সেন্ট কিটসে চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, জশ ইংলিস ও ক্যামেরন গ্রিনে ঝড়ো ব্যাটে তিন উইকেটের জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ফলে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলে দলটি। এ জয়ের ফলে ক্যারিবিয়ান সফরে টানা সাতটি ম্যাচ (তিন টেস্ট ও চার টি-টোয়েন্টি) জিতল অস্ট্রেলিয়া।
ইংলিস মাত্র ২৮ বলে অর্ধশতক হাঁকান এবং ম্যাক্সওয়েল ১৮ বলে ৪৭ রান করে দলকে ২০৫ রানের লক্ষ্য ছুঁতে সাহায্য করেন। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই ম্যাচ শেষ করে দেন ক্যামেরন গ্রিন, যিনি সিরিজে নিজের তৃতীয় অর্ধশতক তুলে নেন এবং অপরাজিত থাকেন ৫৫ রানে।
অ্যারন হার্ডিও সুযোগ কাজে লাগিয়ে ২ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ১৬ বলে করেন ২৩ রান, যা ২০০’র বেশি রান তাড়া করে দ্বিতীয়বারের মতো জয় এনে দেয় অস্ট্রেলিয়াকে।
ম্যাচের শুরুতেই ম্যাক্সওয়েল দুটি অসাধারণ ক্যাচ এবং একটি দুর্দান্ত বাউন্ডারি বাঁচাতে সাহায্য করেন। পরে ব্যাট হাতে মারেন ছয়টি ছক্কা, যা অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত করে।
এই জয়ে অস্ট্রেলিয়া পাচ্ছে প্রথমবারের মতো পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ। সিরিজের শেষ ম্যাচ সোমবার সেন্ট কিটসেই অনুষ্ঠিত হবে।
চতুর্থবারের মতো টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ আবারও নিয়মিতভাবে উইকেট হারালেও শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ২০৫ রান তোলে। শারফেন রাদারফোর্ড (৩১), রভম্যান পাওয়েল (২৮), রোমারিও শেফার্ড (২৮) ও জেসন হোল্ডার (২৬) রান করে দলকে শক্ত ভিত দেন।
প্রথমবারের মতো সিরিজে খেলা জেভিয়ার বার্টলেট ও হার্ডি পাওয়ার প্লে-তে তিনটি উইকেট তুলে নেন। বার্টলেট তার প্রথম ওভারে ব্র্যান্ডন কিং (১৮) ও দ্বিতীয় ওভারে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান শাই হোপ (১০)-কে ফিরিয়ে দেন।
শাই হোপের ক্যাচটি ছিল ম্যাক্সওয়েলের প্রথম চমক। নিচু হয়ে, ডানদিকে ঝাঁপিয়ে বলটি ধরেন তিনি। এরপর হার্ডির বলেই রোস্টন চেজকে এক হাতে, পেছনে ঝুঁকে ক্যাচ নেন — যেটি ছিল একেবারে দুর্দান্ত।
সবচেয়ে নাটকীয় ছিল ম্যাক্সওয়েলের বাউন্ডারি কার্যকরী। শেফার্ডের শক্তিশালী স্ট্রেট পুল শট ক্যাচ হিসেবে নিলেও সীমানা ছুঁয়ে যাওয়ার আগেই তিনি বলটি ক্যামেরন গ্রিনের দিকে ঠেলে দেন, যিনি বলটি ধরে নেন এবং জাম্পার দ্বিতীয় উইকেট পান।
এছাড়া মিচেল ওয়েন দারুণ এক ডাইভ দিয়ে হেটমায়ারকে (১৬) ফিরিয়ে দেন। ভালো ফিল্ডিংয়ের মাধ্যমে আগের ম্যাচগুলোর তুলনায় অনেক উন্নতি করে অস্ট্রেলিয়া।
রভম্যান পাওয়েল এই ম্যাচে ১৯২৫ রান নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন, পেছনে ফেলেন ক্রিস গেইলকে (১৮৯৯)। শীর্ষে রয়েছেন নিকোলাস পুরান (২২৭৫)।
অন্যদিকে শন অ্যাবট ৪ ওভারে ৬১ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন, যা আগের ম্যাচের তুলনায় অনেক ব্যয়বহুল ছিল।
নাথান এলিস ছিলেন সবচেয়ে মিতব্যয়ী, ২১ রান দিয়ে চার ওভার করেন। তার শেষ ওভার ছিল ইনিংসের সবচেয়ে সাশ্রয়ী (২ রান), যা আসে ৫৫ মিনিটের বৃষ্টিবিরতির পর।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই অধিনায়ক মিচেল মার্শ আউট হয়ে যান এলবিডব্লিউ, তবে রিভিউ নিলে বেঁচে যেতে পারতেন। এরপর জশ ইংলিস রোমারিও শেফার্ডকে টানা চারটি বাউন্ডারি মারেন এবং মাত্র ২৮ বলে অর্ধশতক তুলে নেন। ১০টি চার ও একটি ছক্কা মারার পর ঠিক পরের বলেই ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৫১ রানে।
ম্যাক্সওয়েল ওপেনিংয়ে এসে এবার দারুণ ছন্দে খেলেন। টানা পাঁচ বলে চারটি ছক্কা হাঁকিয়ে দ্রুত রান তুললেও ৪৭ রানে থামেন, আউট হন লং অনে ক্যাচ দিয়ে।
মিচেল ওয়েন (২) ও কুপার কনোলি (০) দ্রুত আউট হলে ম্যাচে কিছুটা উত্তেজনা ফেরে। তবে ক্যামেরন গ্রিন ও আরন হার্ডির ৫১ রানের জুটি অস্ট্রেলিয়াকে জয় এনে দেয়।
এ জয়ের ফলে অস্ট্রেলিয়া শেষ ১০টি টি-টোয়েন্টির মধ্যে ৯টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে। আর সিরিজের শেষ ম্যাচে জয় পেলে ইতিহাস গড়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ নিশ্চিত করবে তারা।
Leave a Reply