আফগানিস্তানের সাথে সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার ধারে পাতা বোমা একটি গাড়ি ভেদ করে বিস্ফোরিত হলে একজন সাবেক সিনেটার ও তার চারজন সহযোগী নিহত হন।
বুধবার পাকিস্তানের পুলিশ এ কথা জানিয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বলা হচ্ছে, সন্দেহভাজন উগ্রবাদীরা সমস্যায় জর্জরিত বাজাউর জেলায় হাতে তৈরি একটি বিষ্ফোরকে বিস্ফোরণ ঘটাতে দূর-নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র ব্যবহার করেন। তাদের লক্ষ্য ছিল পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের সদস্য হিদায়েতুল্লাহ খান, যিনি ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
বেআইনি ঘোষিত তেহরিকে তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং আইএস-খোরাসান নামের ইসলামিক স্টেটের সাথে সম্পৃক্ত গোষ্ঠীর সাথে সংযুক্ত উগ্রবাদীরা এই হামলা চালিয়েছে। তারা প্রায়ই বাজাউর এবং খাইবার পাখতুখোয়া প্রদেশের জেলাগুলোতে নিরাপত্তাবাহিনী এবং আদিবাসী বয়ঃজ্যেষ্ঠদের ও রাজনীতিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
টিটিপি বুধবারের এই হামলায় নিজেদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। তারা জোর দিয়েই বলেছে, তাদের সহিংস অভিযান হচ্ছে পাকিস্তানের নিরাপত্তাবাহিনী ও তাদের জন্য যারা কাজ করছে তাদের লক্ষ্য করেই।
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সন্ত্রাসবিরোধী অনুশীলন
বাজাউরে এই বোমা হামলার ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটল যখন পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর লোকজন ওই অস্থির প্রদেশের অন্য অংশে, ইসলামাবাদ থেকে প্রায় ১০০ মাইল উত্তর পশ্চিমে দু’সপ্তাহব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী যৌথ অনুশীলনে অংশ নিচ্ছিল।
খাইবার পাখতুনখোয়ার পাব্বি শহরে জাতীয় সন্ত্রাসবাদবিরোধী কেন্দ্রে ২৯ জুন এই দ্বি-পক্ষীয় অনুশীলন শুরু হয়। এতে দু’দেশের পদাতিক বাহিনী অংশ নিচ্ছে।
বুধবার পাকিস্তানের সামরিক মিডিয়া শাখা ঘোষণা করে, এই অনুশীলনের লক্ষ্য হচ্ছে সাব-ইউনিট স্তরে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার কৌশল বিনিময় করা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই অনুশীলনের লক্ষ্য হলো সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি নিয়ে অনুশীলন করা ছাড়াও সন্ত্রাসবিরোধী অভিজ্ঞতা সম্পর্কে পরস্পরকে জানানো।’
পাকিস্তানে ‘সন্ত্রাসী’ আক্রমণ প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এতে শত শত বেসামরিক নাগরিক ও সামরিক বাহিনীর লোকজন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ও পুলিশ দেশের সহিংসতায় আক্রান্ত এলাকাগুলোতে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান বাড়িয়ে তুলেছে এবং এতে টিটিপি ও অন্যান্য গোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ত ‘বিদ্রোহীদের’ হত্যা করেছে।
আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান টিটিপিকে অভয় আশ্রয় দিচ্ছে এবং এমনকি তাদের সীমান্তের ওপার থেকে হামলা চালাতে সহযোগিতা করছে বলে ইসলামবাদ অভিযোগ করে।
তালিবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বুধবার আবারো জোর দিয়ে বলেন, তারা কাউকেই পাকিস্তান কিংবা অন্য কোনো দেশকে হুমকি দিতে তাদের দেশের মাটি ব্যবহার করতে দিচ্ছেন না।
কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুজাহিদ বলেন, পাকিস্তান সরকারকে তাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সমস্যার জন্য আফগানিস্তানের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করা বন্ধ করতে হবে।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা
Leave a Reply