চট্টগ্রামে ভূমি অধিগ্রহণের আলোচিত দুই কোটি ৮৬ লাখ টাকা জালিয়াতি করে হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় জড়িত চক্রের মূলহোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই ঘটনায় জোহরা বেগম
, বাঁশখালী এসি ল্যান্ডের চেইনম্যান নেজামুল করিম, সার্ভেয়ার খাজাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু নিজাম উদ্দিন খান ও রুবেল সহ এই চক্রের অন্য সদস্যরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
২০২১ সালের ৭ই নভেম্বর কক্সবাজারের উখিয়া থেকে পুলিশ জোহুরাকে গ্রেপ্তার করে। তার দুইদিন পরে কোর্ট বিল্ডিংয়ের নিচে হকার মার্কেট থেকে এলএ শাখার সার্ভেয়ার খাজা উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের পক্ষে আনোয়ার হোসেন নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলা রুজু করেন। কিন্তু তিন মাস গত হলেও মামলার তদন্তে আশাব্যঞ্জক কোনো অগ্রগতি নেই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোমিনুল হাসান জানান, মামলার আসামি জোহুরা, নেজামুল, খাজা কারাগারে রয়েছেন।
আদালত থেকে মামলা তদন্তের অনুমতি আসেনি এখনো। তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
জানা যায়, অধিগ্রহণকৃত ভূমির মূল মালিক আব্দুল কালাম শামসুদ্দিন ও আবু হেনা মোস্তফার জাল পাওয়ার অব অ্যাটর্নি তৈরি করে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ছক আঁকে সংঘবদ্ধ চক্রটি। ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার চেক পাস করিয়ে নেয় চট্টগ্রামের এলএ শাখা থেকে। জেলা প্রশাসনের অধিগ্রহণ শাখার ইস্যুকৃত চেকটি নগরীর জুবলী রোডস্থ যমুনা ব্যাংকে জমা দিতে যান জোহরা বেগম ও জনৈক নিজাম উদ্দিন খান। ব্যাংক ম্যানেজারের সন্দেহের কারণে চেকটি জমা করতে ব্যর্থ হয় চক্রটি।
যমুনা ব্যাংক জুবলী রোড শাখার ব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী জানান, জোহরা বেগমের অ্যাকাউন্টটি নতুন করা। তার হিসাবের বিপরীতে ঠিকানা ভেরিফাই করা ছিল না। সে কারণে আমরা শুরুতে চেকটি জমা করতে সময় নিয়েছিলাম। কিন্তু এর মধ্যে নিজাম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি জোহরাকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাংকে এসে চেকটি জমা নেয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকেন। চেক জমা না করলে টেলিভিশনে নিউজ করে দেয়ার হুমকি দিতে থাকে এশিয়ান টেলিভিশনের সাংবাদিক পরিচয় দেয়া নিজাম উদ্দিন খান। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক নগরীর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। বিষয়টি চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককেও জানানো হয়। জেলা প্রশাসক চেকটি জমা নেয়ার বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেন। পরবর্তীতে প্রতিবেদকের হাতে আসা মামলার টাইপ করা প্রথম এজাহারটি পর্যালোচনা করে নিজাম উদ্দিনের নাম দেখা গেছে। কিন্তু পরবর্তীতে তার নাম বাদ দিয়ে সংশোধিত এজাহারের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয় কোতোয়ালি থানায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে এজাহার দেয়া হয়েছে সেটির ভিত্তিতেই মামলা দায়ের করা হয়েছে। কারও নাম বাদ পড়লে সেটি তদন্তসাপেক্ষে যুক্ত করা হবে।
সিসিটিভির ফুটেজে নিজাম উদ্দিনকে জোহরার সঙ্গে ব্যাংকে প্রবেশ ও বের হওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। মামলার তদন্তে সেটি বের হয়ে আসবে।
Leave a Reply