1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২২ অপরাহ্ন

রাসূল সা: ও সাহাবিদের দান

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২২ মার্চ, ২০২২

আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সা: এবং তাঁর সাহাবিরা আমাদের প্রেরণার উৎস। প্রিয় নবীজী সারা জীবন মানবতার কল্যাণে নিজের আরাম-আয়েশ ও ভোগবিলাস ত্যাগ করেছেন। আয়েশা রা: বলেন, রাসূল সা: এই দুনিয়া থেকে চলে গেছেন কিন্তু কখনো দুই বেলা পেট ভরে আহার করেননি। ইসলামের ত্রাণকর্তা আবুবকর রা: তার সব সম্পদ ইসলামের জন্য বিলিয়ে দেন। ইসলাম গ্রহণের সময় তার কাছে ৪০ হাজার দিরহাম ছিল। তা তিনি আল্লাহর পথে ওয়াকফ করে দেন।

একটি বর্ণনায় এসেছেÑ আবুবকর রা: ৪০ হাজার দিনার থেকে ১০ হাজার দিনে, ১০ হাজার রাতে, ১০ হাজার গোপনে এবং ১০ হাজার প্রকাশ্যে দান করেছিলেন। খায়বারের বিজিত ভূমি মুজাহিদদের মধ্যে বণ্টন করা হলো। উমর রা: তার অংশটুকু আল্লাহর রাস্তায় ওয়াকফ করে দিলেন। ইসলামের ইতিহাসে এটাই প্রথম ওয়াকফ। তাবুক অভিযানে তিনি অর্ধেক সম্পদ রাসূল সা:-এর হাতে তুলে দেন। উসমান রা: আজীবন স্বীয় মাল ও সহায়সম্পদ মুসলমানদের কল্যাণে ব্যয় করেছিলেন। তাবুক অভিযানে এক-তৃতীয়াংশ সৈন্যের যাবতীয় ব্যয়ভার তিনি নিজ হাতে তুলে নেন। তিনি সাড়ে ৯০০ উট ও ৫০টি ঘোড়া সরববরাহ করেন। খলিফা হওয়ার পরও আলী রা:কে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের সাথে লড়তে হয়েছে। তবে তার অন্তরটি ছিল অত্যন্ত প্রশস্ত। কোনো অভাবীকে তিনি ফিরাতেন না। এ জন্য তাকে অনেক সময় সপরিবারে অভুক্ত থাকতে হয়েছে। তিনি চার দিনার থেকে এক দিনার দিনে এক দিনার রাতে, এক দিনার গোপনে এবং এক দিনার প্রকাশ্যে দান করেছিলেন।

যুবাইর ইবনে আওয়াম রা:-এর এক হাজার দাস ছিল। তিনি এগুলোর ভাড়া খাটিয়ে সবই বিলিয়ে দিতেন। তাবুক অভিযানে আবদুর রহমান ইবনে আউফ রা: আট হাজার দিনার রাসূলুল্লাহর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। ওমর রা: উপঢৌকন হিসেবে ৪০০ দিনার ও চার হাজার দিরহাম আবু ওবায়দার কাছে পাঠালে তিনি সব অর্থই সৈনিকদের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর খাদিজা রা: তার সব সম্পদ তাবলিগে দ্বীনের লক্ষ্যে ওয়াক্ফ করে দেন। পাপিষ্ঠ লোকেরা কিয়ামতের দিন দোজখ থেকে মুক্তির জন্য তাদের পরমপ্রিয় স্বজন, এমনকি স্ত্রী, পুত্র, পরিবার-পরিজন, ভাই-বন্ধু সবাইকে, সম্ভব হলে সমগ্র বিশ্ববাসীকেও মুক্তিপণে দিয়ে দিতে কুণ্ঠাবোধ করবে না। কিন্তু সে দিন কোনো মুক্তিপণই কোনো কাজে আসবে না।

মুসলিম শরিফের একটি হাদিসে এসেছেÑ একজন মানুষ যখন মারা যায় তখন তার তিনটি আমল ছাড়া অন্য সব আমল বন্ধ হয়ে যায়Ñ ১. সাদকায়ে জারিয়া; ২. উপকারী জ্ঞান ও ৩. সৎ সন্তান যে তার মা-বাবার জন্য দোয়া করে। যে মক্কাবাসী রাসূলুল্লাহকে মদিনায়ও শান্তিতে থাকতে দেয়নি সেই মক্কাবাসীর দুর্ভিক্ষের সময় তিনি তাদের জন্য খাদ্যশস্য ও ৫০০ স্বর্ণমুদ্রা নগদ পাঠিয়েছিলেন। মানবতার মহান এই আদর্শ তাঁর মৃত্যুর সময় দিনার, দিরহাম এ-ও গোলাম-বাঁদী কিছুই রেখে যাননি বরং রেখে গেছেন শুধু একটি সাদা খচ্চর। এ খচ্চরটিতে তিনি আরোহণ করতেন। আর রেখে গেছেন তাঁর যুদ্ধাস্ত্র এবং একখণ্ড জমি। সে জমিও তিনি জীবদ্দশায় মুসাফিরদের জন্য সাদকা হিসেবে ওয়াকফ করে দিয়েছিলেন।’ (সহিহ আল-বুখারি)

যুগে যুগে ইসলাম ও মানবতার কল্যাণে নবী-রাসূলরা থেকে আরম্ভ করে আজ পর্যন্ত দানবীর মুসলমানরা সর্বোচ্চ আর্থিক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাই তো আল্লাহর নবী দাউদ আ: উপার্জিত সম্পদকে তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য রাখতেন, এক ভাগ গরিব-দুঃখীদের মধ্যে দান করতেন এবং অবশিষ্ট এক ভাগ ভবিষ্যতে দান করার জন্য রেখে দিতেন। মহান আল্লাহ সূরা জারিয়ার ১৯ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘ধনীদের সম্পদে রয়েছে প্রার্থনাকারী ও বঞ্চিতদের অধিকার’। তাই আমাদের সমাজে যারা বিত্তশালী আছেন তাদের কর্তব্য সঠিকভাবে জাকাত প্রদানপূর্বক সমাজের অসহায় জনগোষ্ঠীর সাহায্যে এগিয়ে আসা।

আল্লাহর কাছে গ্রহণীয় দানের শর্ত তিনটিÑ পবিত্র ও হালাল ধনসম্পদ থেকে ব্যয় করতে হবে। সৎ উদ্দেশ্য ও সচ্চরিত্রবান হতে হবে। যাকে দেয়া হবে তাকে তা গ্রহণ করার উপযুক্ত হতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে আমাদের পবিত্র সম্পদ থেকে আল্লাহর পথে ব্যয় করার তাওফিক দান করুন।

প্রভাষক : জলদী হোসাইনিয়া কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদরাসা, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com