কর্মব্যস্ত জীবনে শখ পূরণ করা কঠিন হলেও কথায় আছে শখের দাম লাখ টাকা। আর দশজন মানুষের চেয়ে তারকাদের শখের দাম একটু বেশি! আমাদের আজকের আয়োজন তারকাদের শখ নিয়ে। লিখেছেন- ফয়সাল আহমেদ
সারা যাকের
সারাদিন অফিস, অভিনয় আর মঞ্চ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সারা যাকের। কিন্তু ঘরে ফিরলে নিজের একান্ত সময়গুলো রঙিন হয়ে ওঠে নিজের প্রিয় পোষ্য বাঘু, মোটু ও লাম্বুকে নিয়ে। পরম যত্নে এদের হাত বুলিয়ে দেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই প্রাণী পোষার শখ ছিল সারা যাকেরের। সব সময় একাধিক পোষ্য নিয়ে সময় কাটাতে পছন্দ করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৮-১৯ বছর থেকেই আমি পোষা প্রাণীর ভক্ত। কোথাও বিড়ালছানা-কুকুরছানা দেখলেই আমার আদর করতে ইচ্ছে করে। অনেকে বলে থাকেন, পোষ্য রাখার নানা সমস্যা, কিন্তু তারা আমার কাছে পরিবারের অন্যান্য সদস্যের মতোই। আমি তাদের আলাদা করে দেখি না।’
সারা যাকের জানান, পোষ্যদের নিয়মিত সময় দিতে হয়। তাদের চিকিৎসার ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হয়। তা ছাড়া তাদের সময়মতো খাবার দেওয়া, পরিষ্কার করানো নিয়েও ব্যস্ত থাকতে হয়। অবসরে তাদের সঙ্গে গল্প করেও সময় কাটান তিনি। আবার দেশের বাইরে গেলে তাদের জন্য নিয়ে আসেন পছন্দসই উপহার। বিড়ালের পাশাপাশি খরগোশ, কুকুর ও পাখি পুষতেও পছন্দ করেন তিনি। এ মুহূর্তে তার বাড়িতে আছে বিভিন্ন প্রজাতির নানা পোষ্যপ্রাণী।
আফজাল হোসেন
আর্ট কলেজে পড়ার সূত্র ধরেই আঁকাআঁকির চর্চা অভিনেতা আফজাল হোসেনের। রঙতুলির জাদুর স্পর্শে একান্ত আপন ভুবনে প্রায়ই হারিয়ে যান। শুধু ছবি আঁকা নয়, লেখালেখি, ছবি তোলা, রান্না করাও তার অন্যতম শখ। ছবি আঁকার প্রতি আগ্রহ থেকেই তিনি ভর্তি হন ঢাকার আর্ট কলেজে। কিন্তু আর্ট কলেজে পড়ার সময় থেকেই মাথায় চাপে থিয়েটারের ভূত।
তারপর থেকে ধীরে ধীরে অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়া। কিন্তু এক সময় ছবি আঁকাকেই পেশা হিসেবে নেবেন বলে ভাবতেন তিনি। এ মুহূর্তে নির্মাণ, প্রযোজনা সংস্থা, নিজের অভিনয়, উপস্থাপনা ও লেখালেখির কাজে তুমুল ব্যস্ত এ অভিনেতা। শত ব্যস্ততার মাঝেও তার শিল্পীমন পড়ে থাকে সাদা শূন্য ক্যানভাসে। যখনই সময় পান, ছবি আঁকেন, নিজের ভাবনাকে বেঁধে রাখেন নানা রঙের ফ্রেমে।
তিনি বলেন, ‘প্রদর্শনীর জন্য নয়, শিল্পীর তাগিদ থেকেই এ ছবিগুলো আঁকা।’ নিজের আঁকার ঘরে অভিনেতা আফজাল হোসেন এক সম্পূর্ণ অন্য মানুষ। নিজের স্টুডিও নিজেই পরিষ্কার করেন, হাতের কাছেই রাখেন রঙ, তুলি আর কাগজ।
