1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৬ অপরাহ্ন

মওলানা ভাসানী ও লোকসংস্কৃতি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২০

মোমেনুল হক: মওলানা ভাসানী তার সুদীর্ঘ জীবনে জনসাধারণের সাথে এত গভীরভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন যে, শুধু বাংলাদেশেই নয়; সারা ভারতেও তার কোনো তুলনা নেই। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের অবিসংবাদিত ‘রাজনৈতিক গুরু’। রাজনীতি, ধর্ম ও সংস্কৃতির সর্বক্ষেত্রেই তিনি মানবিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রেখে তা মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে প্রয়োগ করেছেন। তাই দেখা যাচ্ছে, তার ভক্ত-মুরিদের মধ্যে মওলানা, রাজনৈতিক নেতা, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র-শিক্ষক যেমন ছিলেন, লোকসঙ্গীতশিল্পী, লাঠি খেলোয়াড় এবং যাত্রাপালাগানের শিল্পীরাও ছিলেন।

মওলানা ভাসানী মাঝে মধ্যে জাতীয় ও আঞ্চলিক কৃষক সমাবেশ করতেন। এসব সম্মেলনে প্রায়ই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করত লাঠিখেলা। টাঙ্গাইলের সন্তোষে, বগুড়ার মহীপুরে, পাঁচবিবিতে, নরসিংদীর রায়পুরায় কিংবা শিবপুরে সবখানেই থাকত লাল কাপড় লাগানো শত শত লাঠি। সাথে লাঠি খেলোয়াড় দল। এগুলো আর দেখা যায় না। অনেক দিন পর ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে সন্তোষে গিয়ে দেখি, কয়েকটি লাঠি খেলার দল সন্তোষের সেই বিশাল পুকুরপাড়ে মহড়া দেখাচ্ছেন। একজন তরুণ লাঠি খেলোয়াড়ের সাথে আলোচনা করে তার আফসোসের কথা শুনলাম। তিনি বললেন, আগে শুনেছি যে, হুজুরের সময় প্রায়ই লাঠি খেলোয়াড়ের ডাক পড়ত সন্তোষে ও অন্যান্য জায়গায়- হুজুরের সমাবেশে। সেই লাঠিও এখন আর নেই, লাঠি খেলার সেই উৎসবও নেই।

লাঠিখেলা একটি চিত্তাকর্ষক, উদ্দীপক লোকজ মার্শাল আর্ট। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের আনন্দ মঠের যে বিবিধ আকর্ষণীয় বর্ণনা রয়েছে তা আমি দেখেছি গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে, আমাদের পাশের গ্রামে। এত বছর পরও আমার স্মৃতিতে জীবন্ত হয়ে রয়েছে সেই লাঠিখেলা। এখন আমার সেই স্মৃতির সাথে সাথে মওলানা ভাসানীর নাম ভেসে ওঠে। তিনি এটাকে দেখেছেন একটা উৎসবের উপাদান হিসেবে; তেমনি দেখেছেন জনগণের শক্তি আর সাহসের প্রতীক হিসেবে। তিনি লাঠিকে দেখিয়েছেন জনগণের সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে; তাদের সাহস, শক্তি আর আত্মপ্রত্যয়ের প্রতীক হিসেবে। মওলানা তাদের দেখেননি অশিক্ষিত, সরল বিশ্বাসী, প্রতারিত ভোটার হিসেবে; যেটা এখনকার অনেক রাজনৈতিক নেতা মনে করে থাকেন। তিনি চেয়েছিলেন জনসাধারণ তথা প্রত্যেক ব্যক্তি শিক্ষিত ও সচেতন হবেন, সাহসী হবেন, আত্মশক্তিকে জাগ্রত করবেন, প্রয়োজনে হবেন সংগ্রামী। অধিকার রক্ষার জন্য সদা সতর্ক থাকবেন সবাই।

