1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৯ অপরাহ্ন

নিয়ম মানছেন না কাউন্সিলর প্রার্থীরা, প্রশাসনও উদাসীন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২১

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসছে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- দলীয় ব্যানারে প্রচার চালানো, অন্য প্রার্থীর পোস্টার ছেঁড়া ও দলীয় প্রধানের ছবি ব্যবহার করে ব্যানার-পোস্টার বিলি করা। নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাউন্সিলর পদ দল নিরপেক্ষ। এখানে দল মনোনীত বলে প্রচার চালানোর সুযোগ নেই। এরপরও চলছে দলীয় মোড়কে প্রচার। তবে এসব দেখেও উদাসীন নির্বাচন কমিশন।

চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামানের কাছে ১০-১৭ জানুয়ারি মোট সাত দিনে অভিযোগ করা হয়েছে ৩০টি। এর মধ্যে অধিকাংশ অভিযোগ এসেছে কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ও তার পক্ষে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ হয়েছে ৭টি। আর আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিএনপির প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন দুটি। এ ছাড়া সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে ১৯টি অভিযোগ জমা হয়েছে নির্বাচন কার্যালয়ে। আর সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে করা হয়েছে দুটি। নির্বাচনী কর্মকর্তার কাছে আসা অভিযোগ ও তার সততা যাচাইয়ে

নির্বাচনী এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় প্রার্থীরা একসঙ্গে প্রচার চালাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, দল মনোনীত মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে সংরক্ষিত ও সাধারণ কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদেরও একসঙ্গে ছবি ছাপানো ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের বেশিরভাগই দল মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছেন। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও লিফলেটে দল মনোনীত বলেও উল্লেখ করেছেন। আবার অনেক প্রার্থী আরও একধাপ এগিয়ে রয়েছেন। দলীয় প্রধানের ছবিও প্রচারপত্র এবং পোস্টারে জুড়ে দিয়েছেন তারা।

গত ১০ জানুয়ারি বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে চট্টগ্রাম নাগরিক এক্য পরিষদ অভিযোগ করে। সংগঠনটির অভিযোগ, মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী নির্বাচনী আচরণবিধি মানছেন না। পরদিন ১১ জানুয়ারি বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন নিজেই লিখিত অভিযোগ করেন নির্বাচন কার্যালয়ে। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচার চালানোর গাড়ি ভাঙচুর ও পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ কর্মী মো. ফারুক ও মানিকের বিরুদ্ধে। বিএনপির মেয়র প্রার্থী এমন অভিযোগ করেছেন সাতটি।

আর একই দিন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে নগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হাসান মাহমুদ শমসের অভিযোগ করেন নির্বাচন কার্যালয়ে। তিনি অভিযোগে বলেন, বিএনপির কার্যালয় নসিমন ভবনের পাশে নির্বাচনী প্রচারের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে বিএনপির কর্মীরা। একই ব্যক্তি ১৮ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে আরেকটি অভিযোগ করেন। তাতে পশ্চিম বাকলিয়া ডিসি রোডে সন্ধ্যায় নির্বাচনী লিফলেট বিতরণে বাধা, মাইক ও অন্যান্য সরঞ্জাম ভেঙে ফেলার অভিযোগ করেন অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে।

এ ছাড়া ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হাসান মুরাদ বিপ্লব আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী মো. সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে নির্বাচন কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। পোস্টার-ব্যানারে সালাউদ্দিন নিজেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ এসেছে। যেটা নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয়।

১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ শোয়েব খালেদও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. শহীদুল আলমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পোস্টারে দলীয় প্রধানের ছবি ছাপানোর অভিযোগ করেন তিনি। ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবের আহমদ দল সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ দায়ের করেন। নুরুল আমিনও পাল্টা সাবের আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এমন আরও ১৭টি অভিযোগ করা হয়েছে নির্বাচন কার্যালয়ে।

সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী মনোয়ারা বেগম অভিযোগ করেছেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মীরা ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের নোমান কলেজ রোডে গণসংযোগ করার সময় হামলা, টাকাসহ ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনতাই, নারী কর্মীদের শ্লীলতাহানি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। আরেক নারী কাউন্সিলর প্রার্থী আনজুমান আরা বেগম অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী রুমকি সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়, নির্বাচনী এলাকায় রাতের অন্ধকারে সব পোস্টার-ব্যানার কেটে ফেলা এবাং ছিঁড়ে নিয়ে ওই স্থানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার লাগানো হয়েছে।

টিআইবির চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী আমাদের সময়কে বলেন, নির্বাচনী আইন অনুযায়ী কাউন্সিলর প্রার্থীদের দলীয়ভাবে প্রচার চালানোর সুযোগ নেই। এটা নিরপেক্ষ পদ। কিন্তু প্রচারণার শুরু থেকে কাউন্সিলর পদে দল মনোনীত ও দলীয় প্রধানে ছবি ছাপানোর অভিযোগ এলেও ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাচন কমিশন। এতে দিন যত ঘনিয়ে আসছে, আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগও তত বাড়ছে। এটি সুস্থ নির্বাচনের জন্য এসব বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, কাউন্সিলর পদ হচ্ছে দল নিরপেক্ষ। কোনো কাউন্সিলর প্রার্থী দল মনোনীত বলে প্রচার চালাতে পারবেন না। আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে সতর্ক করেছি। তারা দল মনোনীত প্রার্থী দাবি করে প্রচার চালাচ্ছিলেন। অনেককে নোটিশ দিয়েও সতর্ক করা হয়েছে। কাউকে আবার জরিমানাও করা হয়েছে। দল মনোনীত পোস্টার-ব্যানার সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে। না হলে কঠোর হবে নির্বাচন কমিশন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com