1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১৬ অপরাহ্ন

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রথম বঙ্গবন্ধু টানেল : আরেক দফা উৎসবের অপেক্ষা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০২২

কর্ণফুলীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণকাজ জোরেশোরে এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে টানেলের ৮৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময় অর্থাৎ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি ১৩ ভাগ কাজ শেষ করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। পদ্মা সেতুর পর টানেল উদ্বোধনের মাধ্যমে আরেকটি উৎসবের জন্য অপেক্ষায় চট্টগ্রামসহ দেশবাসী। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নদীর তলদেশে এই প্রথম কোনো টানেল নির্মাণ হচ্ছে। এ কারণে এই টানেল নিয়ে আগ্রহেরও শেষ নেই।

এদিকে বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হলে কর্ণফুলীর দুই তীরে বাড়বে কর্মব্যস্ততা। বিশেষ করে কর্ণফুলীর দক্ষিণ তীরে আনোয়ারা, পটিয়া, বাঁশখালী, মহেশখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু টানেলের রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের দায়িত্বও নির্মাণ প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন্স কোম্পানি লিমিটেডকে (সিসিসিসি) দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বঙ্গবন্ধু টানেলের নিরাপত্তা বিবেচনায় দুই পারে আলাদা দুই থানা স্থাপনের প্রস্তাবও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মো. তানভির। বৃহস্পতিবার সিএমপি হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত তার বিদায়ি সভায় বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব পাশ হওয়া সাপেক্ষে দুই থানার জন্য জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে।

বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ যুগান্তরকে বলেন, তারা চাইছেন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে টানেলের কাজ শেষ করতে। ২৪ ঘণ্টা চলছে কর্মযজ্ঞ। টানেলের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো নির্মাণেও কোনো ত্রুটি নেই। বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের জন্য চীন থেকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আনার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।

প্রকল্প দপ্তর সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু টানেলে উচ্চঝুঁকির তিনটি ক্রস প্যাসেজ থাকবে। এর মধ্যে একটির কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। অপর দুটির কাজও এগিয়ে চলেছে। টানেলের অভ্যন্তরে দুই টিউবের মধ্যে প্রথম টিউবের লেনস্ল্যাব স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় টিউবেও লেনস্ল্যাব স্থাপনের কাজ হয়েছে ৮০ শতাংশ। টানেলের অভ্যন্তরে ভেন্টিলেশন, কমিউনিকেশন সিস্টেমসহ অন্যান্য কাজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তথা সরঞ্জামাদি চীনের সাংহাই থেকে আসছে। করোনার কারণে টানেলের বিভিন্ন সরঞ্জাম আনতে বিলম্ব হয়। টানেলের নিরাপত্তার বিষয়টিও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। জলোচ্ছ্বাসেও যাতে কোনোভাবে টানেলের অভ্যন্তরে নোনাপানি প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০ ফুট উচ্চতার একটি রিংরোড নির্মাণ করা হয়েছে। টানেলের সঙ্গে এটি সংযুক্ত থাকবে। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে নির্মিত হয়েছে সিটি আউটার রিংরোড।

টানেলের দক্ষিণ প্রান্তেও ঘূর্ণিঝড় বা উচ্চমাত্রার জলোচ্ছ্বাসেও যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। দুই পাশে সংযোগ সড়কের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই টানেলের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। টানেল টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং ভেতরের ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন। এরপর ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয় টিউবের উদ্বোধন করেন। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম যুগান্তরকে বলেন, ‘পদ্মা সেতুর পর আমি মনে করি কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন দেশের ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক হবে। টানেল চালু হলে এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বহুগুণ বেড়ে যাবে। কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে বিকাশ ঘটবে। চীনের সাংহাইয়ের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ হবে চট্টগ্রামে। তাই টানেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামসহ দেশবাসী আরেকটি উৎসব করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com