ভাসানী নেতা হওয়ার জন্য রাজনীতি করেননি। ব্যক্তিগত অভিলাষ পূরণের জন্য রাজনীতি করেননি। তিনি জনগণকে সচেতন করতে, শোষণমুক্ত করতে রাজনীতি করতেন। যেনতেন প্রকারে শুধু তাদের ভোট আদায়ের কোনো উদ্দেশ্য তার কখনো ছিল না। তাই ক্ষমতার ও শোষণের রাজনীতির নেতারা ছলচাতুরীপূর্ণ অভিযোগ করতেন যে, ‘ভাসানীর কথা শুনে কী লাভ, তার পেছনে গিয়ে কী লাভ? তিনি তো ক্ষমতায় যেতে ভয় পান, তাই যেতে চান না।’ আজ এত দিন পর, এত সংগ্রাম আর এতগুলো স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনের পরও মনে হচ্ছে, শুধু ভোট আদায় আর ক্ষমতা দখলের রাজনীতি আমাদের জনগণকে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে শক্তভাবে বেঁধে রেখেছে। আমরা ভুলে গিয়েছি, দীর্ঘ বিরতির পর নিছক একটা নির্বাচন নয়, নাগরিকের নিরন্তর সচেতনতাই ব্যক্তি অধিকারের সর্বোত্তম রক্ষাকবচ। আর সে চেতনার অভাব ঘটলে যে ব্যালটে ভোট দেয়া হয়, সে ব্যালটই আমাদের দিকে ‘বুলেট’ হয়ে ফিরে আসতে পারে। ক্ষমতালোভীদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, ক্ষমতা দখলের আন্দোলন আর প্রচারের চমকে সৃষ্ট বিভ্রান্তির কুহকে পড়ে ভোটারদের হতাশ হতে হয়। তাই নির্লোভ ও মানবতাবাদী নেতৃত্বই মানুষের চেতনা সজীব রাখতে পারে এবং তাদের সঠিক জাতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করতে পারে, গণতন্ত্র ও কল্যাণের পথে চালিত করতে পারে। ভাসানী ছিলেন তেমন এক নির্লোভ নেতা। তিনি জনগণকে ভালোবাসতেন। তাদের ভাব-ভাষার প্রতি তার ছিল আকর্ষণ ও ভালোবাসা। তাই দেখা যায়, দেশের আনাচে-কানাচে অনেক গায়ক, নায়কের স্মৃতিতে তিনি আছেন- তাদের ভালোবাসার, তাদের প্রাণের নেতা হয়ে, গর্বের ব্যক্তি হয়ে।
তিনি জানতেন এ দেশের লোকজ সংস্কৃতি- তা সঙ্গীত, চিত্রকলা, যাত্রাপালা, ক্রীড়া-সংস্কৃতি, অপসংস্কৃতি ও আগ্রাসী সংস্কৃতি থেকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে পারবে। তিনি জানতেন অপসংস্কৃতি ভোগবাদী করে তোলে। আর বিজাতীয় সংস্কৃতি মনে কামনা ও মোহ তৈরি করে- শোষণ, পরাধীনতা ও আগ্রাসনের পথ খুলে দেয়। তাই রাজনীতির সাথে আমাদের লোকজ সংস্কৃতিকেও উৎসাহিত করতেন। কারণ এই সংস্কৃতিতেই নিহিত কৃষকের প্রাণ ও আত্মিক শক্তি। তিনি গ্রামবাংলার গায়ক, নায়ক, খেলোয়াড়দের ভালোবাসতেন। তাদের তার সভায় আহ্বান করতেন। এ কারণেই দেখা যায়, ময়মনসিংহ, সিলেট, পাবনা, রংপুর, যশোর ও কুষ্টিয়ায় অনেক পুরনো লোকশিল্পীর স্মৃতিতে তিনি ছিলেন এক মহান ব্যক্তি।

মো: সহিদুর রহমান ছিলেন এমনই একজন বিখ্যাত ফোকলোরবিশারদ, যিনি বাংলা একাডেমির লোক ঐতিহ্য সংগ্রহশালায় মূল্যবান অবদান রেখেছেন। তার বাবা কুতুবউদ্দিন আহমেদ ছিলেন পুঁথিপাঠক ও লোকগীতি গায়ক। তার জীবনেরও বড় স্মৃতি ছিল, ১৯৫৬ সালে, মাত্র ১৪ বছর বয়সে একটি জারিগানের দল নিয়ে মওলানা ভাসানীর ডাকে ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। নানা জায়গা থেকে সে সম্মেলনে শুধু রাজনীতিক, কবি-সাহিত্যিক, লেখক-বুদ্ধিজীবীরাই যোগ দেননি; লোকসঙ্গীতশিল্পীরাও যোগ দিয়েছিলেন। নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুড়ি উপজেলার নুরপুর বোয়ালিয়া গ্রামের বিখ্যাত গীতিকবি ও লোকসঙ্গীতশিল্পী উকিল মুন্সী (১৮৮৫-১৯৭৮) ভাসানীর সমাবেশে গান করেন। জানা যায়, জাতীয় পরিচিতি পাওয়ার অনেক আগেই শাহ আবদুল করিম পঞ্চাশের দশকে ভাসানীর সভায় গণসঙ্গীত গেয়ে শুনিয়েছিলেন। তার গানে সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে সমাজ সচেতনতা।

