বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ অতিমারিতে পরিণত হওয়ার পর চিন্তাশীলরা বলেছেন, কোভিড-উত্তর পৃথিবী কোভিড-পূর্ব পৃথিবীর মতো আর থাকবে না। পৃথিবীজুড়ে আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে বিশাল পরিবর্তন আসবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এটি স্পষ্ট নয় পরিবর্তনটির স্বরূপ কী হবে।
পরিবর্তনের জন্য ধাক্কাটা কোথা থেকে আসবে। সম্প্রতি নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ব্রাজিলের এস্তাদো দে সাও পাওলো পত্রিকাতে একটি বিশাল সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তিনি কিছুটা দার্শনিকভাবে বলতে চেয়েছেন, করোনা আত্মনিধনের পথ ছেড়ে নতুন পৃথিবীর দিকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
করোনা পৃথিবীর দেশে দেশে লাখ লাখ পরিবারের জীবনে বিশাল দুঃখ-দুর্দশা সৃষ্টি করেছে। তা সত্ত্বেও এটিকে নতুন পৃথিবীর দিকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ বলে মনে করেন প্রফেসর ইউনূস। দার্শনিকদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের পার্থক্য হলো, দার্শনিকরা আপাত ক্ষতিকর অবস্থার মধ্যেও উপকারের সম্ভাবনা দেখেন। অপরদিকে দৃশ্যত উপকারী বিষয়ের মধ্যে তারা অনিষ্টতার বিপদ দেখতে পান।
সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে মানুষকে নানা সময়ে নানা রকম বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে। এসব বিপদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-প্রাণঘাতী মহামারি, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিকম্প, বন্যা এবং খরা। মানুষকে এসব বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে। শুধু তাই নয়, সাহসের সঙ্গে লড়তে হয়েছে। প্লেগের মহামারি চতুর্দশ শতকের ইউরোপে বিশাল পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল। ভূমিদাস প্রথাভিত্তিক ইউরোপ দাসত্বমুক্ত শ্রমিক সৃষ্টি করেছিল। কারণ প্লেগ বা ব্ল্যাক ডেথ বহু ভূমিদাসের মৃত্যু ঘটায়।
ফলে উৎপাদনের জন্য শ্রমিকের সরবরাহ ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। শ্রমবাজার সৃষ্টি হওয়ার শর্ত তৈরি করে। বিভিন্ন দেশের সামাজিক পরিবর্তন শুধু মানুষের কথায় সৃষ্টি হয়নি। সামাজিক পরিবর্তনের জন্য বাস্তব পরিস্থিতি বাস্তব অবস্থার মধ্য দিয়েই সূচিত হয়। সুতরাং এটি নিশ্চিত যে, বর্তমান কোভিড-১৯ অতিমারি সমাজদেহে এমন এক অবস্থার সৃষ্টি করবে যার ফলে সামাজিক পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে। বাস্তব অবস্থায় অনেক ধরনের পরিবর্তন এসেছে।
শিক্ষার্থীরা শিক্ষার জন্য স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। বহু শ্রমিক বেকার কিংবা অর্ধবেকার হয়ে গেছে। পৃথিবীর অনেক দেশের অর্থনীতি সংকুচিত হয়ে পড়েছে। সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। কারণ, কোভিড-১৯-এর মতো রোগের ধারণা চিকিৎসকদের মধ্যে ছিল না। এ রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো ওষুধও আবিষ্কার হয়নি। রোগটি যখন জটিল হয়ে ওঠে, তখন আইসিইউ প্রযুক্তির আশ্রয় নিতে হয়। সমস্যা হলো, এ প্রযুক্তির ব্যবহার বিশাল ব্যয়সাধ্য।
শুধু তাই নয়, আইসিইউ থেকে সুস্থতার সংখ্যাও সন্তোষজনক নয়। রোগীর আত্মীয়স্বজনরা আশা করেন তাদের যে আত্মীয়টি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন তিনি ঘরে ফিরতে পারবেন-কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীর ঘরে ফেরা হয় না।
