1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ অপরাহ্ন

আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে নতুন শঙ্কা-উদ্বেগ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০

করোনার ছোবলে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বিশ্বের প্রায় সব দেশের অর্থনীতি। বৈশ্বিক এ মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর সার্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলো তো বটেই, বিশ্বের উন্নত সব দেশও গ্রহণ করে ব্যয়-সংকোচন নীতি; দেশে দেশে বড়-ছোট প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই চলে কর্মী ও শ্রমিক ছাঁটাই। ইতোমধ্যে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে। কাজ হারিয়ে প্রবাসীদের অনেকেই দেশে ফিরে এসেছেন। অন্যদিকে যারা শ্রমের জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিলেন, তারাও যেতে পারছেন না প্রায় প্রতিটি দেশই শ্রমিক আমদানি আপাতত বন্ধ রাখায়। শুধু তাই নয়, যারা দেশে এসেছিলেন কর্মস্থল থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ছুটি নিয়ে, তাদেরও সেসব দেশের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যায় করোনার কারণে। বেশ কয়েক মাস পর মহামারীর সংক্রমণ কিছুটা কমে আসায় আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারও একে একে খুলতে থাকে, সীমিত আকারে হলেও। কিন্তু করোনার নতুন ঢেউয়ে ফের আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় খুবই আতঙ্কে আছে বিশ্ববাসী। অনেক দেশই ফের লকডাউনের কথা ভাবছে; বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক আকাশপথ। সঙ্গত কারণেই সঙ্গীন দশার আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারেও এর ভয়ানক প্রভাব পড়বে। এ নিয়ে শঙ্কা দিন দিন বাড়ছে, বাড়ছে সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগও।

করোনার কারণে সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, কাতার, কুয়েত, কম্বোডিয়া, সিঙ্গাপুর, ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য প্রবাসীকর্মী ইতিপূর্বে দেশে ফিরেছেন। প্রবাসীকল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে গত ৮ মাসে বিশ্বের ২৮টিরও বেশি দেশ থেকে ৩ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৮ জন রেমিট্যান্স যোদ্ধা প্রায় শূন্য হাতে দেশে ফেরত আসতে বাধ্য হয়েছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় কবে নাগাদ তারা বিদেশের কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারবেন; আদৌ যেতে পারবেন কিনা- এসব বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রবাসীকর্মীরা। তা ছাড়া মার্চ পর্যন্ত ভিসা পাওয়া প্রায় ১ লাখ শ্রমিকের অধিকাংশই যেতে পারেননি করোনার কারণে। সূত্রগুলো বলছে, গত মার্চ মাসে ভিসা পেয়ে যেতে পারেননি এমন কর্মীদের জন্য এখন নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই ভিসায় সংশ্লিষ্ট দেশে কাজের উদ্দেশে যাওয়া।

গত ৮ অক্টোবর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটিকে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের কেন্দ্রীয় সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং অ্যাজেন্সিজ (বায়রা) থেকে জানানো হয়, মহামারীর মধ্যে শুধু সৌদি আরব থেকে ফেরত আসা এক-তৃতীয়াংশের বেশি বাংলাদেশি কর্মীকে নানা জটিলতার কারণে ফের সেখানে পাঠানো সম্ভব হবে না। সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বায়রার পক্ষে লিখিত বক্তব্যে বিষয়টি তুলে ধরা হয়।

ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় ২১ ডিসেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সৌদি আরব। সাত দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার শেষ দিনে আরও সাত দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েছে দেশটি। এতে আটকে গেছেন লাখো প্রবাসীকর্মী। সৌদির নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘায়িত হলে প্রায় ৪০ হাজার নতুন ভিসা বাতিল হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে করোনা মহামারীর আগে সৌদিতে প্রথমবারের মতো কাজে যাওয়ার জন্য প্রায় ২৫ হাজার কর্মী ভিসা নিয়েছিলেন। কিন্তু তারা যেতে পারেননি। তাদের নতুন করে ভিসা নিতে বলা হচ্ছে।

জনশক্তি কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে চাকরি নিয়ে বিভিন্ন দেশে যাওয়া কর্মীর সংখ্যা ছিল সাত লাখ। চলতি ২০২০ সালে সেই লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে সাত লাখ। গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে বিদেশে যাওয়া মোট কর্মীর ৮৮ শতাংশ গেছে মধ্যপ্রাচ্যের ১০ দেশে। তাদের মধ্যে ৭৪ শতাংশই গেছে সৌদি আরবে।

বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, করোনা মহামারীর ওপর আমাদের কারও কোনো হাত নেই। করোনা মহামারী শ্রমবাজারের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এখন যারা ভিসা পেয়েছিলেন তারা যেন যেতে পারে, সে জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে। এ ছাড়া নতুন করে যাতে শ্রমবাজার চালু করা যায় সে জন্য কাজ করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com