সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনিরকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
রোববার সাগর-রুনি হত্যা মামলার বাদি নওশের রোমান এ কথা নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘এখন থেকে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাগর-রুনি হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচনে আইনি লড়াই করবেন।’
বিষয়টি নিয়ে রোববার সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, ‘এ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এ পর্যন্ত আদালত থেকে ১১১ বার সময় নিয়েছেন। মামলাটি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) তদন্তে রয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে হত্যার রহস্য এবং জড়িতদের শনাক্তে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর আস্থা প্রকাশ করেছেন বাদিপক্ষের আইনজীবী।’
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘এই মামলায় ধারাবাহিকতায় যে দু’জনের ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট এসেছে তা তদন্তের ভিত্তিতে শনাক্ত করতে হবে। এছাড়া র্যাবের কাছে থাকা এই মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেয়ার জন্য আবেদন করা হবে।’
হত্যাকাণ্ডে বিগত সরকারের সময় গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তি বা ব্যাক্তিবর্গকে আড়াল করতে তদন্তে বাধা ছিল কিনা- বর্তমান পরিস্থিতিতে তদন্তে তাও বের হয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির।
তিনি বলেন, ‘আমরা সাগর-রুনি হত্যার রহস্য উন্মোচনে কাজ শুরু করব। এর অংশ হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তাদের সাথে খুবই দ্রুত মিটিং করব। একইসাথে হত্যার রহস্য উন্মোচনে নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাব। নিম্ন আদালতে মামলাটির পরবর্তী ধার্য তারিখ আগামী ১৫ অক্টোবর।’
এ মামলার তদন্ত নিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিমকোর্টের ইনার গার্ডেনে অধস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে দেয়া এক অভিভাষণে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছিলেন, ‘ফৌজদারি মামলার তদন্ত কাজ যেন দীর্ঘ দিন ঝুলে না থাকে, পুলিশকে সে ব্যাপারে আন্তরিক হতে হবে। আমরা দেখেছি চাঞ্চল্যকর সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত রিপোর্ট প্রদানের জন্য ইতোমধ্যে ১১১ বার সময় নেয়া হয়েছে। এটা কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। তদন্ত কাজেই যদি একাধিক বছর সময় লেগে যায়, সে মামলার বিচারকাজ পরিচালনা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। কেননা সময়ের আবর্তে মামলার অনেক সাক্ষী ও সাক্ষ্য হারিয়ে যায়।’
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় খুন হন। সে সময় পাঁচ বছর বয়সি তাদের একমাত্র ছেলে মাহির সারোয়ার মেঘ ওই বাড়িতে ছিল। হত্যাকাণ্ডে রুনির ভাই নওশের আলী রোমান শেরেবাংলা থানায় মামলা করেন।
মামলা দায়েরের পর শেরেবাংলা নগর থানাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিন দিন পর মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাদের ব্যর্থতার পর মামলাটি র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল।
মামলায় গ্রেফতার আটজনের মধ্যে দু’জন জামিন পেয়েছেন, বাকিরা কারাগারে রয়েছেন।
র্যাবের অতিরিক্ত এসপি খন্দকার মো: শফিকুল আলম মামলার সপ্তম তদন্ত কর্মকর্তা। ২০১৯ সালের ৭ জুলাই তাকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়।
Leave a Reply