রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ২০ শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে নিজে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া সেই শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরীর পরিচয় জানা গেছে।তিনি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বোন।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পুরনো একটি ভিডিওতে ওই শিক্ষিকা নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন।
ভিডিওতে ওই শিক্ষিকাকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমি তারেক রহমানের বোন। আমার চাচা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।’
মাহরিন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আপন খালাতো ভাই মহিদুর রহমানের মেয়ে। তার বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের চৌধুরী পাড়ায়। শিক্ষিকার স্বামী মনসুর হেলাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তারা মাহরিন চৌধুরীর মরদেহ নিয়ে আজ ভোরে ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছেন। জলঢাকা উপজেলার বোগলাগারী গ্রামের চৌধুরী পাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।
শিক্ষিকার মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার পরিচয় তুলে ধরেন স্বজনরা। সেখানে তুলে ধরা হয়, তিনি কখনোই রাজনৈতিক পরিচয় দিতেন না। বিএনপি চেয়ারপারসন যখন অসুস্থ হতেন, তিনি নিজে খাবার নিয়ে যেতেন। যেখানে বিএনপির বাঘাবাঘা নেতারাও যেতে পারতেন না গ্রেপ্তারের ভয়ে, সেখানে মাহরিন চৌধুরী যেতেন। কারাগার থেকে হাসপাতাল, সবখানে।
আরও জানা গেছে, বাইরের মানুষ তাকে চিনতেন মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষক হিসেবে। কিন্তু আড়ালে তিনি ছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদরের ভাতিজি। মামাতো ভাই মহিদুর রহমান চৌধুরীর (তিনি এম আর চৌধুরী নামে পরিচিত) মেয়ে। প্রেসিডেন্ট জিয়ার মৃত্যুর পর আপন ভাইয়ের মতো তার পরিবার আগলে রাখেন এই মহিদুর রহমান। কথাগুলো অনেকের অজানা।
মিডিয়া ফোকাসের জন্য আজ অনেকেই অনেক কিছু করেন। কিন্তু শিক্ষক মাহরিন কখনোই কোনো প্রচারে আসতেন না।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ২০ শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে গিয়ে নিজে দগ্ধ হন এই শিক্ষিকা। সোমবার দগ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ বার্ন ইউনিটে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে সাতটায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের উদ্ধারের পর নিজেই ঠিকঠাক বের হতে পারেননি মাহরিন চৌধুরী। ঘটনাস্থলে তার শরীরের একটি অংশ দগ্ধ হয়। পরে তাকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
Leave a Reply