রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাফফাত নায়েম নাফি নামে এক শিক্ষার্থীকে হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্র শিবিরের বিরুদ্ধে। আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত প্রায় সোয়া ১২টার দিকে নগরীর বিনোদপুর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান উল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর জানান, ‘আহত শিক্ষার্থীর সঙ্গে হামলাকারীদের ‘নামাজ পড়া’ নিয়ে ঝামেলা ছিল। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, হামলাকারীরা ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’
আহত সাফফাত নায়েম নাফি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের (২০১৯-২০ সেশন) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
সাফফাত নায়েম নাফির একাধিক সহপাঠী জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর সংলগ্ন আমজাদের মোড় এলাকায় ‘এনার ছাত্রবাসে’ পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শরীফ নামের এক ছাত্র থাকত। একই মেসে আরও কিছু অ্যাডমিশন টেস্ট দেবে এরকম ছেলেও ছিল। শরিফ নামাজ পড়তো না। এজন্য অ্যাডমিশন টেস্টের এক শিক্ষার্থী শরিফকে নিয়মিত বকাবকি করে ও নানানভাবে বিরক্তও করে। এনিয়ে বুধবার শরিফও তাকে গালিগালাজ করে। পরে অ্যাডমিশন টেস্টের এক ছেলে শরিফকে হুমকি দেয় এবং রাতের মধ্যেই দেখে নেবে বলে জানায়।
শরিফ ভয় পেয়ে তার বিভাগের ছেলেদের বিষয়টি জানায়। সেখানে নাফিসহ বিভাগের ছেলেরা বিষয়টি মীমাংসা করতে গেলে অ্যাডমিশন টেস্টের ওই ছেলে কাকে যেন ফোন দেয়। একটু পরে ৪-৫ জন ছেলে মোটরসাইকেলে করে আসে এবং মেসে প্রবেশ করে। তাদের মধ্যে হালকা তর্ক-বিতর্ক হয়। একপর্যায়ে বাইরের ওই ছেলেরা চাকু বের করার সাথে সাথে শরিফসহ সবাই পালিয়ে গেলেও নাফি পালাতে পারেনি। নাফিকেই তখন সবাই মিলে ধরে ও একজন চাকু মারতে থাকে। নাফি খুব চিৎকার করতে থাকলে একপর্যায়ে নাফিকে মাটিতে ফেলে দিয়ে তারা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর অবস্থায় নাফিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেন তার সহপাঠীরা।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা আহত শিক্ষার্থীর সহপাঠী ইবরাহীম জানান, ঘটনাটি খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত। ছাত্রাবাসে হওয়া সমস্যার সমাধানের জন্য গতকাল রাতে এম আর ছাত্রাবাসে আমরা যাই। সমস্যার প্রায় সমাধান করে গেটের বাইরে আসলে হঠাৎ কিছু লোক এসে গেট লাগা বলে অতর্কিতভাবে আক্রমণ চালায়। ফলে আমরা ছত্রভঙ্গ হয় পড়ি। সেখানে আমাদের সহপাঠী নাফি আহত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম জানান, ‘আমি আহত নাফিকে দেখতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে ডাক্তার সঙ্গে কথা বলেছি। নাফির নার্ভের প্রবলেম হচ্ছে। অতি দ্রুত তাকে ঢাকায় পাঠানোর জন্য ডাক্তার বলেছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে এখনই তাকে ঢাকায় পাঠাচ্ছি।’
Leave a Reply