বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় একাধিকবার রিমান্ডে নেওয়া সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিরুদ্ধে এবার অস্ত্র আইনে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। লাইসেন্স বাতিল হওয়া একটি আগ্নেয়াস্ত্র জমা না দেওয়ায় দায়ের হওয়া মামলায় আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান তাকে দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সেদিন কারাগার থেকে আনিসুল হককে আদালতে হাজির করে বনানী থানা-পুলিশ। শুনানিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বনানী থানার উপপরিদর্শক ইয়াদুল হক অস্ত্র উদ্ধারে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান। অন্যদিকে, আসামিপক্ষ আবেদন বাতিলের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরলেও রাষ্ট্রপক্ষ জোরালোভাবে রিমান্ড চায়। শুনানি শেষে বিচারক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ৯ জুলাই আনিসুল হককে কারাগার থেকে বনানী থানায় নেওয়া হবে রিমান্ড কার্যকরের জন্য।
আদালত প্রাঙ্গণে বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন বনানী থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মোকতার হোসেন।
রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ২০১৪ সালের ২২ জানুয়ারি বনানী থানাধীন ঠিকানায় আনিসুল হকের নামে একটি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। কিন্তু ২০২৪ সালের ৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-৪ থেকে জানানো হয়, ৫ আগস্ট পর্যন্ত আগ্নেয়াস্ত্রের সব লাইসেন্স স্থগিত এবং ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় অস্ত্র জমা দিতে হবে। অধিকাংশ লাইসেন্সধারী অস্ত্র জমা দিলেও আনিসুল হক বা তাঁর পক্ষে কেউ সেটি জমা দেননি। এমনকি তাঁর ঠিকানায় গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি।
আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স নীতিমালা ২০১৬-এর ১৯(চ) ও ২০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অস্ত্র জমা না দিলে তা অবৈধ গণ্য হয় এবং অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা যেতে পারে। এই বিধান অনুযায়ী বনানী থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে আনিসুল হকের রিমান্ড প্রয়োজন ছিল।
গত বছরের ১৩ আগস্ট রাজধানীর সদরঘাট থেকে পালানোর সময় গ্রেপ্তার হন আনিসুল হক। তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত অর্ধশতাধিক হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে। বিভিন্ন মামলায় তাকে একাধিকবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক।
Leave a Reply