চীনের হুবেই প্রদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে হিমশম খাচ্ছে দেশটির চিকিৎসকেরা। এছাড়া আতঙ্কের খবর, দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা দেয়ার সরঞ্জামাদি ফুরিয়ে আসছে।
ইতিমধ্যে করোনা ভাইরাসে চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে হুবেই প্রদেশেরই ৫২ জন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হুবেই প্রদেশের উহানের আশেপাশের শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করা ও তাদের চিকিৎসা দেয়ার মত সরঞ্জামাদি নেই।
ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উহানে কর্মরত এক নার্স সবাইকে আহ্বান করে বলেন, দয়া করে সবাই মাস্ক, গ্লাস এবং পোশাক ডোনেট করুন।
হুবেই প্রদেশের শিয়াওগান ফার্স্ট পিপল’স হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক আল জাজিরাকে বলেন, কয়েকদিন আগেই আমাদের সুরক্ষিত স্যুট শেষ হয়ে গেছে, এখন আমরা ‘ডিসপোজেবল রেইনকোট’ ব্যবহার করছি।
তিনি আরও বলেছেন, আমাদের সাহায্য করুন, এই কথাটি সবাইকে জানিয়ে দিন। আমরা জানিনা আর কতক্ষণ টিকে থাকতে পারি।
হুবেই’র এক নাগরিক দেশটির যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, দয়া করে আমাদের কথা ভুলে যাবেন না! হুবেইয়ে শুধু উহান শহর না। আমাদের সরঞ্জামাদি দরকার। আমাদের সাহায্য করুন।
হুবেইর আরেক শহর শিয়াংইয়াং যেখানে ৫ লাখ মানুষের বসবাস। সেখানের এক বাসিন্দা বলেন, শিয়াংইয়াংয়ে এমন কোন হাসপাতাল নেই যেখানে এই ভাইরাস নির্ণয় ও ও চিকিৎসা দেয়ার মত ব্যবস্থা আছে।
তবে ওই অঞ্চলের স্বাস্থ্য কমিশনের প্রধান বলেছেন, আমরা স্থানীয় হাসপাতালের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত আছি।
এদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রাণঘাতী নতুন ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেছেন। চীনের নববর্ষের অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে করা এক বিশেষ বৈঠকে শি বলেন, দেশ ‘মারাত্মক পরিস্থিতি’র মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া করোনা ভাইরাস ইতিমধ্যে ১১ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। অস্টেলিয়া, নেপাল, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে বেশ কয়েকজন আক্রান্ত হয়েছে বলে দেশগুলো নিশ্চিত করেছে।
গত ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মত সমস্যা দেখা দেয়। আল জাজিরা, ডেইলি মেইল, বিবিসি।
Leave a Reply