1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ অপরাহ্ন

করোনা মহামারি : শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সেপ্টেম্বরে?

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৫ জুলাই, ২০২০

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রায় চার মাস ধরে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্কুলগুলোয় ষাণ্মাসিক পরীক্ষার সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। এমন অবস্থায় সন্তানদের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন অভিভাবকরা।

চট্টগ্রামের বাসিন্দা ইভা রোজারিওর দুই ছেলের স্কুল গত ১৭ই মার্চ থেকে বন্ধ। ৬ই আগস্টের পর স্কুল খুলবে কিনা, দীর্ঘ সময় ক্লাস না হওয়ায় তার ছেলেরা আবার পরের ক্লাসে উঠতে পারবে কিনা, সেটা নিয়ে তিনি উদ্বেগে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে সরকারকে দ্রুত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মিসেস রোজারিও।

‘স্কুল কবে খুলবে, পরীক্ষা কবে হবে, কিভাবে নেবে, সেটার ব্যাপারে আমাদের কোন ধারণা দেয়া হয়নি। সরকার আমাদেরকে একটা সিদ্ধান্ত জানাক যেন আমরা ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ম মোতাবেক তৈরি করতে পারি। না হলে অনেক দেরী হয়ে যাবে। বাচ্চারা টেনশনে পড়বে।’

এর আগে সব শিক্ষার্থীকে প্রোমোশন দিয়ে পরের শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করার বিষয়টি সামনে এলেও সেখানে মেধার সঠিক মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, একেক শ্রেণিতে মূল্যায়ন পদ্ধতি একেকরকম হওয়ায় গণহারে প্রমোশন দেয়া বেশ জটিল।

গত মাসে এক ভিডিওবার্তায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান যে, চলতি শিক্ষাবর্ষ আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। সেইসঙ্গে পরের শিক্ষাবর্ষ কমিয়ে নয় মাস করার কথা ভাবা হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো চেষ্টা করছে এ বছরের মধ্যেই শিক্ষাবর্ষ শেষ করার। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনা করে যদি ছুটি বাড়ানো হয় তাহলে এই শিক্ষাবর্ষ মার্চ মাস পর্যন্ত বাড়ানো নিয়েও আলোচনা হচ্ছে বলে জানান আন্ত:শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক জিয়াউল হক।

সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে মূলত দুটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে, প্রথমত, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত করা যায় এবং দ্বিতীয়ত মেধার মূল্যায়নের দিকটি যেন আপোষ করতে না হয়। তবে কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত আসতে পারে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। চলতি শিক্ষাবর্ষ বাড়ানো হলে আগে যেমন নভেম্বর ডিসেম্বরে সমাপনী পরীক্ষা হতো সেই পরীক্ষা হবে সামনের বছরের ফেব্রুয়ারি বা মার্চে হবে।

অন্যদিকে সামনের শিক্ষাবর্ষ ১২ মাস থেকে ৯ মাসে নামিয়ে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। উল্লেখ্য একটি শিক্ষাবর্ষে ১৪০ দিনের মতো পড়ানো হয়। বাকিটা ছুটি থাকে। তাই পরের শিক্ষাবর্ষের সমাপনী পরীক্ষা যেন ডিসেম্বরেই নেয়া যায়, সে জন্য সিলেবাস কমানোর পাশাপাশি ঐচ্ছিক ছুটি বাতিল করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।

তবে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হোক কেন, সেটা সময় নিয়ে চূড়ান্ত করে একটি পরিপূর্ণ ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের ওপর জোর দিয়েছেন গণস্বাক্ষরতা অভিযানের পরিচালক এবং সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী। তিনি বলেন,‘দেরি করে হলেও একটা বিকল্প সমাধানের কথা ভাবতে হবে, শিক্ষা কার্যক্রম পুনরুদ্ধারে বিনিয়োগ করতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের উদাহরণটা নেয়া যেতে পারে। তবে মূল লক্ষ্য হবে শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন ঝুঁকির মুখে না পড়ে।’

তার মতে, করোনাভাইরাসে প্রাদুর্ভাবের কারণে মূলত তিনটি ক্ষেত্র ক্ষতির মুখে পড়েছে। প্রথমত শিক্ষা পঞ্জিকা এলোমেলো হয়ে গেছে। সেটাকে একটি ব্যবস্থাপনায় আনতে হবে।

দ্বিতীয়ত, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অর্থাৎ পরীক্ষা কিভাবে নেয়া হবে সেই বিষয়ে যৌথ সিদ্ধান্তে আসতে হবে।
এক্ষেত্রে তিনি সিলেবাস সংকুচিত করে একসাথে কয়েকটি বিষয়ের ওপর পরীক্ষা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষক, অভিভাবক সবার সমন্বয়ে একটি সিদ্ধান্তে আসার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

সবশেষে, স্কুল যখন খোলা হবে তখন কি ধরণের ব্যবস্থাপনার আওতায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে সে বিষয়টিকে নীতিমালায় যুক্ত করার কথা জানান মিসেস চৌধুরী।

শিক্ষাখাতে ক্ষতি পুষিয়ে আনতে নানা পরিকল্পনা ও আলোচনা চললেও কবে নাগাদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে, সেটা এখনও বলা যাচ্ছে না। তবে শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন সেপ্টেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হতে পারে।

বর্তমানে অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি সংসদ টিভিতে ক্লাস চললেও সেটা শতভাগ শিক্ষার্থীর দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। তারমধ্যে বন্যা-পীড়িত এলাকাগুলোয় কোন অবস্থাতেই সম্ভব হচ্ছে না। তাই স্কুল কার্যক্রম কিভাবে একটি শৃঙ্খলার আওতায় আনা যায় সেটার ওপরই গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

এদিকে, করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে এলে এর ১৫ দিন পর এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এই ১৫ দিন শিক্ষার্থীদের নোটিশ দিতে হবে। কম সময়ে, কম সংখ্যক পরীক্ষা নেয়ার বিষয়টি নিয়েও তিনি ভাবছেন বলে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১লা এপ্রিল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে তা স্থগিত করা হয়। এরপর থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com