বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ২৮ জানুয়ারি। এই নির্বাচন ঘিরে বিতর্ক যেন কমছেই না। দিন যত গড়াচ্ছে, তা যেন আরও প্রকাশ্য হচ্ছে। সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে মিশা-জায়েদ প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচিত রোজিনা এরই মধ্যে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন। এবার এই প্যানেলের সহ-সভাপতি থেকে নির্বাচিত চিত্রনায়ক রুবেলও এবার অব্যাহতি নিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
পদত্যাগের কারণ হিসেবে নিজের ব্যস্ততাকে তুলে ধরেছেন এই অ্যাকশন হিরো। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন, নিজের এই জায়গায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রিয়াজকে দেখতে চান তিনি। আগামী দুই দিনের মধ্যে পদত্যাগপত্রটি রুবেল শিল্পী সমিতি বরাবর পাঠাবেন।
দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে এই চিত্রনায়ক বলেন, ‘চলতি বছর আমার বেশ কিছু কাজ আছে। যেমন- আমি ওমরাহ পালনে যাব। এ ছাড়া সারা দেশব্যাপী কারাটে প্রশিক্ষণ শেষ করাতে হবে। এতে সরকারি উদ্যোগ যুক্ত। প্রায় তিনশ’ উপজেলা কানেক্ট করব। সব মিলিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় যাবে। এর মধ্যে সমিতিকে সময় দেওয়াটা আমার জন্য কঠিনই হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোনো কাজই করতে পারলাম না কিন্তু একটা পদ আটকে রাখলাম- সেটা ঠিক হবে না। আমি আমার পদটি রিয়াজের জন্য ছেড়ে যেতে চাই। তার সঙ্গেও ব্যক্তিগতভাবে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। আমার ছোট ভাইয়ের মতো। আর সে কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বেশ কিছু সফরের সঙ্গী ছিল। সে যদি এ পদে আসে তাহলে আমাদের চলচ্চিত্রের জন্য সুখবরগুলো আসবে। ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই আছেন। সকলে মিলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেলে ভালো কিছু হবে।’
তবে কথায় কথায় বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ ঝরলো লড়াকু’খ্যাত এ তারকার গলায়। তার ভাষ্য,‘আমি চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি। তাই অবশ্যই চাই এর উন্নয়ন হোক। তবে এখন যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা কাম্য নয়। সামান্য একটা পদের জন্য কোর্ট পর্যন্ত যাওয়া হয়েছে, দলাদলি হচ্ছে। এগুলো ভালো লাগছে না। আমি সারাজীবন দলাদলির বাইরে আমার মতো করে কাজ করেছি। শেষ সময়ে এসে এগুলোতে নিজেকে যুক্ত রাখতে চাই না। আমাদের শেষ সময়ে এসে দলাদলির মধ্য থেকে অশ্রদ্ধা, ভালোবাসার কমতিতে থাকতে চাই না। যা পেয়েছি এই ভালোবাসা নিয়েই সরে যেতে চাই।’
পদত্যাগ গুঞ্জনে নাম শোনা গেছে অরুণা বিশ্বাসেরও। তবে তিনি কিছুটা সময় নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চান। অরুণা বলেন, ‘আমি কোনো দ্বন্দ্বে যেতে চাই না। সেন্সর বোর্ড ছাড়াও আমাকে ব্যক্তিগত কাজে সময় দিতে হয়। বছরের অনেকটা সময় দেশের বাইরে কাটাতে হয়। ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আদালত স্টে অর্ডার দিয়েছেন। আমি সেটার অপেক্ষায় আছি।’
এদিকে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলছে, মিশা-জায়েদ প্যানেলের প্রায় সকলেই পদত্যাগ করতে পারেন! তাই চলচ্চিত্রাঙ্গণে পারস্পরিক সম্পর্ক আর সৌহার্দে্যর অবস্থান কতটুকু থাকবে তা নিয়ে অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
Leave a Reply