এ উপমহাদেশে কোনো নেতা মওলানা ভাসানীর মতো গ্রামাঞ্চলে এত বেশি সভা সমাবেশ করেননি। এত সমিতি ও সংগঠনও হয়তো কেউ তৈরি করেননি। আর গ্রামাঞ্চলের সভায় প্রায়ই তার সমাবেশে স্থানীয় লোকসঙ্গীত শিল্পীরা জাগরণী গান গেয়ে শ্রোতাদের উজ্জীবিত করতেন। অনেক সময় তার কৃষক সম্মেলন কয়েক দিন ধরে চলত। সেখানে সমাবেশের পর জারি ও সারি গান চলত, চলত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা- দৌড়, লাঠিখেলা, এমনকি ঘোড়দৌড়ও চলত কৃষকদের আনন্দ-বিনোদনের জন্য। ভাসানী নিজেও ছিলেন একজন ভালো ঘোড়সওয়ার।

১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে বাংলাদেশের সব হাটবাজারে নির্বাচনী জনসভায় রাজনৈতিক বিষয়ের ওপর স্থানীয় শিল্পীরা গান গেয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতেন। সে সময় ছোট গণসঙ্গীতের বড় শক্তি দেখেছি। তখন সহজে মাইক ভাড়া পাওয়া যেত না। হর্ন বা চোঙ্গা দিয়ে হাটবাজারে অনেক নির্বাচনী গান শোনানো হতো সাধারণ মানুষের ভাষায়, তাদের প্রিয় সুরে। কথাগুলো সহজ সরল, কিন্তু খুবই তীক্ষ্ম, মনে গেঁথে থাকার মতো। তার দু-একটি এখনো মনে বাজে, ‘মরি হায়রে হায় দুঃখ বলি কারে- সোনার পাকিস্তান খাইল জালিম লীগ সরকারে। মরি হায়রে হায়, দুঃখ বলি কারে- ১৬ টাকা সের লবণ খাওয়াইল জালিম সরকারে। মরি হায় …।’ এসব গানে ২১ ফেব্রুয়ারির ভাষাশহীদদের ট্র্যাজেডি থেকে শুরু করে চাল, ডালের মূল্য বৃদ্ধি- অনেক বিষয় থাকত। এ গানের প্রভাবে দেশের মানুষ তদানীন্তন মুসলিম লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ফলে মুসলিম লীগের ভরাডুবি ঘটে সে নির্বাচনে।

বিগত শতাব্দীর ষাটের দশকের প্রথম দিকে ঢাকায় কার্জন হলে ছাত্রদের এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে একবার প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন মওলানা ভাসানী। সেখানে শিল্পীদের গানও তিনি উপভোগ করেন। ভাসানী ছাত্রনেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা কৃষকের ভাষায়, কৃষকের মনের কথা নিয়ে গান তৈরি করো। কারণ তোমাদের এ ভাষা ও ভাব কৃষক বুঝবে না। বেশি করে গণসঙ্গীত গাও, কৃষক শ্রমিকের গান তৈরি করো।’ ভাসানী ছিলেন গণমানুষের, কৃষক-শ্রমিকের ও গ্রামবাংলার নেতা। কিন্তু তিনি যে রাজনীতির ধারা এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতি সৃষ্টি ও লালন করেছিলেন তা এখন নেই। বর্তমান রাজনীতি দেখে মনে হয়, রাজনীতিকরা জন্মগতভাবে দু’ভাগে বিভক্ত- এক ভাগ যাদের জন্ম সিমেন্টের ওপর অর্থাৎ শহরে-নগরে; আর এক ভাগের জন্ম দেশের সোঁদামাটিতে। মনে হয় জন্মের কারণেই শহুরে নেতাদের অনেকেই, ভোগবাদী- যাদের মন সিমেন্টের মতোই শক্ত। আর যাদের জন্ম মাটিতে অর্থাৎ পল্লীর গরিব ঘরে ও নরম মাটিতে, সেই নেতারাই নরম মনের মানুষ, তারাই মানুষের কাছাকাছি। দুঃখের বিষয়, এখন ‘সিমেন্টের ওপর জন্ম নেয়া’ বড় ও ধনী রাজনীতিকদের সময়। তাদের মনে আবহমান বাংলার মানুষ, প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি আকর্ষণ নেই। তারা মেরে ফেলছেন নদী-নালা, ভরাট করে ফেলছেন পুকুর, ডোবা, বিলঝিল, উজাড় করে দিচ্ছেন বৃক্ষরাজি, বনজঙ্গল, কেটে ফেলছে পাহাড়। অথচ তারাই রাজনীতির স্বার্থে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে যোগ দেন মাঝে মধ্যে।

