গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস মঙ্গলবার দৃঢ়ভাবে জানিয়েছে যে গাজায় থাকা অবশিষ্ট ১৩৪ জন বন্দীকে মুক্তির জন্য যেকোনো চুক্তি করার আগে অবশ্যই স্থায়ী যুদ্ধবিরতি বাস্তায়ন করতে হবে। ফলে পবিত্র রমজান মাসের আগেই অস্ত্রবিরতি করার যে উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করেছিল, তা ভণ্ডুল হয়ে গেছে বলেই মনে হচ্ছে।
সিনিয়র হামাস নেতা ওসামা হামদান বৈরুতে বলেন, ‘গত দু’দিনে ভ্রাতৃপ্রতীম কাতারি ও মিসরীয় মধ্যস্ততাকারীদের কাছে হামাস তাদের প্রস্তাব উত্থাপন করেছে।’
কায়রোতে অচলাবস্থা নিরসনের জন্য মিসর ও কাতারের মধ্যস্ততায় আলোচনা অব্যাহত থাকার প্রেক্ষাপটে তিনি এই মন্তব্য করলেন।
হামদান বলেন, আমরা যুদ্ধবিরতির জন্য আমাদের শর্তাবলীর কথা দৃঢ়ভাবে বলছি : উপত্যকা থেকে ইসরাইলি বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িঘরে ফিরতে দিতে হবে।
হামদান তাদের পক্ষ থেকে চুক্তির শর্তগুলো আবারো বর্ণনা করেন : গাজা যুদ্ধের অবসান, ইসরাইলি সৈন্য প্রত্যাহার, বাস্তুচ্যুতের বাড়িঘরে ফেরার সুযোগ প্রদান।
ইসরাইল জোর দিয়ে বলছে যে গাজায় হামাসকে পুরোপুরি ধ্বংস করার আগে তারা তাদের সামরিক হামলা বন্ধ করবে না।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর ছয় সপ্তাহের একটি অস্ত্রবিরতির চেষ্টা করছে। এতে হামাসের হাতে থাকা ৪০ জন পণবন্দীর মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগার থেকে প্রায় ৪০০ নিরাপত্তা বন্দীকে মুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। ইসরাইল নীতিগতভাবে এই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। কিন্তু হামাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে অটল রয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা এখনো চুক্তির জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-সানি এবং ইসরাইলি মন্ত্রী বেনি গ্যান্টজের সাথে কথা বলে যাচ্ছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার- সবাই অস্ত্রবিরতি না হওয়ার জন্য হামাসকে দায়ী করছেন।
মঙ্গলবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে ওঠার আগে বাইডেন বলেন, ‘চুক্তির বিষয়টি এখন হামাসের হাতে। ইসরাইলিরা সহযোগিতা করছে। এটি একটি যৌক্তিক প্রস্তাব। আমরা কয়েক দিনের মধ্যে জানতে পারব, কী ঘটবে। আমাদের একটি যুদ্ধবিরতির দরকার।’
তবে হামাসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা এনবিসিতে বলেন, চুক্তির জন্য ইসরাইলের ওপর অবশ্যই চাপ প্রয়োগ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। আমেরিকানরা যদি রমজানের আগে কোনো যুদ্ধবিরতি করতে চায়, তবে তাদেরকেই আন্তরিক হতে হবে।
হামাসের আরেক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু চুক্তি চান না। বল এখন আমেরিকার হাতে। তারাই পারে চুক্তির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দিতে।
কায়রো আলোচনার ব্যাপারে ইসরাইল প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।
সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট
Leave a Reply