চির দল। অন্যদিকে সেনা সমর্থিত দলের সমর্থন আরও কমে যায়। এ পরিস্থিতিতে গতকাল সোমবার সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করল।
Leave a Reply