প্রফেসর ইউনূস মনে করেন, কোভিড মহামারি অর্থনীতির চাকাটিকে থামিয়ে দিয়েছে। ফলে মহামারির পূর্ব অবস্থা থেকে পৃথিবী অর্থনৈতিকভাবে অনেক পেছনে পড়ে গেছে। বিভিন্ন দেশের সরকারগুলো চেষ্টা চালাচ্ছে তাদের দেশগুলোকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিতে। প্রফেসর ইউনূস বলছেন ঠিক উল্টো কথা। তিনি পূর্বেকার পৃথিবীতে ফিরে যেতে চান না।
কারণ পূর্বেকার পৃথিবী নিজ ধ্বংসের শর্ত তৈরি করেছিল। এগুলো হচ্ছে- বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, মুষ্টিমেয় লোকের হাতে সম্পদের চরম কেন্দ্রীকরণ এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির মাধ্যমে পৃথিবীর জন্য মানুষকে অপাঙ্ক্তেয় করে তোলা। প্রফেসর ইউনূসের বক্তব্য হলো, আমরা কেন পুরনো পৃথিবী উদ্ধার করতে গিয়ে আত্মনিধনের পথ ধরব? নতুন পৃথিবীর স্বপ্নে বিভোর প্রফেসর ইউনূস চাচ্ছেন এমন একটি নতুন পৃথিবীর পথে অগ্রসর হতে যেখানে তিনটি শূন্য আছে অর্থাৎ ‘শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ’, ‘শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ’, ‘শূন্য বেকারত্ব’।
কোভিড মহামারি এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যার ফলে পুরনো স্টাইলে পথচলা অসম্ভব। এ মরণঘাতী মহামারি সবাইকে নতুন পথে অগ্রসর হতে বাধ্য করবে। পুরনো পথে চলার যে কোনো প্রয়াস নিষ্ফল হয়ে পড়বে।
প্রফেসর ইউনূস আর্থ-সামাজিক অবস্থার কাঠামোগত পুনর্বিন্যাস ছাড়া আর কোনো বিকল্প আছে বলে মনে করেন না। অর্থনীতি শাস্ত্রে কাঠামোগত পরিবর্তনের ধারণা যোগ করেছেন WW Rostow এবং Gerschenkron। Rostow-এর তত্ত্বে সামাজিক বিন্যাসগুলো হলো-সনাতনী সমাজ, সমাজে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পূর্বশর্ত তৈরি হওয়া; সমাজে আকাশে উড্ডয়নের অবস্থা সৃষ্টি হওয়া; সমাজের পরিণত অবস্থায় উত্তরণ হওয়া এবং ব্যাপক গণভোগবাদী সমাজ সৃষ্টি। অন্যদিকে Gerschenkron Rostow-এর উন্নয়ন বিবরণ মেনে নিতে চাননি।
তিনি মনে করেন, সব ধরনের উন্নয়নশীল দেশ সুনির্দিষ্ট ছাঁচে পরিবর্তন হয় না। আধুনিক কাঠামোগত অর্থনীতি বাজারকে কেন্দ্রীয় ভূমিকা প্রদান করেছে। বাজার সম্পদের বণ্টন নির্ধারণ করে। অন্যদিকে রাষ্ট্রকে সহায়কের ভূমিকা পালন করতে হয়। রাষ্ট্র বাহ্য প্রভাবের সমস্যা মোকাবিলা করবে এবং সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবে। প্রফেসর ইউনূস উল্লিখিত চিন্তার বৃত্ত থেকে মুক্ত হয়ে ভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের কথা বলেছেন।
তিনি বলেছেন, বিদ্যমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হলো একটি জ্বলন্ত ঘরের মধ্যে বড় উৎসবের আয়োজন করা। অর্থনীতির ভাষায় এই উৎসব হচ্ছে প্রবৃদ্ধি, প্রযুক্তি এবং উন্নয়নের জয়গান করা। অথচ আমরা মোটেই খেয়াল করছি না যে, এই উৎসব জ্বলন্ত আগুনে ঘি ঢেলে দেওয়ার মতো আত্মঘাতী কাজ।
প্রফেসর ইউনূস মনে করেন, তরুণ সমাজ এটি বুঝতে পেরেছে আর এ কারণে তারা রাজনৈতিক দল থেকে দূরে থাকতে চাইছে। কিশোর-কিশোরীরা ‘ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার’ ব্যানারে একটি নতুন ভবিষ্যতের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। তারা তাদের অভিভাবকদের তাদের ভবিষ্যৎ চুরি করে নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করছে। এ বক্তব্যে টেকসই উন্নয়নের কথাই বলা হয়েছে।
