ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিমের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বাঁচাতে তদবির করার কথা শোনা যাচ্ছে বলে জানালেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। আজ বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেন, ‘আমি আমার বাবার (হত্যাকাণ্ডের) বিচার নিশ্চিন্তে পাব না। কারণ এই গ্যাস বাবুর (ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু) বিরুদ্ধে অথেনটিক প্রমাণ ডিবির ওখানে আছে, আবার যাকে (ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে, তার বিরুদ্ধেও যথেষ্ঠ প্রমাণ রয়েছে। আমি নিজেও জানি, তাদের কাছে যথেষ্ঠ প্রমাণ রয়েছে। আমি চাই প্রমাণ স্বাপেক্ষে তদন্ত করে, তদন্তের মাধ্যমেই যেন আমার বাবার… আর যারা হত্যা করেছে তাদের যেন সর্বোচ্চ বিচার সুনিশ্চিত করা হয়।’
নিজের বাবার হত্যায় মিন্টু ও বাবুর জড়িত থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই সন্দেহ হচ্ছে ওই গ্যাস বাবু। যে শিমুল ভূঁইয়া, কিলার, যে নিজেই বলেছে ‘‘আমার সঙ্গে গ্যাস বাবুর কথা হয়েছে। টাকার লেনদেনের কথা বলা হয়েছে। আমি ভাঙ্গায় দেখা করেছি।’’ এতেই তো বোঝা যাচ্ছে। আমি সন্দেহ করছি, এটা স্পষ্ট। কারণ কেন একজন কিলার, একজন মাস্টারমাইন্ড এই হত্যাকাণ্ডের যে আমার বাবাকে নিজে হত্যা করেছে, সে নিজে বলেছে, ‘‘টাকার লেনদেন হয়েছে। আমি দেখা করেছি’’।’
এমপি আনারের মেয়ে বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন নিউজে, আমিও দেখেছি যে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছবি আদান-প্রদান করা হয়েছে। আমার কথা হচ্ছে ছবি কেন তারা আদান-প্রদান করল? তারা তো আমাকে স্বান্তনা দিতে এসেছিল, এই গ্যাস বাবু, মিন্টু চাচা স্বান্তনা দিতে এসেছিল। আমি যখন ডিবি অফিসসহ প্রত্যেকটি জায়গায় হাউমাউ (কান্না) করে এসেছি যে আমার বাবা নিখোঁজ, তারা কেন আমাকে জানাল না? এই গ্যাস বাবু কেন তখন আমাকে জানাল না যে, ‘‘তোমার বাবার ছবি পাইছি।’’ তারা জিনিসটাকে হাইড করতে চেয়েছে। টাকা আদান-প্রদান, ছবি দেওয়া হচ্ছে, ফোনে কথা হচ্ছে, ১৭ তারিখে তারা দেখা করছে, টাকা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আবার তিনটি ফোন একদিনে হারিয়ে যাচ্ছে। সবকিছু তো সন্দেহের, এটা তো ক্লিয়ার। এই কথার প্রমাণ লাগবে না, যথেষ্ঠ প্রমাণ এগুলো।’
বিভিন্ন জায়গা থেকে তদবির করা হচ্ছে বলছেন, কারা তদবির করছে- এমন প্রশ্নের জবাবে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, তদবির আসতেই পারে। এখন কোথায় থেকে করা হচ্ছে আমি তা বলতে পারব না। আমি কি করে বলব? তবে আমি জানছি, শুনছি এবং আমাদের এলাকায়ও এগুলো বলাবলি করছে এবং আমি নিজেও শুনছি যে অনেক বড় বড় জায়গা থেকে তদবির করা হচ্ছে।’
বড় বড় জায়গা বলতে কি কোনা মন্ত্রী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো আমি জানি না। আমি বলছি যে তাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে, এই জিনিসটা জানি। কারা তদবির করছে তা তো আমি জানি না। তবে আমি শুনছি, তাকে (মিন্টু) ছাড়ানোর জন্য পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অনেকে চেষ্টা করছে।’
জেলা আওয়ামী লীগের যে সাধারণ সম্পাদক, তাকে আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার বাসা কাছ থেকে নাকি গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কে ওই নেতা জানতে পেরেছেন? জবাবে ডরিন বলেন, ‘না, আমি জানি না। তবে আমি জানি তাকে ধানমন্ডি থেকে আটক করা হয়েছে। এটা আপনাদের নিউজ থেকেই আমি দেখেছি। এর বেশি কিছু জানি না।’
Leave a Reply