দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালনে প্রায় অর্ধ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই অভিবাসীদের ডিপোর্ট করার কাজে জোর দিয়ে আসছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আমলের পর এখনই সবচেয়ে বেশি লোককে ডিপোর্ট করা হচ্ছে। তবে এই হার অব্যাহত থাকলে সম্ভবত ওবামা আমলের রেকর্ড ভেঙে ফেলবেন তিনি।
ট্রাম্পের প্রথম ছয় মাসে প্রায় দেড় লাখ লোককে ডিপোর্ট করেছে আইস। অর্থাৎ দিনে ৮০০ জনের বেশি লোককে ডিপোর্ট করা হয়েছে। এই হার অব্যাহত থাকলে এক বছরে তিন লাখের বেশি লোককে ডিপোর্ট করা হতে পারে। ২০১৪ সালের পর এটা হবে সর্বোচ্চ সংখ্যক লোককে ডিপোর্ট করা। ওবামা প্রশাসন ওই সময় তিন লাখ ১৪ হাজার লোককে ডিপোর্ট করেছিল।
উল্লেখ্য, আইস গঠিত হয়েছিল ৯/১১-এর সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে। তারাই অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করার দায়িত্বে রয়েছে।
আইস ২০১২ সালে সর্বোচ্চ ৪,১০,০০০ লোককে বহিষ্কার করেছিল।
তবে ট্রাম্প প্রশাসন বছরে ১০ লাখ লোককে ডিপোর্ট করতে চাচ্ছে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ট্রাম্পের ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্টের’ আওতায় আরো আটককেন্দ্র নির্মাণের জন্য ৪৫ বিলিয়ন ডলার এবং ডিপোর্টেশন প্রক্রিয়ায় গতিশীলতা আনার জন্য ৩০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।
সিবিএসের সাথে এক সাক্ষাতকারে আইস’র ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টড লিয়ন্স বলেছন, নতুন তহবিলের ফলে বছরে ১০ লাখ লোককে ডিপোর্ট করার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা সম্ভব। তিনি বলেন, বর্তমানে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ব্যক্তিদের শনাক্ত এবং গ্রেফতার করার জন্য তার সংস্থা ১০ হাজার এজেন্টকে নিয়োগ করার পরিকল্পনা করছে।
অবশ্য ডিপোর্ট করার কাজটি আরো কয়েকটি সংস্থাও করে থাকে। সরকারি তথ্যে দেখা যায়, ট্রাম্পের ছয় মাসের সময়কালে ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন এক লাখ ১২ হাজার লোককে ডিপোর্ট করেছে। তারা যেসব লোককে ডিপোর্ট করেছে, তাদের অনেকে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত অতিক্রম করেছিল।
এছাড়া হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ১৩ হাজার লোককে সেল্ফ-ডিপোর্টেশনের সাথে জড়িত ছিল। সংস্থাটি যা করেছে তা হলো, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সেল্ফ-ডিপোর্টেশনের বিনিময়ে এক হাজার ডলার অফার করে বলেছে, তারা স্বেচ্ছায় চলে না গেলে তাদেরকে আটক করা হবে, এমনকি তাদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজ করার অভিযোগও আনা হবে।
এদিকে সিবিএসের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের ডিপোর্টেশন কর্মসূচি এখন আর আগের মতো জনপ্রিয় নয়। এখন অনেক আমেরিকানই মনে করছে, আইস বিপজ্জনক অপরাধীদের গ্রেফতার করে ডিপোর্ট করার কাজে মনোযোগী হচ্ছে না।
Leave a Reply