বর্তমান প্রজন্ম যদি এমনভাবে ভোগ করতে চায় যার ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভোগ করার কিছুই থাকবে না, তাহলে এটিকে আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ হরণ করা ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে! সরকারগুলো নিট কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করছে, যেন তাদের কেউ দায়িত্বহীন না বলতে পারে। সবচেয়ে কঠিন বিষয় হলো প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক চিন্তাধারা থেকে বের হয়ে আসা। এ মানসিকতার ফলেই পৃথিবী একটি বিপজ্জনক গ্রহে পরিণত হচ্ছে। পৃথিবীর প্রায় সব সম্পদ উত্তর গোলার্ধের একটি চূড়ায় কেন্দ্রীভূত হয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ গোলার্ধে ঠাসাঠাসি করে পৃথিবীর দরিদ্র ও সহায়হীন মানুষ জড়ো হচ্ছে।
আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানুষকে কাজ থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স কী সেটি একটু বোঝা দরকার। যারা এনড্রয়েড মোবাইলে মেসেজ পাঠান কিংবা কোনো ছোটখাটো প্রবন্ধ পোস্ট করেন তারা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন তাদের লেখার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরের শব্দটি কী হবে সেটি মোবাইলে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এতে ভুলের পরিমাণ কম থাকে। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায়, আপনার মেশিনটি আপনার মনের কথা বুঝল কী করে? এটিই হলো আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স।
বলা যায় প্রাণহীন সত্তার বুদ্ধি। তবে এ প্রাণহীন সত্তার বুদ্ধির স্তর বৈজ্ঞানিক গবেষণায় আরও বহু দূর এগিয়ে গেছে। প্রফেসর ইউনূস মনে করেন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানুষকে কাজ থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। আগামী কয়েক দশকের মধ্যেই মানুষ পৃথিবীর বুকে আবর্জনায় পরিণত হবে; তারা কোনো কাজে আসবে না। বিপদ হলো আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে সরকারগুলোর কোনো সচেতনতা লক্ষ করা যাচ্ছে না।
কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ মোকাবিলায় তৎপর হলে রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা অর্জন করা যায়; কিন্তু আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের বিপদ সম্পর্কে সাধারণ ভোটাররা তেমন কিছু ভাবে না বলে রাজনীতিবিদদের মধ্যে এটি নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা লক্ষ করা যায় না। প্রফেসর ইউনূসের আহ্বান হলো, তিন শূন্যের একটি নতুন পৃথিবী গড়ে তুলতে মানুষকে বিশেষ করে তরুণ সমাজকে এখনই এগিয়ে আসতে হবে। তবে তিনি যেভাবে রাজনীতিবিদদের চিন্তাহীনতার কথা বলেছেন তা খুব সহজে বলা যায় না।
শেষ পর্যন্ত তিন শূন্যের কাজটি রাজনীতিবিদদের উদ্যোগ হতে হবে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের প্রভাব বাড়লে বর্তমান পুঁজিবাদীরা মানুষকে বেকার করে ছাড়বে। বর্তমান পুঁজিবাদকে প্রফেসর টমাস পিকেটি হাইপারক্যাপিটালিজম বলে তার ‘ক্যাপিটাল অ্যান্ড আইডিওলোজি’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। দর্শনে মানুষের প্রকৃতি দুই প্রকার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দার্শনিকদের একাংশ মানুষকে মনে করে লোভী এবং ব্যক্তিগত স্বার্থনির্ভর। এ কারণেই পুঁজিবাদী সমাজে উদ্যোক্তারা সর্বাধিক মুনাফা অর্জন করতে চায়।
