ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী দাস তন্বীকে ‘বেয়াদবি’ করার অভিযোগে বেদম পিটিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশি ও শামসুন নাহার হল শাখার সাধারণ সম্পাদক জেসমিন শান্তা। গত সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
তন্বী বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তা ও নিশির ‘জুনিয়র’। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বলেন, ‘নিশি ও শান্তা রাত ১২টার দিকে আমাকে ফোন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে যেতে বলেন। পরে আমি সেখানে গেলে তারা আমাকে বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে তারা আমাকে মারতে উদ্ধত হলে আমি সেখান থেকে দৌঁড়ে চলে আসি। তখন তারা আমাকে ধাওয়া করে বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের সামনে ধরে ফেলে উপর্যুপরি মারতে থাকে।’
তন্বী আরও বলেন, ‘আমি যেন না পালাতে পারি সেজন্য তাদের সঙ্গে থাকা দুটি ছেলে আমাকে ঘিরে রাখে। একপর্যায়ে আমি মাটিতে পড়ে গেলে শান্তা আমার পায়ে জোরে চাপ দিয়ে ধরে রাখে। আর নিশি আমাকে এক পা দিয়ে চেপে ধরে এলোপাতাড়ি লাথি মারতে থাকে। আমার গলায় পা দিয়ে চাপ দেওয়ায় আমার গলা দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে। তারা আমার মুখেও খামচে দেয়। রাস্তায় পড়ে গিয়ে আমার হাত-পা ও মাথায় আঘাত লাগে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও দায়িত্বরত পুলিশ আমাকে উদ্ধার করতে আসলে তারা আমাকে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে এক বড় ভাইয়ের সহযোগিতায় হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত আমি শক্ত কোনো কিছু খেতে পারছি না।’
রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করেন। আমি ঊর্ধ্বতন নেতাদেরকে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমি আইনি ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশি বলেন, ‘মেয়েটা বেয়াদবি করেছিল তাই আমরা শাসন করেছি। একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে আমরা সমাধান করে নিয়েছি।’
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা জানতাম তাদের মধ্যে এমন উত্তেজনা ছিল। কিন্তু তারা যে মারামারি করেছে তা জানি না। যদি এমন কিছু করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ব্যাপারে জানতে জেসমিন শান্তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফোন রিসিভ করেননি ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ও।
Leave a Reply