1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০৩ অপরাহ্ন

সৌদিতে বসে আরসা চালায় ২০ রোহিঙ্গা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২২

এপিবিএনের (আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) কাছে গোয়েন্দা তথ্য আসে- কক্সবাজার জেলার উখিয়ার ৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় কিছু দুষ্কৃতকারী অবস্থান নিয়েছে। ক্যাম্পে তারা বড় ধরনের অঘটন ঘটাতে পারে। এমন তথ্য পাওয়ার পর আর কালবিলম্ব করেনি বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ এই বাহিনীটি। গত রবিবার ভোরেই ড্রোন ব্যবহার করে চালায় অভিযান। অস্ত্র ও মাদকসহ আটক করা হয় মিয়ানমারের নিষিদ্ধ সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনির ভাই মো. শাহ আলীকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেরিয়ে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য।

আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ’ তাদের এক রিপোর্টে বলছে- আরসা মূলত গড়ে উঠেছে সৌদি আরবে চলে যাওয়া রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে। দেশটির মক্কা নগরীতে থাকে এমন ২০ রোহিঙ্গা সংগঠনটি চালান।

বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও ভারতে এদের যোগাযোগ রয়েছে। আর সংগঠনটির নেতা আতাউল্লাহ ‘আবু আম্মার জুনুনি’ নামেও পরিচিত। তার বাবা অবশ্য রাখাইন থেকে পাকিস্তানের করাচিতে পাড়ি দিয়েছিলেন। সেখানেই আতাউল্লাহর জন্ম। বেড়ে উঠেছেন মক্কায়। পড়াশোনা করেছেন সেখানকার মাদ্রাসায়। ইউটিউবে তার একটি ভিডিও থেকে ধারণ করা হয়, রাখাইনের রোহিঙ্গারা যে ভাষায় কথা বলে সেটিও আরবি- দুটি ভাষাতেই তিনি অনর্গল বলতে পারেন। ২০১২ সালে আতাউল্লাহ অবশ্য সৌদি আরব থেকেও ‘অদৃশ্য’ হয়ে যান। এর পর ২০১৭ সালে আরাকানে নতুন করে সহিংসতা শুরুর পর তার নাম শোনা যায়। ওই বছর মিয়ানমার জান্তা সরকারের রোষানলে পড়ে নিজের ভূখ- ছেড়ে পালিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয় লাখো রোহিঙ্গা।

রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি করা হয় অনেকগুলো ক্যাম্প। সেখানে বসবাসের শুরু থেকেই ‘আরসা’র নাম ব্যবহার করে নানা ধরনের অপকর্মের অভিযোগ পাওয়া যায়। সর্বশেষ গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর কুতুপালং ক্যাম্পে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ। তখন নিহতের পরিবার থেকে অভিযোগ তোলা হয়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পক্ষে কাজ করায় মুহিবুল্লাকে হত্যা করেছে আরসার সন্ত্রাসীরা। রোহিঙ্গাদের একটি অংশ অবশ্য মনে করে, আতাউল্লাহর নেতৃত্বাধীন সশস্ত্র সংগঠনটি মূলত মিয়ানমার সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে।

১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক পুলিশ সুপার নাইমুল হক জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এ পর্যন্ত তথাকথিত আরসা নামধারী ১১৪ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া মাদক ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, চোরাচালানে জড়িত, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত আরও ৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটক শাহ আলীর প্রসঙ্গ টেনে পুলিশ সুপার নাইমুল হক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, আরসা নেতা আতাউল্লাহর সঙ্গে তার ভাই শাহ আলীর যোগাযোগ ছিল। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে কোনো ধরনের অপতৎপরতা আছে কিনা এ বিষয়ে শাহ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’ নাইমুল হক আরও বলেন, ‘ড্রোন দিয়ে অভিযান পরিচালনা করে শাহ আলীকে আটক করার সময় সেখান থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় সাদিকুল নামে এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। তাকে সেখানে আটকে রেখে নির্যাতন ও টাকা দাবি করা হয়েছিল। টাকা দিতে না পারলে সাদিকুলকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ভিকটিম। পরে ওই স্থান থেকে অস্ত্র, ইয়াবা ও টাকা জব্দ করা হয়।’

এদিকে আতাউল্লাহর ভাই শাহ আলীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মাদক, অস্ত্র ও অপহরণের দায়ে তার বিরুদ্ধে রুজু করা হয়েছে তিনটি মামলা। এ বিষয়ে উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) গাজী সালাহ উদ্দিন জানান, শাহ আলীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল সোমবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com