লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যের নির্যাতনে আনোয়ারুল ইসলাম (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এর আগে গত ৬ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হকের বাড়ির পাশে ঝুঁপড়ি ঘর থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার কালীগঞ্জ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসূল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের মজিবরের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম। তার কাছে টাকা পাওনা ছিল মোজাম্মেল হকের। পাওনা টাকা চাইতে আনোয়ারুলের বাড়িতে যান ইউপি সদস্য, তার ভাই ও ছেলে। টাকা না পেয়ে তারা আনোয়ারুলকে ধরে নিয়ে আসেন। তিনদিন আটকে রেখে তার ওপর চলে পৈশাচিক নির্যাতন। এ সময় তাকে উদ্ধার করতে প্রতিবেশী কুদ্দুসের ছেলে রোকনুজ্জামান এগিয়ে এলে তাকেও আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। আনোয়ারুল চিৎকার-চেঁচামেচি করলে একপর্যায়ে ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক তার বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে দেন।
পরের দিন আত্মীয়-স্বজনরা আটকে রাখার খবর পেয়ে ইউপি সদস্যের বাড়িতে ছুটে যান। কিন্তু ইউপি সদস্য তার পরিবারের কথা না শুনে লাঠি দিয়ে ধাওয়া করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। উপায় না পেয়ে তারা ৯৯৯ ফোন করেন। তবে ইউপি সদস্য তার বাড়িতে দুজন আটকে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং এলাকায় দুজন চোর আটক আছেন এমন খবর ছড়িয়ে দেন। খবর পেয়ে পুলিশ আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় ওইদিন সন্ধ্যায় পাঁচজনকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার আসামিরা হলেন- জেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়নের চলবলা ইউপির ৯ নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত সদস্য মোজাম্মেল হক (৪৬), তার ছোট ভাই মোশারফ হোসেন ভুট্টু (৩০) ও ছেলে সুজন (২৪)। বাকিদের নাম জানা যায়নি।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল জানান, এ ঘটনায় প্রধান আসামি ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক ও তার ভাই মোশারফ হোসেন ভুট্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply