1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪৮ অপরাহ্ন

নিউইয়র্কে নীলা জেরীনের একক নৃত্যানুষ্ঠান ‘অষ্ট নায়িকা’

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০২২

নৃত্যে নৃত্যে আনন্দ বেদনা। প্রেম আর বেদনার উপাখ্যান। হলভর্তি দর্শক-শ্রোতা। তন্ময় হয়ে সবাই উপভোগ করলেন একটি নির্মল নৃত্যানুষ্ঠান। নীলা জেরীন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা একজন শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী। রবিবার বিকেল চারটায় কুইন্সের ‘কুইন্স থিয়েটারে’ অনুষ্ঠিত হলো দুই ঘণ্টাব্যাপি এই আয়োজন। ‘নীলা ড্যান্স একাডেমি’ প্রতিষ্ঠা করেছেন নীলা জেরীন। আমেরিকার বিখ্যাত কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসা গবেষণায় অর্জন করেছেন পিএইচডি। কিন্তু ভুলে যাননি শিকড়ের সন্ধান। সেই মেধা ও মননের ছাপই রাখলেন নীলা এই নৃত্যায়োজনে।

ভারতীয় আদি নাট্যশাস্ত্র কুচিপুড়ী ধারায় একক ধ্রুপদি নৃত্য পরিবেশন করলেন নীলা। উল্লেখ্য, কুচিপুড়ি এক ধরনের নৃত্যনাট্য। প্রাচীন হিন্দু সংস্কৃত ভাষার নাট্য শাস্ত্র পুঁথিতে এর উল্লেখ রয়েছে। চারণ কবি, উপাসনালয় ও আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের সাথে জড়িত এই নৃত্য ভারতের অন্যান্য প্রধান শাস্ত্রীয় নৃত্যের মত ধর্মীয় শিল্প হিসেবে বিকাশ লাভ করে। দশম শতাব্দীর কপারে খোদাই করার চিত্র থেকে এবং পঞ্চদশ শতাব্দীর পুথি ‘মাচুপাল্লি কাইফাত’ থেকে কুচিপুড়ির অস্তিত্বের প্রমাণাদি পাওয়া যায়। কুচিপুড়ি রীতির বিশ্বাস অদ্বৈত বেদান্ত’র সন্ন্যাসী তীর্থ নারায়ণ যতি ও তার শিষ্য সিদ্ধেন্দ্র যোগি ১৭শ শতাব্দীতে কুচিপুড়ির আধুনিক রূপের প্রবর্তন ও কৌশল প্রণয়ন করেন। কুচিপুড়ি মূলত: হিন্দু দেবতা কৃষ্ণের বৈষ্ণব রীতি হিসেবে বিকাশ লাভ করে। এটি তামিল নাড়–তে প্রাপ্ত ভগবত মেলার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।

পুরো অনুষ্ঠানটির নেপথ্য নির্দেশনায় ছিলেন তারই শাস্ত্রীয় গুরু সাধনা পরানজি। যাঁর কাছে নাচের তালিম নিয়েছেন নীলা প্রায় দুই দশক কাল। অর্কেষ্ট্রা দলে আরও ছিলেন ভোকাল-সামিউক্তা রাঙানাথান, ঢোল-কাবিলান জেগানাথান, বেহালায়-শ্বেতা নারাসিমহান এবং বাঁশিতে-ভিসভেশ্বার নাগারাজান।

কুচিপুরী নৃত্যটির উদ্ভব মূলত: ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে। ‘অষ্ট নায়িকা’- সিরিজটি ধ্রুপদী নৃত্যের অষ্টনায়িকার একটি অন্বেষণ। আট ধরনের নায়িকা যা একজন মহিলার অনেক চিন্তাভাবনা এবং মানসিক অবস্থাকে চিত্রিত করে। রোমান্টিক নায়িকার প্রত্নতাত্ত্বিক রাজ্য হিসাবে, এটি ভারতীয় চিত্রকলা, সাহিত্য, ভাস্কর্যের পাশাপাশি ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য ও সঙ্গীতে থিম হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। নৃত্যশাস্ত্র মতে এই আট নায়িকার নাম হচ্ছে- স্বাধীনাভার্তুকা, বিরহখন্ডিতা, ভাসাকসজ্জিকা, খন্ডিতা, বিপ্রলব্ধা, অভিসারিকা, প্রশিতাভর্তুকা, এবং কলহন্তরিতা।

নীলা জেরিন অত্যন্ত চমৎকারভাবে এই আটটি চরিত্রই ফুটিয়ে তুলেছেন তার নাচে নাচে। অনুষ্ঠানের শেষে নীলা, এই নৃত্যের চুম্বক-পরিচিতি তুলে ধরেন তার দর্শ-শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে। তিনি বলেন, এই নৃত্য অনেক পুরোনো বলেই বিবেচিত হয়। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে, আগামী হাজার বছরেও এই নৃত্যের আবেদন ফুরাবে না। যতদিন মানবপ্রেম থাকবে, যতদিন বিরহের বাঁশরি থাকবে- ততদিনই থেকে যাবে এই নৃত্যের ঝংকার। অনুষ্ঠানে সংস্কৃত ও তেলেগু ভাষায় গান পরিবেশন করেন ভোকাল কণ্ঠশিল্পী। এই আয়োজনটির স্পনসর করেছিল ‘কুইন্স কাউন্সিল অন দ্য আর্টস’। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আমেরিকান উপস্থিত হয়েছিল আদি ধারার এই নৃত্যানুষ্ঠানটি উপভোগ করার জন্য।

উল্লেখ্য, নৃত্যশিল্পী নীলা জেরিন উত্তর আমেরিকায় বিভিন্ন বড় বড় অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করে ইতোমধ্যে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com