ভাসানী ছিলেন কৃষকের সন্তান, বেড়ে উঠেছেন কৃষকসমাজে, লেখাপড়া শেষ করে ফিরে এসেছেন কৃষকদের মধ্যে, জীবন কাটিয়েছেন তাদের মধ্যে। ভালোবেসেছেন তাদের ভাষা। ভাগ করে নিয়েছেন কৃষকদের সুখ-দুঃখ। ভালোবেসেছেন তাদের ভাব, বিশ্বাস ও সংস্কৃতি। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন, কৃষকের স্বাধীনতাই দেশের স্বাধীনতা এবং কৃষকের শক্তিই দেশের শক্তি। কৃষকের উন্নতিই দেশের উন্নতি। তিনি চেয়েছিলেন সচেতন কৃষকসমাজ। এ লক্ষ্যেই ১৯৫৮ সালে গঠন করেন ‘পূর্ব পাকিস্তান কৃষক সমিতি’- গাইবান্ধার কৃষক সম্মেলনে। কৃষকদের মধ্যে বিভিন্ন পেশাজীবীদেরও সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন : তাঁতী সমিতি, জেলে সমিতি, আখচাষি, পাটচাষি সমিতি ইত্যাদি।

উদ্দেশ্য ছিল উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম আদায়, সরকার প্রদত্ত ঋণ ও বিভিন্ন দান-অনুদানের ন্যায্য ও স্বচ্ছ বণ্টন; কোর্ট-কাচারি, থানা, রাজস্ব অফিসে দুর্নীতি প্রতিরোধ। তিনি জানতেন, শুধু জাতীয়ভাবে জনবিচ্ছিন্ন শহুরে ধনিক শ্রেণীর নেতৃত্বের মাধ্যমে শুধু কেন্দ্রীয়ভাবে আলাপ-আলোচনা ও বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়। তাই সুষম উন্নয়ন, সম্পদের সুষ্ঠু বিতরণের লক্ষ্যে ব্যাপক কৃষক সমাজে স্বতঃস্ফূর্ত স্থানীয় কর্মতৎপরতা ও প্রতিরোধ তৈরি করতে আজীবন সংগ্রাম করেছেন। এর হাতিয়ার হিসেবে তিনি গ্রামাঞ্চলে শিক্ষা সম্প্রসারণ, কৃষকের মুক্তিচেতনাকে সদা জাগরূক রাখার জন্য লোকসঙ্গীত ও লোকসংস্কৃতিকেও বড় হাতিয়ার হিসেবে গণ্য করতেন। এ উদ্দেশ্যে কৃষকের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারে ছিলেন পরম আগ্রহী। স্থাপন করেছিলেন অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেগুলোতে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি এ দেশের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে সঞ্জীবিত করার ওপর জোর দিয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে জমিদারদের শোষণ, ইজারাদারদের শোষণ থেকে কৃষকদের মুক্তির জন্য এ সমিতিকে ঐক্যবদ্ধ ও কর্মতৎপর করে তোলেন। এসব আন্দোলনের সাথে জাতীয় রাজনীতিকে দৃঢ়ভাবে সম্পৃক্ত করেন। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন গড়ে উঠেছিল মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে। পূর্ব পাকিস্তান শ্রমিক ফেডারেশনের তিনি ছিলেন সভাপতি। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি ছিলেন গভীর অনুভূতিসম্পন্ন মানবতাবাদী। তার রাজনীতি ও কর্মকাণ্ড নিবেদিত ছিল গণমানুষের রাজনীতি, বিশ্বাস, শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রতি।
এখন জাতীয় জীবনে অনেক রাজনীতিক আছেন যারা কথা বলেন খুব বেশি, ভাবেন তার চেয়ে কম, অনুভব করেন তারও চেয়ে কম এবং ব্যক্তিস্বার্থের কাজ ছাড়া অন্য কিছু করেন একেবারেই কম। অপর দিকে, ভাসানী অনেক ভাষণ দিয়েছেন, চিন্তা করেছেন তারও চেয়ে বেশি, অনুভব করেছেন আরো বেশি এবং সব মিলিয়ে কাজও করেছেন অনেক। তারই মতো গণমানুষের একজন নেতার আবির্ভাব কামনা করছি।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব, বাংলাদেশ সরকার

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com