আফজাল হোসেন বলেন, ‘জীবনের এ পর্যায়ে এসে আলাদা শখ যাপন করার অবসর খুব একটা নেই। যা কিছু শখ ছিল, তার সবকিছু নিয়েই আমার বেঁচে থাকা। এখনো ছবি আঁকতে বসলে আমার সময় মনে থাকে না, একটা ছবি এঁকে চলি। আবার কখনোবা দূরে কোথাও ছবি তুলতে যাই, সংসারের নানা কাজেও ব্যস্ত থাকতে হয়। এর মধ্যে শখ বলতে আমি মগ্ন থাকা সময়ের কথাই বুঝি। ছবি আঁকা ছাড়া সে মগ্নতা অন্য কোথাও পাই না।’
পরীমনি
পরীমনির পোষ্য রাখার শখ আগে থেকেই। কুকুর তার ভীষণ পছন্দ। পরী জানান, ছোটবেলা থেকেই পোষা প্রাণী রাখা তার অন্যতম শখ। তবে শখের বসে প্রাণী পোষা কঠিন বলেও জানান তিনি। কারণ পোষা প্রাণীর প্রতি দায়িত্বশীল না হয়ে পোষা প্রাণী রাখা যায় না। তবে এ দায়িত্ব পালনে তার কোনো কষ্ট নেই। বরং এ নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় তিনি খুঁজে পান অনাবিল আনন্দ।
মাহিয়া মাহি
একসময় অভিনয় করা তার অন্যতম শখ থাকলেও, বর্তমানে এটি তার পেশা। তাই বলে শখ একেবারেই নেই, এমন নয়। মাহিয়া মাহি জানান, স্করপিয়ন হাট শিরোনামে একটি অনলাইন-নির্ভর শপ শুরু করেছেন তিনি। এ শপের অধিকাংশ শৌখিন পণ্যের ডিজাইন করেন মাহি নিজে।
মাহি বলেন, ‘আমি আলো নিয়ে খেলতে পছন্দ করি। তাই বিভিন্ন ধরনের ল্যাম্পশেড, মোমবাতি আর ঝাড়বাতি তৈরি করছি। এ ছাড়া হ্যান্ডব্যাগ তৈরির কাজও আমি স্বাচ্ছন্দ্যে করতে পারি।’ নানা ধরনের ল্যাম্পশেড তৈরির ক্ষেত্রে মাহি ব্যবহার করেন কাঠ, সুতা, দড়ি, চীনামাটির অব্যবহৃত থালাবাটি, জিন্সের কাপড়সহ অনেক কিছু।
মাহি বলেন, ‘অভিনয় যতটা মনোযোগ দিয়ে করি, শখের কাজগুলো আমি ততটুকুই যত্ন নিয়ে করি। কারণ এ কাজগুলো দেখেই দর্শক আমার রুচিবোধ সম্পর্কে একটা ধারণা পাবে। তবে একই রকম কাজ আমার খুব বেশি করতে ইচ্ছে করে না। যে কারণে নতুন নতুন ডিজাইন নিয়ে কাজ করতে বেশি ভালো লাগে।’
ভাবনা
ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ভাবনার শখের শেষ নেই! তবে জুতার প্রতি তার আলাদা আকর্ষণ রয়েছে। এ ছাড়া তিনি নানা রকমের মূর্তি সংগ্রহ করেন। বিভিন্ন রকমের শোপিস সংগ্রহও তার শখের মধ্য অন্যতম।
সজল
অভিনেতা সজলের শখ হচ্ছে ক্যাসেট সংগ্রহ করা। তার ঘরের একটি বড় জায়গাজুড়ে রয়েছে বিভিন্ন গানের ক্যাসেট।
সজল এ প্রসঙ্গে বলেন, আমি ছাত্র অবস্থা থেকে প্রচুর গান শুনতাম। ক্যাসেট সংগ্রহের প্রতি আমার একটি দুর্বলতা রয়েছে। এখন তো আর ক্যাসেটের যুগ নেই। তবে কোথাও কারও কাছে ক্যাসেট পেলে আমি চেয়ে নিয়ে নেই।
তানজিন তিশা
ছোটপর্দার বড় মুখ তানজিন তিশা। জনপ্রিয় এ অভিনেত্রীকে মাঝে মাঝেই দেখা যায় নানা দেশের নানা স্থান থেকে সেলফি আপলোড দিতে। ভ্রমণ করাই তার শখ। তিশা বলেন, ‘আমি সময় পেলেই ট্রাভেলিংয়ে বের হই। দেশ ও দেশের বাইরের দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে আমার ভালো লাগে।
Leave a Reply