অপর দার্শনিকরা মনে করেন, মানুষ মূলত ভালো কাজ করতে চায়। তারা লোভী কিংবা স্বার্থপর নয়। পুঁজিবাদী অর্থনীতি শাস্ত্রের জনক অ্যাডাম স্মিথ মানুষের জন্য মানুষের Empathy-এর কথা বলেছেন। মানুষ চরিত্রগতভাবে নিছক লোভী কিংবা স্বার্থপর নয়। মানুষের এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে ভিত্তি করে প্রফেসর ইউনূস সোশ্যাল বিজনেসের চিন্তা-ভাবনাকে জনপ্রিয় করে তোলার চেষ্টা করেছেন। সোশ্যাল বিজনেসে ব্যক্তিগত মুনাফার কোনো সুযোগ নেই। যদি কোনো মুনাফা হয় তাহলে সেটি পুঁজির সঙ্গে যুক্ত হবে এবং এর ওপর কেউ মুনাফা দাবি করতে পারবে না।
প্রফেসর ইউনূসের মতে, সমষ্টিগত স্বার্থ মানুষের অন্যতম লক্ষ্য হলে আমাদের এমন ব্যবসায়িক কাঠামো তৈরি করতে হবে, যা সমষ্টির বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে উপযুক্ত। যে ব্যবসা সমষ্টির সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে সৃষ্ট, সেখানে ব্যক্তিগত মুনাফার প্রয়োজন নেই। তার যা প্রয়োজন তা হলো, আর্থিকভাবে টেকসই পন্থায় সমষ্টিগত সমস্যাগুলোর সমাধান। প্রফেসর ইউনূসের দাবি, তিনি যে বিশেষ ধরনের ব্যবসা তৈরি করেছেন তার নাম দিয়েছেন সামাজিক ব্যবসা, যে ব্যবসা ব্যক্তিগত মুনাফার অনুসন্ধান না করে সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করবে।
এটি কি পুঁজিবাদ? এ নতুন তত্ত্বে মুনাফার সর্বোচ্চকারী ব্যবসাগুলো শূন্য ব্যক্তিগত মুনাফার ব্যবসাগুলোর পাশাপাশি ব্যবসা করে যাবে। কে কোন ধরনের ব্যবসা করবে তা ব্যক্তির পছন্দের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে। এই নতুন তত্ত্বে উদ্যোক্তা তিনটি বিকল্প থেকে একটি বেছে নেবেন; তিনি মুনাফা সর্বোচ্চকারী ব্যবসায়ে নিয়োজিত হতে পারেন, কিংবা একটি সামাজিক ব্যবসা গড়ে তুলতে পারেন, অথবা এ দু’ধরনের ব্যবসাই সৃষ্টি করতে পারেন। দুই ধরনের ব্যবসাই একই নিয়ন্ত্রক সংস্থার অধীনে, একই বাজারে কাজ করতে পারে।
আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্পর্কে যে সমালোচনা প্রফেসর ইউনূস করেছেন তা একটু ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখা যায়। আধুনিক মার্কসবাদীরা মনে করেন, প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে কাজ করার কালচার বদলে যাবে। এ কথা সত্য যে, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহৃত হলে কর্মঘণ্টা অনেক হ্রাস পাবে। কিন্তু এ জন্য ৮ ঘণ্টা কাজের প্রয়োজন হবে না। প্রফেসর ইউনূস যে অর্থনৈতিক বৈষম্যের কথা বলেছেন তার অপনোদনের জন্য কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেয়া যায়। ৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ৪ ঘণ্টার কর্ম দিবস হতে পারে। অথবা সাপ্তাহিক ছুটি বাড়ানো যেতে পারে।
এর ফলে মানুষ শিল্প-সাহিত্যসহ নানা ধরনের নান্দনিক চর্চায় নিয়োজিত হয়ে জীবনকে আরও অর্থপূর্ণ এবং আনন্দময় করে তুলতে পারে। আরনল্ড টয়েনবির মতে সভ্যতা এগিয়েছে Challenge and response-এর মাধ্যমে। বর্তমান পৃথিবী কোভিডের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। এ চ্যালেঞ্জের পরিণতি হবে দীর্ঘকাল বিস্তৃত। কাজেই রেসপন্সটি কী হবে সেটি নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। অন্যথায় মনুষ্য প্রজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।
ড. মাহবুব উল্লাহ : শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ
Leave a Reply