গাজা উপত্যকায় আরো দুই দিনের জন্য মানবিক যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর একটি চুক্তি হয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র মাজেদ আল-আনসারি সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এছাড়া বিষয়টি ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী সংগঠন হামাসও নিশ্চিত করেছে।
এক বিবৃতিতে হামাস বলছে, একই শর্ত অনুসরণ করে কাতার ও মিসরে মধ্যকার চুক্তির মাধ্যমে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি বাড়ানো হয়েছে।
এর আগে, হামাস চার দিনের যুদ্ধবিরতি চাইলেও ইসরাইল চাইছে প্রতিদিন সিদ্ধান্ত নিতে যে তা বাড়ানো হবে কিনা। শুক্রবার শুরু হওয়া বিরতিতে অন্তত ৩৯ জন পণবন্দীকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিনিময়ে ইসরাইল ১১৭ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে।
মঙ্গলবার ভোরে নির্ধারিত শেষ হওয়ার আগে যুদ্ধবিরতি বাড়ানো হবে কিনা তা নিয়ে কৌতুহল ছিল বিশ্বজুড়ে।
রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ‘এই বিরতিটিকে আরো বাড়ানো আমাদের লক্ষ্য। যেন আমরা আরো বন্দী মুক্তি দেখতে পারি এবং গাজার প্রয়োজনে আরো বেশি মানবিক সহায়তা দিতে পারি।’
তিনি বলেছিলেন, তিনি যতদিন বন্দীরা বেরিয়ে আসছে ততক্ষণ যুদ্ধবিরতি চান।
গাজায় যুদ্ধবিরতি বর্ধিত করার বিষয়ে একমত হওয়ার কাছাকাছি মধ্যস্ততাকারী তিন দেশ মিসর, কাতার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকরা। তবে এখনো যুদ্ধবিরতি কত দিন বর্ধিত করা হবে এবং কোন কোন বন্দীদের মুক্তি দেয়া হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
মিসরের তিনটি নিরাপত্তা সূত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরাইল ও হামাস উভয়েই যুদ্ধবিরতিতে রাজি।
ইসরাইলি সরকারের মুখপাত্র ইলন লেভি জানিয়েছেন, আরো বন্দী মুক্তি পেলে ইসরাইল যুদ্ধবিরতি বাড়াবে।
সোমবার ইলন লেভি বলেন, গাজায় হামাসের কাছে বন্দী আরো ৫০ জনকে মুক্তি দেয়ার বিনিময়ে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহী ইসরাইল।
তিনি আরো বলেন, গাজা উপত্যকায় এখনো ১৮৪ ইসরাইলি আটক রয়েছে।
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে শুক্রবার থেকে চার দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিন ধাপে ১৭৫ বন্দী বিনিময় হয়েছে। মুক্তি পাওয়া বন্দীদের মধ্যে ৩৯ জন হামাস বন্দী ১৩ জনের তিনটি গ্রুপে মুক্তি পেয়েছে। এছাড়া ৩৯ জনের তিনটি গ্রুপে ১১৭ ফিলিস্তিনি, ১৭ থাই, একজন ফিলিপিনো এবং একজন ইসরাইলি-রাশিয়ান মুক্তি পেয়েছে।
হামাস একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে ইসরাইলি কারাগারে মোট ১৫০ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুর বিনিময়ে ৫০ জন নারী ও শিশুকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে যে সোমবার ১১ জনকে মুক্তি দেয়া হবে।
এদিকে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, প্রতিদিন ১০ জন করে আরো বন্দী মুক্তি পেলে যুদ্ধবিরতি বাড়ানো যেতে পারে।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, ৭ অক্টোবর থেকে শুধুমাত্র অধিকৃত পশ্চিম তীরে তিন হাজার ২০০ ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সূত্র : আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল, এএফপি এবং অন্যান্য
Leave a Reply